TRENDING:

শেষ দুটো বছর কেমন কেটেছিল কবিগুরুর! কেন তাঁর অস্ত্রোপচারের কথা জানানো হয়নি নীলরতন সরকারকে ?

Last Updated:

শেষ দুটো বছর কেমন কেটেছিল কবিগুরুর! কেন তাঁর অস্ত্রোপচারের কথা জানানো হয়নি নীলরতন সরকারকে

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: কবি গুরুর শরীরে ১৯৩৭ সালে কিডনির সমস্যাটা গুরুতর আকার ধারণ করে। তবুও থামেনি কবির কলম। সেই সময় কালিম্পং-এ থাকতেন তাঁর পুত্রবধূ প্রতিমাদেবী। শরীর সায় দিচ্ছে না। তবু পাহাড়ের প্রকৃতির টানে আর পুত্রবধূকে দেখার জন্য শান্তিনিকেতন থেকে কালিম্পং গেলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দিনটা ছিল ১৯৪০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। কিন্তু, বেশিদিন কালিম্পং-এর জলহাওয়া সহ্য হল না কবিগুরুর। ২৬ সেপ্টেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কালিম্পং-এর বাড়িতে যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলেন কবিগুরু। দার্জিলিং থেকে তাঁকে দেখতে আসে ডাক্তার। কবিগুরুর শারীরিক পরীক্ষা করে সার্জেন জানালেন অবিলম্বে অস্ত্রপ্রচার করতে হবে। না হলে যে কবিগুরুর প্রাণ সংশয় হতে পারে । কিন্তু তাঁর মেয়ে ও পূত্রবধু অস্ত্রপ্রচারের পক্ষে ছিলেন না। তাই একটু সুস্থ হতেই কলকাতায় নিয়ে আসা হল কবিগুরুকে। সুস্থ শরীর নিয়ে পাহাড়ে গিয়েছিলেন। ফিরলেন অসুস্থ হয়ে। কিন্তু কলকতায় ফিরে শান্তি পাচ্ছিলেন না ঠাকুর। তখন কবি বার বার ফিরে যেতে চাইতেন শান্তিনিকতনে। সময় যে ফুরিয়ে আসছে তা বোধহয় বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। মাঝে মাঝেই আচ্ছন্ন হয়ে পড়তেন কবিগুরু। তখন ডাক্তার কবি ও তাঁর পরিবারকে জানিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার করিয়ে নিলেই আচ্ছন্নভাবটা কেটে যাবে এবং তিনি ফের সুস্থ শরীরে লেখার কাজ করতে পারবেন। এই সময়টা কবি সেভাবে লেখালেখি করতে পারছিলেন না। সারা বছর কবির সব রকম চিকিৎসা করতেন ডাক্তার নীলরতন সরকার। এই সময় নীলরতন সরকার ছিলেন গিরিডিতে। কবির আশপাশে তখন যারা ছিলেন তারা কেউ নীলরতন সরকারকে খবর দেওয়াটা প্রয়োজনই মনে করেননি। অথচ, কবি নাকি বারবার জানতে চেয়েছিলেন ডক্টর নীলরতন সরকারকে খবর দেওয়া হয়েছে কি না। প্রত্যুত্তরে বলা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে কোনওভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে না। এর পর কবিকে নিয়ে যাওয়া হল শান্তিনিকেতন। কলকাতা থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেনে করে শান্তিনিকেতনে আনা হল কবিগুরুকে। এর পর আরও অবনতি ঘটে শরীরের। অস্ত্রপ্রচার তখন করাতেই হবে। শান্তিনিকেতন থেকে ফিরিয়ে আনা হল কলকাতায় কবি গুরুকে।
advertisement

photo source collected

দিন দিন খারাপ হচ্ছিল রবি ঠাকুরের শরীর। ডাক্তাররা বার বার অস্ত্রপ্রচারের কথা বলছেন। কিন্তু কবির যা শরীরের অবস্থা তখন তাঁকে কোথাও নিয়ে গিয়ে অপারেশনটা করানো সম্ভব ছিল না। তখন জোড়াসাঁকোর মহর্ষিভবনে দোতালার পাথরের ঘরের পূবদিকের বারান্দায় তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী অপারেশন থিয়েটার। পাথরের ঘরের পূর্বদিকের বারান্দায় অস্থায়ী অপারেশন থিয়েটার বানিয়েই করা হল অস্ত্রোপচার। এই খবর নীলরতন সরকারের কানে পৌঁছতেই তিনি ছুটে কলকাতা চলে আসেন !কিন্তু অস্তরপ্রচারের পরও সুস্থ হলেন না ঠাকুর। নীলরতন সরকার এসে কবিকে দেখলেন। কপালে হাত দিয়ে কি বুঝেছিলেন তা তিনিই জানেন। কাউকে কোনও কথা না বলে চলে গেলেন তিনি। হয়তো কবির দিন ফুড়িয়ে এসেছে তা তিনি বুঝেছিলেন। তবে এই অস্ত্রপ্রচারকে সমর্থন করেননি নীলরতন সরকার। আর তাই কোনও কথা না বলে হয়তো সেদিন চলে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় কবিকে দেখে অস্ত্রপ্রচার করাতেই বলেছিলেন।

advertisement

১৯৪১ সালের ২২শে শ্রাবণ সকাল ৯টায় কবিকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। শেষবারের মতো তাঁকে দেখে গেলন চিকিৎসক বিধান রায়, ললিত বন্দ্যোপাধ্যায়। কবির কানের কাছে চলছে অবিরাম মন্ত্রোচ্চারণ। কবির অক্সিজেনের নল একটু পরে খুলে দেওয়া হয়। ১২টা ১০ মিনিটে পুরোপুরি থেমে গেল হৃদস্পন্দন। সব কিছু সেদিনই শেষ। হাজার মানুষের চোখের জলে অন্য জগতে পারি দিয়েছিলেন রবি ঠাকুর। তবে কি সেদিনের অস্ত্রপ্রচার না করলে রবি ঠাকুর আরও কিছুদিন বাঁচতেন? আসলে মনে মনে কোথাও তিনিও হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে ঠাকুরের মৃত্যুতেই তিনি শেষ হয়ে যান না। তিনি বেঁচে থাকবেন সবার মধ্যে তাঁর লেখনির মধ্য দিয়ে। তিনিও আজও সমান প্রাসঙ্গিক ! চিরকাল থাকবেনও।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
কমবে চাষের খরচ, বৃদ্ধি পাবে চিনাবাদাম উৎপাদন! কৃষকদের দেওয়া হল বিশেষ প্রশিক্ষণ
আরও দেখুন

বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
শেষ দুটো বছর কেমন কেটেছিল কবিগুরুর! কেন তাঁর অস্ত্রোপচারের কথা জানানো হয়নি নীলরতন সরকারকে ?