আজও বাঙালির মননে একই রকম আবেগ ও শ্রদ্ধা উত্তম কুমারকে নিয়ে। স্বাভাবিক ভাবে মনে এই প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, কেন? ৪২ তম মৃত্যুদিবসেও মহানায়কের এমন অমোঘ আকর্ষণ কেন? আসলে, আসলে প্রতিভার সঙ্গে শ্রম আর সঙ্কল্প তাঁকে এই অনন্য উচ্চতায় তুলে আনে। প্রথম থেকেই তিনি 'উত্তম' ছিলেন না। 'অরুণ'কান্তি 'ফ্লপ মাস্টার জেনারেল' বলেই পরিচিতি পেয়েছিলেন। কারণ, কেরিয়ারের প্রথম ৭টি ছবি পর পর ফ্লপ হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রি এই উপাধি উপহার দিয়েছিল তাঁকে। ক্রমে 'উত্তম' হয়ে 'নায়ক' এবং তারও পরে 'মহানায়ক'-এর তাঁর যে যাত্রা, তা আসলে বিচিত্রবর্গের এক প্রতিভার জেরে। মনে রাখার মতো অভিনয়-প্রতিভা তাঁর সময়ে আরও অনেকের থাকলেও, তিনি যেন সবার চেয়ে আলাদা।
advertisement
আরও পড়ুন: কালো কাটআউট পোশাকে উঁকি দিচ্ছে অনন্যার পেলব শরীর, ছবি ভাইরাল নেটপাড়ায়
শোনা যায়, প্রথম দিকে সংলাপ ভালো বলতে পারতেন না। খানিকটা তোতলামিও ছিল, যা পরে অনেক কষ্টে শুধরে নেন মহানায়ক। প্রথম দিকে চেহারাও দারুণ চোখে পড়ার মতো কিছু ছিল না। সাফল্য মেলার পরেও অধিকাংশ ছবিতেই 'টাইপ কাস্ট' হতেন। সাধারণ মেক-আপ। কিন্তু তার মধ্যে থেকেই নিজের অভিনয়-গুণে বাঙালির মনের গভীরে দোলা দিয়েছিলেন উত্তম। আর সেই আবেশ এমনই যে, তা দেশ-কাল-পাত্র ছাড়িয়ে চলে গিয়েছিল হলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী এলিজাবেথ টেলরের কাছেও।
আরও পড়ুন: নিওন সবুজ পোশাকে নোরা ফতেহি, নায়িকাকে দেখে চোখে ধাঁধাঁ ভক্তদের
১৯৫৫-র আগের উত্তমের সঙ্গে পরবর্তী উত্তমকে প্রায় মেলানোই যায় না। আবার ১৯৬০-উত্তর উত্তম যেন আরও এক বিস্ময়। ১৯৬৫ পরবর্তী সময়ে উত্তম যেন প্রায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। ততদিনে তাঁর চেহারা, অনাবিল হাসি, অকৃত্রিম চাহনির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছে গভীর রোম্যান্টিক কণ্ঠস্বরে অপূর্ব ডায়ালগ-থ্রোয়িং, অসামান্য ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন এবং চরিত্র ও পরিপার্শ্ব মিলিয়ে সহজ কিন্তু নিটোল অভিব্যক্তি। তখন সাধারণ মানের গল্প, সাধারণ চিত্রনাট্য, সাধারণ সহ-অভিনেতাদের নিয়েও তিনি তাই বাংলা ছবির জুলিয়াস সিজার। সেই মহানায়কের ম্যাজিক আজও একই রকম অব্যাহত।