COVID-19 সংক্রমণ শনাক্ত করার জন্য পরীক্ষা
রিয়েল-টাইম রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন-পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (Real-Time Reverse Transcription-Polymerase Chain Reaction) বা আরটি-পিসিআর (RT–PCR) হল শরীরে সংক্রামক ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ধারণের জন্য সর্বোত্তম পরীক্ষা। এটি একটি সঠিক ফলাফল দেয় এবং ভাইরাল লোড (Viral Lode) প্রকাশ করে, অবস্থার তীব্রতা বোঝার জন্য যা প্রয়োজনীয়। তবে, এই পরীক্ষাটি নির্দিষ্ট করে না যে কেউ ঠিক কোন ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তার কারণ কোন নির্দিষ্ট প্রজাতিটি সংক্রামিত করেছে তা নির্ধারণ করার জন্য এটির ডিজাইন করা হয়নি। এটি শুধুমাত্র একটি জেনোম সিকোয়েন্সিং (Genome Sequencing) দ্বারা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
advertisement
আরও পড়ুন- ভারতে দলিতদের উন্নয়নের বাস্তব রূপ কী? ভীমজয়ন্তীতে ফিরে দেখা আম্বেদকরের লড়াই
জেনোম সিকোয়েন্সিং স্টাডি কী?
জেনোম সিকোয়েন্সিং হল একটি জীবের সম্পূর্ণ ডিএনএ সিকোয়েন্স (DNA Sequence) নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া। এটি ভাইরাসের ক্রম পরিবর্তন নিরীক্ষণের জন্য করা হয়। মিউট্যান্টদের থেকে আসল ভাইরাসের গঠনের পরিবর্তনগুলি জানতে এই পরীক্ষাটি করে বিজ্ঞানীরা। এটি মহামারীবিদ্যা (Epidemiology) এবং ভাইরাস কীভাবে সাধারণ জনগণকে প্রভাবিত করতে পারে, তা জানতেও ব্যবহৃত হয়।
কেন মিউট্যান্ট প্রজাতির আবিষ্কারে কোনও লাভ নেই?
ভাইরাল লোড এবং কোনও ব্যক্তি কোভিড পজিটিভ কি না, তা চিকিৎসা অনুশীলনের জন্য অপরিহার্য। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা এবং সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এই দুটি বিষয়েরই গুরুত্ব রয়েছে। সিকোয়েন্স বা জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জ্ঞান ভাইরাসের প্রতিক্রিয়া, সংক্রমণযোগ্যতা এবং অন্যান্য কারণগুলি নির্ধারণ করে, যা গবেষণার উদ্দেশ্যে আরও প্রয়োজনীয়।
নতুন উদীয়মান প্রজাতি:
এক্সই হল (Coronavirus XE Variant) ওমিক্রন (Omicron) প্রজাতির এক উপ প্রজাতি। এক্সই আবিষ্কার সম্পর্কে ঘোষণাটি ভারতে সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের (Covid Wave) সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছে, আর তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে কোভিড সংক্রমণ একেবারেই তলানিতে এসে ঠেকেছে। দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা হাজারের কিছু বেশিতে নেমে এসেছে, যা গত ২ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। ভারতে ওমিক্রনের এক্সই প্রজাতির প্রথম সংক্রমণের হদিশ পাওয়া গিয়েছে গুজরাতে। করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে এক্সই প্রজাতির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। এই ব্যক্তি মুম্বই থেকেই গুজরাতে এসে কোভিডে আক্রান্ত হন। পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। এক্সই প্রজাতি চিহ্নিত হলেও এখনই অবশ্য বিশেষ উদ্বেগের কারণ দেখছেন না স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা। মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
নিরাপদে থাকার জন্য কী করতে হবে?
ভাইরাসে আক্রান্ত কি না তা নির্ধারণের জন্য বর্তমানে আরটি-পিসিআর (RT-PCR) পরীক্ষাই সবচেয়ে ভাল। যদি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনও লক্ষণ দেখা যায় তবে দ্রুত ফলাফল পেতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও করা যেতে পারে। এর জন্য টেস্টিং কিট ব্যবহার করা যায়। টিকা নেওয়া হোক বা না হোক, বর্তমানে সবাই সংক্রমণ প্রবণ। এটা বিবেচনা করে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, মাস্ক (Mask) পরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সম্পূর্ণ টিকা নেয়নি, এমন লোকজনের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। সামাজিক সমাবেশে 'না' বলতে হবে। আর অতি অবশ্যই টিকা বা বুস্টার ডোজ নিতে হবে।
ভারতে ১০ এপ্রিল থেকে ১৮ বছরের উর্ধ্বে সকলকেই বুস্টার ডোজ (Booster Dose) দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে এখন বেসরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা টিকাকরণ কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার ৯ মাস (৩৯ সপ্তাহ অথবা ২৭৩ দিন) পর বুস্টার ডোজ নিতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, আগে যে টিকা নেওয়া হয়েছে, সেই একই টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। কোভিশিল্ড (Covisheild) ও কোভ্যাক্সিনের (Covaxin) বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে। দু'টি টিকারই দাম ২২৫ টাকা ধার্য করা হয়েছে। এর সঙ্গে ট্যাক্স ও ১৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ যুক্ত হবে।