রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশীয় সংবাদমাধ্যমগুলি ধর্ষণের খবরের ক্ষেত্রে বেছে নেয় এমন কিছু অস্বাভাবিক খবর যেখানে অত্যন্ত অত্যাচার, নৃশংসতা, বর্বরতার প্রমাণ রয়েছে। যেগুলি জানার পর মানুষ শিউরে ওঠে এবং যৌন অত্যাচারের এমন কিছু ছবি ব্যবহার করা হয় যা দেখে মনে হয় ভারতবর্ষে এ কী চলছে! গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০.৬% এমন খবর রয়েছে যেখানে ভিকটিমকে বেশি পরিমাণে তুলে ধরা হয়েছে। এই সব ক্ষেত্রে পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকাও সমানভাবে থাকে যেগুলিতে মাত্র ১৬.৭% উপস্থিতি নিয়ে খবর করা হয়েছে। আবার, অপরাধমূলক খবরের দিক থেকে সাংবাদিকরা ১৪% ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার খবর বেছে নেয় কভারেজের জন্য।
advertisement
সংবাদমাধ্যমে শহরাঞ্চল এবং গ্রামাঞ্চলের ধর্ষণের খবর প্রকাশ হয় যথাক্রমে ৪৯% এবং ২২% হারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে ধর্ষণ কী ভাবে করা হয়েছে সেই সংক্রান্ত বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে। অন্য দিকে, ভিকটিম নিজে সামনে এসে নিজের কথা বলেছেন এমন শতাংশ মাত্র ২.২%। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ১৯.৫% সাংবাদিক রয়েছেন যাঁরা তাঁদের রিপোর্টে ধর্ষণ শব্দটির ব্যবহার করেছেন। অন্যথায় ৫১% সাংবাদিদকরা এই শব্দের পরিবর্তে অন্য শব্দ ব্যবহার করেছেন। ৭৮% সাংবাদিকদের দাবি আগে থেকে সম্পর্কের কারণেই যৌন হেনস্থার ঘটনা বেশি ঘটেছে এমন প্রমাণ মিলেছে। তবে ৭% ক্ষেত্রে এমন ঘটনার সমাধান হয়েছে।
UNESCO এই পুরো গবেষণা করেছে, ৬টি ভাষায় প্রকাশিত ১০টি সংবাদপত্র ও ২৫৭ জন সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে। এই সাংবাদিকরা ভারতের ১৪টা ভাষার প্রিন্ট, রেডিও এবং অনলাইন মিডিয়ায় কাজ করেন।
UNESCO রিপোর্টে, সংবাদমাধ্যমের এডিটোরিয়াল বিভাগ নিয়েও কিছু কথা বলেছে, যেখানে বলা হয়েছে ধর্ষণের খবর কভারেজের আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোন সাংবাদিককে কভারেজে পাঠাতে হবে এবং তাঁকে খবর সংক্রান্ত বিষয়ে সঠিক নির্দেশও এডিটোরিয়াল বিভাগ থেকে দেওয়া উচিত। বলে দিতে হবে কভারেজের সময় কোন বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিতে হবে। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সাংবাদিকরা এই সংক্রান্ত খবর নিয়ে কাজ করার সময়ে নিজেরাও মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন।
সব রকমের সংবাদসংস্থার উচিত শুধু খবরের জন্য নয়, খবরের গুরুত্ব বিচার করেই এই ধরনের খবর প্রকাশ করা। এই সংক্রান্ত বিষয়গুলির একটি নিয়মনীতি তৈরি করতে হবে এবং লিঙ্গ বৈষ্যমতা ও যৌন হেনস্থার বিষয়গুলিকে যেন প্রচার না করা হয়, সতর্ক করছে UNESCO!