সুনীলের বিলাসবহুল এই বাড়িটির দামও অনেকটাই বেশি। তবে বাড়ির ট্যুর দেওয়ার আগে তিনি দু’টি দেওয়ালের ছবি দেখালেন। তাতে ফুটে উঠেছে হাতে আঁকা নকশা। এর মধ্যে একটি দেওয়ালে রয়েছে ফ্লোরাল ম্যুরাল এবং লিভিং রুমের দেওয়ালে ফুটে উঠেছে বিশালাকার একটি গাছের ম্যুরাল। নিজের রসবোধ বজায় রেখে অভিনেতা বললেন, “লিভিং রুমে একটা গাছ আছে, তবে সেই গাছে জল দেওয়ার দরকার হয় না। কারণ সেটি হাতে আঁকা।”
advertisement
লিভিং রুমের এক পাশেই রয়েছে ব্যালকনি। সেখান থেকে মিলবে শহরের দিগন্তবিস্তৃত দুর্দান্ত প্যানোর্যামিক ভিউ। এই প্রসঙ্গে সুনীল বললেন, “এর আগে আমি যতগুলো বাড়িতে থেকেছি, সব ক’টিই এখান থেকে দেখা যায়। এটা অনেকটা আমার গোটা সফরের অ্যালবামের মতো।” ব্যালকনির দিকে মুখ করে লিভিং রুমের সোফায় বসে থাকতে ভাল লাগে বলেও জানালেন অভিনেতা। এমনকী সেখানে বসে নিজেকে মাঝেমধ্যে রাজা বলেও মনে হয় বলে মত সুনীলের।
সুনীল গ্রোভারের বাড়ির রান্নাঘরের ডিজাইনেও রয়েছে দারুণ চমক। কারণ রান্নাঘরে যেন লেগেছে রঙের ছোঁয়া। আসলে মরক্কান প্রিন্টের রঙিন টাইলস দিয়ে সাজানো গোটা রান্নাঘরটি। শুধু তা-ই নয়, রয়েছে ৩৬০ অ্যাঙ্গেল রোটেটিং জানলাও। যেখান থেকে আকাশ দেখা যায়। সুনীল বললেন, “আমি রান্না করতে ভালবাসি। তবে আমি যা রান্না করি, সেটা অন্যরা খেতে ভালবাসেন না।”
অভিনেতা বলে চলেন, “একটা ঘর, রান্নাঘর অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই আমি যাত্রা শুরু করেছিলাম। সেটা অবশ্য ভাড়ার অ্যাপার্টমেন্ট ছিল এবং আমি এরকমই সুখী ছিলাম। ২-৩ বছর পরে আমি আরও একটি বেডরুম যোগ করি। ফলে বেডরুম বাড়ল। যদিও ক’টা বেডরুম অথবা কত কার্পেট এরিয়া রয়েছে, সেটা বিষয় নয়। আপনাকে সুখী থাকতে হবে। ফলে আমি যখন ভাড়ার অ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম, তখনও একই রকম আনন্দে থাকতাম। তবে মুম্বইয়ে একটা নিজের বাড়ি করা কিন্তু সহজ নয়।”
পড়তে খুবই ভালবাসেন অভিনেতা। তাই ঘরে তাঁর প্রিয় একটি কোণও সাজিয়েছেন। সেখানে তাঁর প্রিয় বই, স্ক্রিপ্টের বিপুল কালেকশন রাখা। তবে সুনীলের দোতলা বাড়িটি খুব ভেবেচিন্তেই দু’ভাগে বিভক্ত। সুনীলের পছন্দ উপরের ফ্লোরটি। একটা মজাদার বৈশিষ্ট্যও রয়েছে ওই ঘরে। সেটা হল একটি ব্ল্যাক বোর্ডের দেওয়াল। যার উপর সাজানো রয়েছে সোনালি রঙা ফ্রেম। যেখানে যাঁর যা মন চায়, তিনি তা লিখতে পারবেন।
হোম ট্যুর দিতে গিয়ে স্ত্রী আরতির সঙ্গে পরিচয়ও করালেন সুনীল। বাড়ির কনসেপ্ট ভাগ করে নিয়ে আরতি জানালেন যে, “আসলে চোখ আর মনের জন্য আনন্দদায়ক হতে হবে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাই। কিন্তু যখন আমরা বাড়ি ফিরি, তখন মনে হয়, বাহ! আমরা চেয়েছিলাম যে, আমাদের গৃহসজ্জার সামগ্রী যেন তেমন ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ না করে। আসলে আমরা নিজেদের মনের আনন্দের জন্য বাড়িটি সাজিয়েছি, অন্যদের সন্তুষ্ট করার জন্য নয়।”
সব মিলিয়ে সুনীল গ্রোভারের বাড়িতে ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক কোয়ার্কি শিল্পকর্ম এবং গৃহসজ্জার উপকরণ। সাউন্ড প্রুফ টিভির ঘর থেকে শুরু করে পিয়ানো এমনকী ‘দ্য কপিল শর্মা শো’ টিমের ছবি দেওয়া ফ্রিজ ম্যাগনেট – এই সবই অভিনেতার অভিনয় জীবনের সফরের প্রতিফলন।