যদি অন্য বছরের সঙ্গে তুলনা করা যায়, তাহলে বলতেই হয় যে করোনাকালে মশালফেরি হয়ে উঠেছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ সময়ে এটি বন্ধ করা বা না করায় কিছু যেত-আসত না, কিন্তু এখন যদি এই অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে শুধু মশালের আগুনই নয়, একই সঙ্গে নিভে যাবে আশার আলোও!
জানা গিয়েছে যে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে ১২১ দিন জুড়ে সাকুল্যে ১০ হাজার দৌড়বীরের হাতে হাতে ঘুরে অবশেষে মশাল পৌঁছবে অলিম্পিকের ক্রীড়াভূমিতে চলতি বছরের জুলাই মাসের ২৩ তারিখে। বিস্তর টালবাহানা আর স্থগিতাদেশের পরে শেষ পর্যন্ত এই তারিখেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জাপান অলিম্পিকস। সঙ্গত কারণেই এই মশালফেরি নিয়ে তাই উত্তেজনাও বেশি। যা শুরু হবে জাপানের ফুকুশিমা থেকে।
advertisement
আসলে এই করোনাকালে মশালের আলো যেন নতুন আশার পথ দেখাবে বিশ্বকে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি থেকে তাই এই বছরের মশালফেরির স্লোগান ঠিক করা হয়েছে Hope Lights Our Way। এই নিয়ে সন্দেহ করা চলে না যে আশা আমাদের মার্গে আলোকসঞ্চার করে।
কিন্তু সন্দেহের কারণটা রয়েছে অন্যত্র। জাপানের করোনাকালীন ছবিটাও কিন্তু খুব একটা সুবিধার নয়। ফলে প্রশ্ন উঠছে বারে বারে- এই মশালফেরি জাপানের এলাকায় এলাকায় আলোর পাশাপাশি রোগও ছড়িয়ে দেবে না তো?
সেই সম্ভাবনা যে নেই, তা কিন্তু অস্বীকার করছেন না আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কর্তাব্যক্তিরা। তাঁদের দাবি, ভালো ভাবে সবার করোনা পরীক্ষা করেই তাঁদের দৌড়ে সামিল করা হয়েছে। তাও যদি দলের মধ্যে কেউ সংক্রমিত হয়ে পড়েন বা পথের মাঝে কোনও এলাকায় সংক্রমণ দেখা দেয়, তাহলে বিপদসঙ্কেত হিসেবে লাল পতাকা ব্যবহার করা হবে। সেই মতো স্থির করা হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।
তাছাড়া এই দৌড় শুধু করোনাই নয়, আরও একটি দিক থেকে জাপানে আশার আলো সঞ্চার করতে চলেছে। তা হল বিধ্বস্ত ফুকুশিমার নবজাগরণ। বছর দশেক আগের ভূমিকম্প, সুনামি, নিউক্লিয়ার মেল্টডাউনের ধাক্কা এখনও জাপানের এই অঞ্চল সামলে উঠতে পারেনি। এবারের অলিম্পিক এবং তার মশালফেরি ফুকুশিমার উন্নয়নে আলো ফেলবে বলেই মনে করছেন কর্তাব্যক্তিরা।