TRENDING:

Metaverse Explained: বাস্তবের মতোই আলাদা জগত্ হবে মেটাভার্স! কীভাবে সেটা সম্ভব করবে ফেসবুক?

Last Updated:

Metaverse By Facebook: ইতিমধ্যেই অনলাইনের ভার্চুয়াল জগৎকে সত্যিকারের বাস্তব পৃথিবীর সঙ্গে মেলানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: যদি ঘরে বসে অনলাইন শপিং করার সময় আমাদের পছন্দের পোশাকের ডিজিটাল সংস্করণটি ট্রায়াল করে দেখার পরই অর্ডার দেওয়া যেত! ভাবতে অবাক লাগলেও হাতের নাগালে এই প্রযুক্তি আসার আর বেশি দেরি নেই।
advertisement

ইতিমধ্যেই অনলাইনের ভার্চুয়াল জগৎকে সত্যিকারের বাস্তব পৃথিবীর সঙ্গে মেলানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর যে প্রযুক্তির জন্য ইন্টারনেটের দুনিয়ায় এই অভাবনীয় বিপ্লব হতে চলেছে তার নামই হল মেটাভার্স (Metaverse)।

মেটাভার্স কী?

সাধারণ মানুষের মেটাভার্স প্রযুক্তিকে আপাতত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর-এর কোন সংস্করণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে মেটাভার্স তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু হতে চলেছে। মেটাভার্স ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

advertisement

প্রযুক্তিবিদদের মতে বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সঙ্গে মেটাভার্সের তুলনা আজকের দিনের স্মার্ট-ফোনের সঙ্গে আশির দশকের মোবাইল ফোনের তুলনা করার মতো বলা যায়। এক্ষেত্রে কম্পিউটারের সামনে বসে না থেকে একটি ভিআর হেডসেট লাগিয়েই যে কোনও ওয়েবসাইটে যাওয়া যাবে।

মেটাভার্সে আমরা সব ধরনের ডিজিটাল পরিবেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে একটি ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশ করতে পারব। বর্তমানে ভিআর (VR) বেশিরভাগই বিভিন্ন খেলার জন্য ব্যবহৃত হয়, মেটাভার্সের ব্যবহার হবে সকল বিষয়ে। যেমন এই ভার্চুয়াল জগৎটি কোনও কাজ, খেলা, কনসার্ট, সিনেমা কিংবা নিছক বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারতেও অনায়াসে ব্যবহার করা যেতে পারে।

advertisement

আরও পড়ুন- WhatsApp চ্যাট লিক হচ্ছে না তো? আটকাবেন কী ভাবে? জানুন বিস্তারিত

অনেকেই মনে করেন মেটাভার্স প্রযুক্তিতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একটি ৩ডি অবতার বা চরিত্র থাকবে অর্থাৎ এটিই ব্যবহারকারীর প্রতিনিধিত্ব করবে। যা চারিদিকে ঘুরে বেড়ানো থেকে শুরু করে অন্যান্য চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে পারবে। তবে এখনও পর্যন্ত মেটাভার্স শুধু মাত্র চিন্তাভাবনার স্তরেই রয়েছে, কর্তৃপক্ষ এখনও এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে আসেনি।

advertisement

আচমকা মেটাভার্স আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে কেন?

বিগত কয়েক বছর ধরেই ডিজিটাল জগতের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। তাই ধনী বিনিয়োগকারী এবং বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলির মধ্যে মেটাভার্স নিয়ে বিপুল উত্তেজনা রয়েছে।

একই সঙ্গে আগামী দিনে এটি ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হতে চললে কেউই যে পিছিয়ে থাকবে না তা বলাই বাহুল্য। আবার এই প্রথমবারের জন্য, ভিআর (VR) গেমিং-এ সংযোগের অগ্রগতি অনেকটাই প্রয়োজন অনুযায়ী থাকতে চলেছে। অর্থাৎ, বিষয়টি নিছক বিনোদনের মধ্যে আটকে থাকছে না।

advertisement

ফেসবুকের নাম কেন উঠে এসেছে এই প্রসঙ্গে?

ফেসবুক (Facebook) যে সব বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সেই তালিকার প্রথম সারিতেই রয়েছে মেটাভার্স। তাই এই প্রযুক্তির সঙ্গে অবশ্যই অবিচ্ছিন্ন ভাবে যুক্ত রয়েছে সংস্থা। ইউরোপে এই প্রযুক্তি তৈরি করার জন্য ফেসবুক সম্প্রতি ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে। যেখানে বিশ্বে সব চেয়ে প্রচলিত এই সোশ্যাল মিডিয়াটি প্রচুর টাকাও বিনিয়োগ করেছে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জন্য তারা তৈরি করেছে অকুলাস (Oculus) হেডসেট যা প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর সেটের তুলনায় দামে কম। কয়েকজন বিশ্লেষকের মতে, মেটাভার্সে সম্ভবত প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় সস্তায় অকুলাস হেডসেটগুলির মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করা হয়েছে ফেসবুকের তরফে।

এটি সামাজিক হ্যাং আউটের এবং বাস্তব জগতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এমন কর্মক্ষেত্রের জন্য ভিআর অ্যাপগুলিও তৈরি করছে৷ প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাজার কেনার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, ফেসবুক দাবি করে যে মেটাভার্স হল এমন "একটি কোম্পানি যা তারা রাতারাতি তৈরি করবে না" এবং পাশাপাশি ফেসবুক সকলের সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এটি সম্প্রতি মেটাভার্স দায়িত্বের সঙ্গে গড়ে তুলতে সাহায্য করার জন্য অলাভজনক গোষ্ঠীগুলির ফান্ডে $৫০এম (£৩৬.৩এম) বিনিয়োগ করেছে৷ যদিও প্রকৃতপক্ষে মেটাভার্সের বাস্তবায়নে আরও ১০ থেকে ১৫ বছর লাগবে।

মেটাভার্সে আর কে আগ্রহী?

