TRENDING:

হবু মায়েদের শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রার উপর নজরদারি চালানোর নতুন মডেল, কোভিড পরিস্থিতিতেও দেখাচ্ছে দিশা

Last Updated:

New Model of Diabetes Management: বর্তমান পরিস্থিতিতে গর্ভবতী মহিলারা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল- জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes)৷

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#নয়াদিল্লি: করোনার একের পর এক ঢেউয়ে কার্যত বিপর্যস্ত গোটা বিশ্বই৷ করোনার প্রকোপ বাড়লে লকডাউনটাই উপায় ৷ এই বিশ্বব্যাপী মহামারির (Pandemic) পরিস্থিতিতে অন্যান্য রোগের চিকিৎসাও থমকে গিয়েছে ৷ আর এই অবস্থায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হবু মায়েরা৷ কারণ কোভিডের (Covid 19) কারণে গর্ভবতী মহিলারা (Pregnant) সে ভাবে চিকিৎসা পাচ্ছেন না, আর তাঁরা নিজেরা নিজেদের অনাগত সন্তানের কথা ভেবে রুটিন চেক-আপের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতেও ভয় পাচ্ছেন, যদি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হন ৷ আইসিএমআর (ICMR)-এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে অন্তঃসত্ত্বা এবং সদ্য মা হওয়া মহিলাদের বেশি ক্ষতি হয়েছে৷ আর এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, এই পরিস্থিতিতেও সমগ্র দেশের হবু মায়েদের উপযুক্ত চিকিৎসা কতটা প্রয়োজনীয় ৷
(Photo courtesy: AFP Relaxnews/ vgajic/Istock.com)
(Photo courtesy: AFP Relaxnews/ vgajic/Istock.com)
advertisement

আসলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন ছিল যে, করোনা রোগীরাই হাসপাতালে বেড পাচ্ছিলেন না৷ চারিদিকে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার ছিল৷ এই পরিস্থিতিতে খুব ইমার্জেন্সি না-হলে হবু মায়েরা সে ভাবে চিকিৎসা পাননি৷ আর তা ছাড়াও অনেক গর্ভবতী মহিলাই সংক্রমণের আশঙ্কায় হাসপাতালে যেতে চাননি৷ ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, অনিশ্চিয়তার ওই সময়ে হবু মায়েরাও নিজেদের স্বাস্থ্যের সমস্যা এড়িয়ে গিয়েছেন৷ আর বর্তমান পরিস্থিতিতে গর্ভবতী মহিলারা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল- জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes)৷ এই ধরনের ডায়াবেটিস মূলত গর্ভাবস্থাতেই হয়ে থাকে৷ আর এই সমস্যা যদি প্রথমেই সমাধান করা না-হয়, তা হলে কিন্তু মা ও সন্তান উভয়ের উপরেই এই রোগের দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল প্রভাব পড়ে৷

advertisement

আরও পড়ুন- ভারতে মাদক মামলায় ধরা পড়লে কী ধরনের শাস্তি হতে পারে?

জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস মেলিটাস (GDM) যে হারে বাড়ছে, তা বর্তমানে আমাদের দেশে চিন্তার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আর এই ধরনের ডায়াবেটিসের কারণে বিপদের সম্মুখীন হয় হবু মা আর তাঁর গর্ভে বাড়তে থাকা সন্তানও৷ এর কারণে গ্লুকোজের মাত্রা কমে এবং গর্ভাবস্থায় আরও নানা রকম ঝুঁকি বাড়ে৷ শুধু তা-ই নয়, পরবর্তী কালে আবার গর্ভবতী হলে সে সময়ও জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়৷ এ ছাড়াও কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও জটিলতা এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসেরও ঝুঁকি বেড়ে যায়৷ আর এই সব ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার কারণে গর্ভবতী মহিলার দেহের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না৷ মা ও বাচ্চার সুস্থতার প্রধান শর্তই হল- গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকা৷ এটা অত্যন্ত জরুরি৷ তাই এই কোভিড পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা এড়ানোই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ কী ভাবে সুরক্ষিত থাকা যাবে, তা ব্যাখ্যা করেছেন অ্যাবটের (Abbott) ডায়াবেটিস কেয়ার বিজনেসের জেনেরাল ম্যানেজার কল্যাণ সাতারু (Kalyan Sattaru)।

advertisement

এফেক্টিভ জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস মেলিটাস (GDM) ম্যানেজমেন্ট:

বর্তমান পরিস্থিতিতে হবু মায়েরা তো হাসপাতাল বা বড় ক্লিনিকে যেতে পারছেন না৷ গর্ভাবস্থায় নিজের বাড়িতে থেকে অথবা ছোটখাটো ক্লিনিকে গিয়েই চিকিৎসা করাতে হচ্ছে তাঁদের৷ ফলে ডায়াবেটিসের উপর দৈনন্দিন নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না৷ আবার হবু মায়েদের রক্তচাপও ওঠা-নামা করে৷ ফলে সেটাও বোঝা যায় না৷ তাই এক জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার শারীরিক অবস্থার উপর সব সময় নজর রাখতে হবে৷ যাতে সমস্যা হলেও তা সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করা যায়৷ সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়৷

advertisement

যে হেতু, জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের রোগীদের টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তাই গ্লুকোজের মাত্রার উপর নজরদারি চালানো উচিত৷ আসলে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের গ্লুকোজ মাত্রার উপর নজরদারি চালানো জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে৷ বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে যে কোনও সময়ে যে কোনও মুহূর্তে আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে৷ আবার অন্য দিকে, অসংক্রামক রোগের উপায়ও খুবই সীমিত৷ ফলে গ্লুকোজ মনিটরিংয়ের মতো প্রযুক্তিগত ভাবে নতুন এই পদ্ধতি বেশ উদ্ভাবনী এবং নিজের বাড়িতে বসে সহজেই তা প্রয়োগ করা যেতে পারে৷ আর তাই এটা রোগের চিকিৎসার দারুণ একটা পন্থা৷ দ্রুত রোগ নির্ণয়, বাড়িতে চিকিৎসা, সামগ্রিক উপায় ও সর্বাঙ্গীন পরিমাপ, সেন্সর-ভিত্তিক গ্লুকোজ মনিটর- এই সবের মাধ্যমে হবু মা ও তার সন্তানের শরীরের ডায়াবেটিসের মাত্রা ভালো ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে৷

advertisement

আরও পড়ুন- ট্যাক্স বাঁচাতে কোথায় বিনিয়োগ করবেন? জেনে নিন!

সমস্যার দ্রুত সনাক্তকরণ:

সেন্সর-ভিত্তিক গ্লুকোজ মনিটরিং ডিভাইস বা যন্ত্র পর্যায়ক্রমে শরীরের গ্লুকোজের মাত্রার উপর নজরদারি চালাতে সাহায্য করে৷ আসলে হবু মায়ের দেহে গ্লুকোজ মাত্রা ওঠা-নামা করে এবং চেক-আপ না-হলে তা বোঝা যায় না৷ আর এই ধরনের সমস্যা হলে সেটা যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, তত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা যাবে৷ অর্থাৎ গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে৷

বাড়িতে চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং সামগ্রিক উপায়:

গর্ভাবস্থায় বাড়িতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ততটাও সহজ নয়৷ আসলে গ্লুকোমিটার ব্যবহার করা বেশ কঠিন৷ কারণ এটা অনেক সময় হবু মায়ের হাইপারগ্লাইসেমিক ইভেন্টের ঠিকঠাক মূল্যায়ন করতে সক্ষম নয়৷ আর সেই সঙ্গে এটা যে হেতু আঙুলে ফুটিয়ে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে, তাই বারবার আঙুলে ফোটানো বেশ সমস্যার৷ বাড়িতে পরীক্ষা করার এটাই একটা রাস্তা৷ এ ছাড়া, বাইরে ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করানো যায়৷ তবে কোভিড পরিস্থিতিতে তা বেশ কষ্টসাধ্য৷

তবে, সেন্সর-ভিত্তিক ডিভাইজের মাধ্যমে বাড়িতেই বারবার গ্লুকোজের মাত্রা মাপা যায়৷ আর এটা বেশ ভালো একটা পন্থা৷ সেই সঙ্গে এই সেন্সর-ভিত্তিক ডিভাইজের মাধ্যমে ঘরে বসে আরামসে গ্লুকোজ লেভেল চেক করা যেতে পারে৷ আসলে এই মাত্রা কম-বেশি হলে, খাওয়াদাওয়ার পর মাত্রার অবস্থা- এই সব কিছু সঙ্গে সঙ্গে মেপে দিতে পারে সেন্সর-ভিত্তিক যন্ত্র৷ এমনকী, রাতভর মাত্রা কেমন রয়েছে, তা-ও ধরা পড়বে সেন্সর-ভিত্তিক ডিভাইজে৷ এ বার এক জন হবু মা সেন্সর-ভিত্তিক ডিভাইজ থেকে পাওয়া তথ্য নিজের চিকিৎসকের কাছে জানাতে পারেন৷ আর এ ভাবে বাড়িতে বসেই কনসাল্টেশন এবং চিকিৎসা- দুই সম্ভব৷ ফলে ঘরে বসে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের এটা দারুণ উপায়৷

জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের পরিমাপ:

জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের বেশ কয়েক ধরনের মাপ রয়েছে৷ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল ব্লাড সুগার (PPBS), ফাস্টিং ব্লাড সুগার এবং HbA1C৷ তবে একটা সময়ে গ্লুকোজের মাত্রা দেখানোর ক্ষেত্রে এই পরিমাপগুলো বেশ সীমিত৷ তবে সে দিক থেকে দেখতে গেলে সেন্সর-ভিত্তিক গ্লুকোজ ডিভাইজগুলি সত্যিই অসাধারণ৷ এক-এক জন রোগীর গ্লুকোজের মাত্রার একটা পরিসর থাকে৷ এ বার সেই প্রস্তাবিত বা উপযুক্ত পরিসরে রোগীর গ্লুকোজের মাত্রা কতক্ষণ থাকছে, সেটা সেন্সর-ভিত্তিক ডিভাইজের মাধ্যমে দারুণ ভাবে মাপা যায়৷ অর্থাৎ, এই যন্ত্র ভাইটাল মেট্রিক- রোগীর প্রস্তাবিত পরিসরে থাকার সময় (Time in Range) বা TIR মাপতেও সক্ষম৷ শুধু তা-ই নয়, দেহে গ্লুকোজের মাত্রা কতটা দ্রুত বদলে যাচ্ছে, সেটা সরাসরি ভাবে পরীক্ষা করে নিতে পারে এই যন্ত্র৷ আর তার ফলে চিকিৎসা করতে ডাক্তারবাবুদেরও সুবিধা হচ্ছে৷ রোগীও নিজের বাড়িতে বসে সহজেই চিকিৎসা পেয়ে যাচ্ছেন৷ আর অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে TIR-এর মাধ্যমে গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ এবং ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট- এই দুই মাপা যায়৷ ফলে বার বার গ্লুকোজের মাত্রার বদলে যাওয়ার ঘটনা কমানোর জন্য সঙ্গে সঙ্গেই হস্তক্ষেপ করা যায়৷ আর হবু মা এবং তাঁর অনাগত সন্তান সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পান৷ ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে গর্ভবতী মহিলা এবং তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের চিকিৎসায় উন্নতিসাধন ঘটেছে৷

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পড়ুয়াদের তৈরি খাবার নিয়ে ফুড ফেস্টভ্যাল স্কুলে, চিকেন ফুচকা থেকে কোল্ড কফি সব আছে
আরও দেখুন

এমনিতেই গর্ভাবস্থা চলাকালীন মহিলাদের মধ্যে নানা ধরনের শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন চলতে থাকে৷ তার উপর এই জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তো রয়েছেই৷ তাই সবার আগে হবু মায়েদের এই জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস মেলিটাস-এর মতো রোগের চ্যালেঞ্জটা বুঝতে হবে৷ সেই সঙ্গে এটাও বুঝতে হবে যে, এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ডাক্তারবাবুর সাহায্যও চাইতে হবে৷ আর ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত পদক্ষেপও করতে হবে৷ কম সময়ের মধ্যেই কী ভাবে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সেটাও শিখে নিতে হবে গর্ভবতী মহিলাদের৷ যাতে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস এবং তা থেকে হওয়া জটিলতা সহজেই এড়ানো যায়৷ হবু মায়েরা গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িতে সব সময় পরীক্ষা করতে পারবেন ওই যন্ত্রের মাধ্যমে৷ ফলে ঘরে বসে তাঁরা সহজেই বুঝে যাবেন নিজেদের শারীরিক অবস্থাও৷ আর অবস্থা বুঝে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করতে পারবেন৷ ফলে বোঝাই যাচ্ছে, ওই যন্ত্র ব্যবহার করলে বিশ্বব্যাপী মহামারীতেও হবু মায়েরা সুস্থ থাকবেন এবং নিজেদের সন্তানদেরও সুস্থ ভাবে পৃথিবীর আলো দেখাতে পারবেন৷

বাংলা খবর/ খবর/Explained/
হবু মায়েদের শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রার উপর নজরদারি চালানোর নতুন মডেল, কোভিড পরিস্থিতিতেও দেখাচ্ছে দিশা
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল