কিন্তু এ যে একেবারে অবিকল! কী করে এতটা মিল হল। সত্যিই জানেন না সোমনাথ বাবু। আজীবন সরকারি চাকুরে, ছাপোষা মধ্যবিত্ত বাঙালি জীবন, সেখানে স্বাভাবিক কারণে আর পাঁচজনের মতো তাঁর ভিতরেও রবীন্দ্র অনুরাগ হয়ত ছিলই। কিন্তু বাইরের চেহারায় এভাবে রবীন্দ্রনাথ উঁকি দেবেন, তা কে জানত? ধীরে ধীরে তাঁর রবীন্দ্রনাথ লুক তাঁকে অন্য পরিচয় দিয়েছে। এখন আমন্ত্রণ মেলে, সম্বর্ধনাও পেয়েছেন অনেক। লোকে রাস্তায় দেখলেই ভিড় করে আসে। সোমনাথ বাবু বলছিলেন, ‘বসন্ত উৎসবে রবীন্দ্রভারতীতে যাওয়ার পর প্রথম আধঘণ্টা আগে সবার আব্দার মেনে আমাকে ছবি তুলতে হয় সকলের সঙ্গে। এবারেও তাই হয়েছে। একদিন হল কী জানেন, ট্রেনে চড়েছি, রেলের কর্মীরা আলাদা যাচ্ছিলেন। আমাকে দেখে তাঁরা বললেন, রবীন্দ্রনাথ আমাদের সঙ্গে যাবেন।’ বলতে বলতেই হেসে ওঠেন সোমনাথ বাবু।
advertisement
এখন আর তাঁকে সোমনাথ নামে বেশি লোকে ডাকে না। আসল পরিচয় আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে তাঁর। এখন তাঁকে সবাই চেনে রবীন্দ্রনাথ নামে। কারণ, তাঁকে অবিকল কবিগুরুর মতো দেখতে। সোমনাথ নামটা লোকে ভুলে যাচ্ছে, না, তা নিয়ে বিশেষ আফশোস নেই সোমনাথ বাবু। তিনি বললেন, ‘এ জীবনে সবই পেয়েছি। এত সন্মান, লোকের আদর, আর কী চাই। আমার কোনও দুঃখ নেই। আনন্দেই আছি। আর এই পরিচয়টা আমাকে গর্ব করার সুযোগ করে দিয়েছে।’
ছবি: সোমনাথ ভদ্র
