তবে সত্যিটা হল, ‘চন্দ্রবিন্দু’ যতই কটাক্ষ করুক না কেন, রূপচর্চায় খাবার জিনিসের ব্যবহার কিন্তু বহু দিন ধরে চলে আসছে। এবং কাজও হয়। আসলে কাজ হচ্ছে বলেই না তার এমন বিস্তৃত ব্যবহার! ত্বক বিশেষজ্ঞরা এসব ব্যবহারের পরামর্শও দেন।
যেমন ধরা যাক বিয়ার। উইকএন্ডে স্ন্যাক্স, পকোড়ার সঙ্গে এক বোতল বিয়ার নিয়ে আড্ডা দেওয়ার মতো মজা আর কীসে আছে! কিন্তু সেই বিয়ার না খেয়ে গায়ে মাখলে যে কামাল হয় তা কি জানা আছে?
advertisement
আরও পড়ুন- গরম বাড়তেই দিল্লিতে বিয়ারের আকাল, দেশের বিয়ার সরবরাহে সমস্যার কারণ কী?
অকাল বার্ধক্যের সঙ্গে লড়াই করে: ধূমপান, অতিরিক্ত সূর্যালোক, দূষণ, ভুল খাদ্যাভ্যাস এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে অকালেই বুড়িয়ে যায় ত্বক। বিভিন্ন ধরনের বিয়ারে বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, বিশেষ করে পলিফেনল এবং মেলানয়েডিন, এগুলো ত্বকের অকাল বার্ধ্যকের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ব্যবহারের পদ্ধতি –
একটি ডিমের সাদা অংশ, ১ টেবিল চামচ বিয়ার এবং ৩ থেকে ৪ ফোঁটা আমন্ড তেল দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তারপর সেটা লাগাতে হবে মুখে এবং ঘাড়ে। মিশ্রণটা শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে গরম জলে। এবার মুখ, ঘাড় মুছে নিয়ে লাগাতে হবে ময়শ্চারাইজার। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ফল মিলবে হাতেনাতে।
ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে:
ব্রনর মতো ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে বিয়ার। স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস, স্টেফাইলোকক্কাস এপিডারমিসের মতো ব্যাকটেরিয়া যখন ত্বকের ছিদ্রে বৃদ্ধি পায় তখনই সংক্রমণ ছড়ায়। বিয়ারের কষাটে স্বাদ এবং গন্ধ আসে ‘হপস’ নামক একটি উপাদান থেকে। এই উপাদানে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট রয়েছে। যা ত্বকের সংক্রমণ রুখতে সহায়ক।
ব্যবহারের পদ্ধতি –
১ টেবিল চামচ বিয়ার এবং ১ টেবিল চামচ মধুর একটা মিশ্রণ বানাতে হবে। তারপর তুলো দিয়ে ব্রণতে লাগাতে হবে মিশ্রণটা। মিশ্রণটা শুকোনোর জন্য মিনিট পনেরো অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে গরম জলে।
ভঙ্গুর নখকে শক্তিশালী করে: বিয়ারে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা দুর্বল এবং ক্ষতিগ্রস্ত নখকে শক্তিশালী এবং মেরামত করতে পারে। বিয়ারে ভরপুর সিলিকন রয়েছে, এটাই নখের প্রধান উপাদান। নরম বা ভঙ্গুর নখ সাধারণত সিস্টেমিক সিলিকনের ঘাটতির লক্ষণ।
ব্যবহারের পদ্ধতি –
১ টেবিল চামচ বিয়ার, ১ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার এবং গরম অলিভ ওয়েলের একটা মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এবার সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য এই মিশ্রণে নখ ডুবিয়ে রাখতে হবে।
ত্বক পরিষ্কার রাখে:
ত্বকের মৃত কোষ উপরিভাগে উঠে আসে। তারপর পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে। সেই জায়গায় নতুন কোষ গজায়। এই প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। বিভিন্ন কারণে এই প্রক্রিয়াটা বাধাপ্রাপ্ত বা ধীরে হতে পারে। যার ফলে ত্বকের উপর মৃত কোষ জমতে শুরু করে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সংক্রমণ ছড়ায়। এ থেকে মুক্তি দিতে পারে বিয়ার।
আরও পড়ুন- মুঠো মুঠো অ্যান্টাসিড খেতেন কেকে! হার্টে সমস্যা আছে কি না, বোঝা যাবে কী করে!
ব্যবহারের পদ্ধতি –
৩টি পাকা স্ট্রবেরি পিষে নিতে হবে। এবার পেস্টটা কতটা ঘন করা হবে তা বিবেচনা করে মেশাতে হবে ১ থেকে ২ টেবিল চামচ বিয়ার। এবার পেস্টটা আলতো আঙুলে বৃত্তাকার ভাবে মুখে এবং ঘাড়ে লাগাতে হবে। শুকনোর জন্য ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে গরম জলে।
চুল নরম, মসৃণ এবং চকচকে করে:
বিয়ারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি রয়েছে। এটা মাথার চুল এবং মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়।
ব্যবহারের পদ্ধতি –
দুভাবে চুলে বিয়ার ব্যবহার করা যায়। প্রথমত, চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। তারপর হাতে অল্প বিয়ার নিয়ে সেটা চুলের গোড়ায় ভালোভাবে মাসাজ করতে হবে। ৫ মিনিট পর সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে চুল। দ্বিতীয়ত, এক কাপ জল, এক কাপ বিয়ার এবং ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে চুল ধুতে হবে। এরপর শ্যাম্পু করে সাধারণ জলে ধুয়ে নিতে হবে চুল।