১. ইমিউনিটি আসলে কী?
আমাদের শরীর যখন ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হয়, তখন শরীরের অভ্যন্তরস্থিত কোষগুলি ওই বহিরাগত কোষকে অ্যান্টিজেন বলে সনাক্ত করে এবং তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রবৃত্ত হয়। এই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেই সহজ ভাবে বলা হয় ইমিউনিটি। ইমিউনিটি দুই ধরনের হয়ে থাকে- ইনেট এবং অ্যাকুয়ার্ড। ইেট হল সহজাত, জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই যে শক্তি নিয়ে আমরা পৃথিবীতে আসি। আর অ্যাকুয়ার্ড হল অর্জন করা, যেমন এক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নিয়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। ইমিউনোকমপ্রোমাইজড ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই ইনেট ইমিউনিটি দুর্বল হয়ে থাকে।
advertisement
২. ইমিউনোকমপ্রোমাইজড শ্রেণীতে কাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়?
সমাজের নিম্নশ্রণীর যাঁরা অপুষ্টিতে ভুগছেন, যাঁদের HIV সংক্রমণের ফলে AIDS আছে, অতিরিক্ত ধূমপান বা অন্য কোনও কারণে COPD আছে, যাঁদের টিউবারকিউলোসিস আছে, যাঁদের মাত্রাছাড়া ডায়াবেটিস আছে, যাঁদের ক্যানসার আছে, যাঁদের ক্যানসার বা অন্য কোনও কারণে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে বা কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে- এঁরা সবাই ইমিউনোকমপ্রোমাইজড শ্রেণীতে পড়েন, এঁদের সবারই ইমিউনিটি দুর্বল।
৩. এঁদের সংক্রমণের আশঙ্কা কতটা?
ইমিউনোকমপ্রোমাইজড হওয়ার ফলে এঁদের করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই বেশি।
৪. এঁদের ভ্যাকসিনেশনের প্রয়োজনীয়তা কতটা?
ইমিউনোকমপ্রোমাইজড বলেই এঁদের ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজনীয়ত্াও বেশি, এক্ষেত্রে অ্যাকুয়ার্ড ইমিউনিটি বাড়িয়ে তোলা প্রয়োজন।
৫. এঁদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কী রকম?
ইমিউনোকমপ্রোমাইজড বলে যেহেতু এঁদের ইনেট ইমিউনিটি কম, সে কারণে এঁদের শরীরে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও একজন সুস্থ ব্যক্তির তুলনায় কম হবে।
৬. ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ইমিউনিটি বাড়ল কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য কোনও টেস্ট আছে কি?
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে বেশ কিছু ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হল কি না, তা পরখ করে নেওয়া যায়।
৭. কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হল, সেটা কি বোঝা যায়?
দুর্ভাগ্যবশত ঠিক কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হল, সেটা এখনও নির্ণয় করার মতো কোনও টেস্ট নেই।
৮. যাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডি রয়েছে, তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি?
সংক্রমণের বিষয়টি শরীরে অ্যান্টিবডি থাকা বা না থাকার উপরে নির্ভর করে না। অ্যান্টিবডি যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে, এমন ব্যক্তিও করোনায় সংক্রমিত হতেই পারেন।
৯. তাহলে ভ্যাকসিন নিয়ে লাভ কী?
ভ্যাকসিন শরীরকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি জোগায়। এক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি, তেমনই যাঁরা ভ্যাকসিন নেননি তাঁদের সেরে ওঠার পথটি অনেক বেশি বন্ধুর!
১০. ভ্যাকসিন তবে কাদের বেশি প্রয়োজন- ইমিউনোকমপ্রোমাইজড না ইমিউনোকমপিট্যান্ট?
যাঁরা ইমিউনোকমপিট্যান্ট, মানে যাঁদের ইনেট ইমিউনিটি পর্যাপ্ত, তাঁদেরও যেমন ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য ভ্যাকসিন নিতে হবে, তেমনই ইমিউনোকমপ্রোমাইজডদেরও একই রকম ভাবে ভ্যাকসিন নেওয়া প্রয়োজন।