চলতি বছরের ৫ মে শীর্ষ আদালত বলেছিল সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সংরক্ষণের ক্ষেত্রে রাজ্যের হাতে কোনও অধিকার নেই। ১০২তম সংবিধানের সংশোধনের পরই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে বলে জানায় বিচারপতিদের বেঞ্চ। এই কারণ দেখিয়েই মহারাষ্ট্রে মরাঠিদের সংরক্ষণ দেওয়া হয় না। আসলে ২০১৮ সালে ১০২তম সংবিধান সংশোধনে বলা হয়েছিল সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে। সেই মতো একটি তালিকা তৈরি করার ক্ষমতা দেওয়া হয় পার্লামেন্টকে। এর পরই সরব হয় বিরোধীরা। এই নিয়ে তরজার মাঝেই ৫ মে শীর্ষ আদালতে সিদ্ধান্ত সব ভেস্তে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে কেন্দ্র বিরোধিতা করে। তাই ২০১৮ সালের ১০২তম সংবিধান সংশোধন করবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্র।
advertisement
নতুন সংশোধনী আইন পাস হওয়ার পর, রাজ্যগুলি একটি গুরুদায়িত্ব পাবে। রাজ্য সরকার পিছিয়ে পড়া জাতিগুলির তালিকা তৈরি করে সংরক্ষণের অধিকার দিতে পারবে। ১৯৯৩ সাল থেকে OBC জাতির তালিকা তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু ২০১৮ সালে ১০২তম সংবিধান সংশোধনের পর তা বন্ধ ছিল। নতুন বিল পাস হয়ে গেলে তা আবার চালু হবে। এর জন্য আর্টিকেল ৩৪২A, ৩৩৮B ও ৩৬৬-তে বদল আনা হয়েছে। বিল পাস হলেই রাজ্যগুলি নিজেদের মতো করে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে OBC রাখতে পারবে। এর ফলে হরিয়ানার জাট, রাজস্থানের গুর্জার মহারাষ্ট্রের মরাঠি, গুজরাতের পটেল, কর্নাটকের লিঙ্গায়তদের তালিকাভুক্ত করা যাবে। কিন্তু সংরক্ষণের সীমা এখনও ৫০% রাখা হয়েছে। এর বেশি সীমা লঙ্ঘন করলে সংরক্ষণ বাতিল করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে ৫০% সীমা বাতিল নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যগুলি।
১৯৯১ সালে পিভি নরসিংহ রাও (PV Narsimha Rao) সরকার বার্ষিক আয়ের ভিত্তিতে জেনারেল ক্যাটাগরিকে ১০% সংরক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সময়ে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন সাংবাদিক ইন্দিরা সাহানি (Indira Sawhney)। নয় বিচারপতির বেঞ্চ রায় দিয়েছিল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০%-এর বেশি দেওয়া যাবে না। সেই মতো এই আইন তৈরি হয়। এর জন্যই এত দিন রাজস্থানের গুর্জর, হরিয়ানার জাট, মহারাষ্ট্রের মরাঠি, গুজরাতের পটেলরা সংরক্ষণ চাইলেই ইন্দিরা সাহানি মামলার রায় মনে করিয়ে তা খারিজ করা হয়েছে। তবে অনেক রাজ্য আছে যেখানে ৫০%-এর বেশি সংরক্ষণ দেওয়া হচ্ছে যেমন, ছত্তিসগঢ়, তামিলনাড়ু, হরিয়ানা, বিহার, গুজরাত, কেরল ও রাজস্থান। পিছিয়ে পড়া জাতিদের সংরক্ষণ দেওয়া হলে সরকার তাঁদের কাছে পৌঁছাতে পারবে, তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই সব কিছুকে ভোট রাজনীতির নাম দিয়েছেন।