ফোর্টনাইটের (Fortnite) নির্মাণকারী এপিক গেমসের (Epic Games) প্রধান মিস্টার সুইনি (Mr Sweeney) মেটাভার্স নিয়ে তাঁর তীব্র উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। অন্য দিকে, অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমগুলি কয়েক দশক আগের ইন্টার‍্যাকটিভ ওয়ার্ল্ড শেয়ার করেছে। তবে সেগুলি মেটাভার্স না হলেও এবিষয়ে বেশ ধারণা রয়েছে তাদের।

সম্প্রতি ফোর্টনাইট তাদের নিজস্ব ডিজিটাল জগতে তাদের প্রোডাক্ট বাড়িয়েছে, কনসার্ট, ব্র্যান্ড ইভেন্ট এবং আরও অনেক কিছু সঞ্চালনা করেছে। তাই মিস্টার সুইনির মেটাভার্সের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিকেও ইতিবাচক বলেই মনে করা হচ্ছে। আবার বেশ কিছু অন্যান্য গেমের মেটাভার্সের মতো ধারণা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, রোবলোক্স (Roblox) হল হাজার হাজার ব্যক্তিগত গেমের একটি প্ল্যাটফর্ম।

ইতিমধ্যে, ইউনিটি (Unity) নামের একটি ৩ডি ডেভেলপমেন্টের প্ল্যাটফর্ম বাস্তব জীবনের ডিজিটাল কপি ডিজিটাল টুইনস-এ বিনিয়োগ করছে এবং গ্রাফিক্স কোম্পানি এনভিডিয়া (Nvidia) ৩ডি ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে সংযোগ রাখতে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে তার অমনিভার্স তৈরি করছে।

তাহলে কি মেটাভার্স শুধু খেলার বিষয়?

মেটাভার্স কী হতে পারে সে সম্পর্কে অনেক জল্পনা থাকলেও, বেশিরভাগ মানুষই সমাজে পারস্পরিক যোগাযোগকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। যেমন ফেসবুক, ওয়ার্কপ্লেস (Workplace) নামে একটি ভিআর মিটিং অ্যাপ এবং হরাইজনস (Horizens) নামে একটি সোশ্যাল স্পেস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে যেখানে দু'টি অ্যাপই ফেসবুকের ভার্চুয়াল সিস্টেম ব্যবহার করেছে।

আরেকটি ভিআর অ্যাপ, ভিআরচ্যাট পরিবেশ নিয়ে গবেষণা এবং মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ছাড়া আর কোনও লক্ষ্য না নিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনে আড্ডা দেওয়া এবং গল্প করার উপর ভিত্তি করে রয়েছে। একই সঙ্গে বেশ কিছু অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনও আবিষ্কারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

কাজ আর কত বাকি?

বিগত বছরগুলিতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল বেশ কিছু হেডসেট, যার সৌজন্যে ভার্চুয়াল পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ানোর সময় সব কিছু থ্রিডি বলে মনে হবে। এর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত, যেমন ২০২০ সালেই অকুলাস কোয়েস্ট ২ ভিআর (Oculus Quest 2 VR) গেমিং হেডসেটটি সেই বছরের ক্রিসমাসে জনপ্রিয় উপহারের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল।

আবার এনএফটিএসে (NFTs) সম্প্রতি অনেকের বিপুল আগ্রহ থাকায় তা ডিজিটাল পণ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততার সঙ্গে মালিকানা তদারকির একটি পথ বাতলে দিচ্ছে। এটি একটি ভার্চুয়াল অর্থনীতি কী ভাবে কাজ করবে তা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। আবার, এটাও অস্বীকার করা যায় না যে উন্নত প্রযুক্তির ডিজিটালের কাজের জন্য প্রয়োজন আরও ভালো, সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ৫জি-র মতো মোবাইল সংযোগ ব্যবস্থা যা মেটাভার্সের পক্ষে লাভজনক বলে স্বীকৃত হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রযুক্তিবিদদের মতে, ইন্টারনেটের গতি আরও দ্রুত হলে, বিশেষ করে ফাইভ-জি বাজারে আসার পরেই, মেটাভার্স সম্পর্কিত অনেক সমস্যার সমাধান ঘটবে।

যাই হোক, আপাতত মেটাভার্সের সব কিছুই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যদি মেটাভার্স মানুষের হাতের নাগালে আসে, তাহলে তা প্রযুক্তির দুনিয়ায় পরবর্তী দশকের কিংবা সম্ভবত আরও দীর্ঘ সংগ্রামের মাইলফলক হয়ে থাকবে বলা যায়।

বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Metaverse Explained: বাস্তবের মতোই আলাদা জগত্ হবে মেটাভার্স! কীভাবে সেটা সম্ভব করবে ফেসবুক?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল