সেই সাজি সাজিয়ে তোলার জন্য পরিচালক বেছে নিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্য এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতকে। বগুড়ার ভূমিপুত্র বলেছিলেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত হলেন স্পর্শমণি, যার স্পর্শে সব কিছু সোনা হয়ে যায় ৷ রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর ছবিতে রেখে নিজেকে ধন্য মনে করতেন ৷ তাঁর উপলব্ধি, সুর ও গানের এই আত্মীয়তা রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া অন্য কোথাও নেই ৷ রবীন্দ্রসঙ্গীতের জন্যই তিনি ছবির দৃশ্যগুলি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলেন বলে বিশ্বাস ছিল তাঁর ৷
advertisement
আরও পড়ুন : ‘আমি কোথায় দু’বার ভালবাসা কথাটা ব্যবহার করেছি? করেছেন স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ’
সেই যুগলবন্দিতে তাঁর ছবি আন্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠতে পেরেছিল কিনা, এ নিয়ে ফিল্ম বোদ্ধাদের কফির পেয়ালায় তুফান উঠতে পারে। কিন্তু তাঁর ভাবনার জলতরঙ্গকে বিঘ্নিত করতে পারেনি। নিজের মুক্তাক্ষরের মতোই অপূর্ব সুন্দর ছবি দিয়ে অলঙ্কার পরিয়ে গিয়েছেন বাংলা ছবির বিগ্রহকে। নায়কের পরিবর্তে অনায়কোচিত, জৌলুসের বদলে ম্রিয়মাণই ছিল তাঁর তুরূপের তাস। কষ্টিপাথরে যাচাইয়ের আগে পরশপাথরের স্পর্শ।
আরও পড়ুন : এ রকম নিষ্ঠুর মৃত্যু যেন আর দেখতে না হয়, কন্যাসমা মহুয়ার মৃত্যুতে বলেন তরুণ মজুমদার
সেই স্পর্শে উত্তরণ ঘটেছে ‘নিমন্ত্রণ’, ‘পলাতক’, ‘বালিকা বধূ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘আলোর পিপাসা’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘কুহেলী’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ঠগিনী’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘সংসার সীমান্তে’, ‘যদি জানতেম’, ‘গণদেবতা’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’ অথবা ‘পথভোলা’-র। নিছক বাংলা ছবির পরিচয় পেরিয়ে এগুলি হয়ে উঠেছে বাঙালির যাপন ও মননের সঙ্গী। দর্শকদের জন্য সেই সঙ্গীদের রেখে তরুণ মজুমদার নিজেই পথভোলা হয়ে পাড়ি দিয়েছেন সংসার সীমান্তের দিকশূন্যপুরে। তাঁর কাজ সংরক্ষণ করে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই স্রষ্টার প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধার্ঘ্য।