সর্বকালীন রেকর্ড:
ইয়ার-এন্ড বিক্রিবাটার জেরে গত মাসেও জিএসটি আদায়ে সর্বকালীন রেকর্ড করেছিল। সংগ্রহ হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এটা হল চতুর্থ বার, যখন জিএসটি সংগ্রহ ১ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি ছাড়াল। এবং মার্চের পর তৃতীয় মাসে এমন ঘটল। ২০২১ সালের মে মাসে জিএসটি সংগ্রহ হয়েছিল ৯৭ হাজার ৮২১ কোটি টাকা।
advertisement
অর্থ মন্ত্রকের বিবৃতি:
অর্থ মন্ত্রকের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অর্থবর্ষের প্রথম মাস এপ্রিল। এই মাসে সাধারণত জিএসটি আদায় কম হয়। কিন্তু এবারের ছবিটা পুরো আলাদা। ২০২২সালের মে মাসের রাজস্ব গত বছরের একই মাসে ৯৭,৮২১ কোটি টাকা জিএসটি আদায়ের চেয়ে ৪৪ শতাংশ বেশি। জিএসটি শুরু হওয়ার পর থেকে চতুর্থবার মাসিক জিএসটি সংগ্রহ ১.৪০ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে এবং ২০২২ সালের মার্চ থেকে টানা তৃতীয় মাসে তা হয়েছে।
মন্ত্রকের কথায়, ‘এটা উৎসাহজনক যে ২০২২ সালের মে মাসেও, মোট জিএসটি আদায় ১.৪০ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে’। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে উৎপন্ন মোট ই-ওয়ে বিলের সংখ্যা ছিল ৭.৪ কোটি, যা ২০২২ সালের মার্চ মাসে তৈরি হওয়া ৭.৭ কোটি ই-ওয়ে বিলের থেকে ৪ শতাংশ কম।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এই বছরে আমদানি থেকে আয় ৩০ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ লেনদেন থেকে আয় ১৭ শতাংশ বেড়েছে। এমনকি এই প্রথম বারের জন্য মোট জিএসটি আদায়ের পরিমাণ দেড় লক্ষ কোটি টাকার সীমা ছাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: আজ ফের কাঁপিয়ে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস জেলায় জেলায়, কবে বাংলায় ঢুকছে বর্ষা? জানুন...
অর্থমন্ত্রক বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে, পণ্য ও পরিষেবার বিক্রয় কর থেকে রাজস্ব ছিল ১.৩৩ লাখ কোটি টাকা, যেখানে জানুয়ারিতে তা ছিল ১.৪০,৯৮৬ কোটি টাকা। ‘২০২২ সালের মে মাসে সংগৃহীত মোট জিএসটি আদায় হল ১,৪০,৮৮৫ কোটি টাকা যার মধ্যে সিজিএসটি হল ২৫,০৩৬ কোটি টাকা, এসজিএসটি হল ৩২,০০১ কোটি টাকা, আইজিএসটি হল ৭৩,৩৪৫ কোটি টাকা (সংগৃহীত ৩৭,৪৬৯ কোটি টাকা এবং পণ্যের আমদানি সহ) ১০,৫০২ কোটি টাকা (পণ্য আমদানিতে সংগৃহীত ৯৩১ কোটি টাকা সহ)’।
মেটানো হয়েছে রাজ্যের বকেয়া:
প্রসঙ্গত ,কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে ৩১ মে ২০২২ পর্যন্ত জিএসটি বাবদ বিভিন্ন রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া ৮৬,৯১২ কোটি টাকার সবটাই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে যে রাজ্যগুলিকে তাদের সংস্থানগুলি পরিচালনা করতে এবং তাদের কর্মসূচিগুলি বিশেষত মূলধনের ব্যয় আর্থিক বছরে সফলভাবে পরিচালিত হয় তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আজ ফের কাঁপিয়ে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস জেলায় জেলায়, কবে বাংলায় ঢুকছে বর্ষা? জানুন...
মন্ত্রক এও জানিয়েছে, ‘জিএসটি ক্ষতিপূরণ তহবিলে মাত্র ২৫ হাজার কোটি টাকা ছিল। তা সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র তার নিজস্ব সংস্থান থেকে সেস সংগ্রহের মুলতুবি থাকা ভারসাম্য ছেড়ে দিচ্ছে’ । মন্ত্রক যোগ করেছে যে ৮৬,৯১২ কোটি টাকার দেওয়ার সঙ্গে, ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করা হয়ে গেল এবং শুধুমাত্র ২০২২-এর জুনের ক্ষতিপূরণ বাকি থাকবে।
জিএসটি আদায় বৃদ্ধির পিছনে কারণ কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত অডিট করানো নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। যারা ট্যাক্স ফাঁকি দেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। এ দুটো জিএসটি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ডেলয়েট ইন্ডিয়ার অংশীদার এমএস মানি বলেছেন, ‘গত তিন মাস ধরে ১.৪ লক্ষ কোটি টাকার উপর জিএসটি সংগ্রহ হওয়াটা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং স্থিতিশীল বৃদ্ধির শুভ লক্ষণ। এ থেকে অন্যান্য ম্যাক্রো অর্থনীতির ফুলে ফেঁপে ওঠারও একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে’।
সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের সুরে তিনিও বলেছেন, ‘অর্থবর্ষের শেষ মাস হওয়ায় মার্চের জিএসটি আদায় অন্যান্য মাসের তুলনায় সবসময় বেশি হয়। পরের মাস অর্থাৎ মে-তে তুলনামূলক কম হয়। কিন্তু এবার সেটা হয়নি। এটা ভালো ইঙ্গিত। নিয়মিত অডিট নিয়ে আগের থেকে অনেক কড়াকড়ি হয়েছে। ট্যাক্স ফাঁকি রুখতে এবং আরও বেশি মানুষকে ট্যাক্সের আওতায় আনতেও একাধিক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। ধারাবাহিকভাবে জিএসটি আদায় বৃদ্ধি সে সবেরই সুফল’।
