জাতীয় পুরস্কারজয়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রীর কটাক্ষ, ‘‘আমরা বেশ ভুলে যেতে পারি। বড়দের, পুরনোদের, যাঁরা আমাদের হাঁটার রাস্তাটা তৈরি করে দিয়ে গেলেন তাঁদের, যাঁরা এখন বাতিল বা ব্রাত্য তাঁদের — সবাইকে ভুলে মেরে দিয়ে নিজেরা সেই রাস্তায় দিব্যি হাঁটতে পারি সঙ্গে আট/দশজন বাউন্সার নিয়ে (বেশির ভাগ সময়েই অকারণে)।’’
শুক্রবার সকালে নিজের বাড়িতে প্রয়াত হন অশীতিপর সমীর মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন তিনি ছিলেন দর্শকদের অগোচরে। অনেক দিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে সম্প্রতি ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরে আসার দু’দিনের মধ্যে প্রয়াত হলেন তিনি।
advertisement
চাকরিজীবী এবং নাট্যদলের অভিনেতা সমীর মুখোপাধ্যায় অভিনয়ের জগতে আসেন তরুণ মজুমদারের হাত ধরে। প্রথম অভিনয় করেন তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘সংসার সীমান্তে’ ছবিতে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে অন্যতম ‘ফুলেশ্বরী’, ‘লাল দরজা’, ‘আদালত ও একটি মেয়ে’ এবং অবশ্যই ‘হীরক রাজার দেশে’।
‘হীরক রাজাক দেশে’ ছবিতে সমীর মুখোপাধ্যায়কে দেখা গিয়েছিল হীরকরাজের শিল্পমন্ত্রীর ভূমিকায়। মূলত কৌতুক চরিত্রেই অভিনয় করতেন তিনি। সংলাপ ছাড়াও তাঁর উপস্থিতিতে ছড়িয়ে পড়ত রসবোধ। তাঁর চোখের চাহনিতেও প্রকাশ পেত স্বভাব রসবোধ। কিছু ছবিতে তাঁকে দর্শক পেয়েছে খল চরিত্রেও। সিনেমার পাশাপাশি এক সময় যাত্রাপালাতেও তিনি ছিলেন নিয়মিত অভিনেতা।
বেশ কয়েক বছর হল কাজ করছিলেন না তিনি। ফলে দর্শকস্মৃতি থেকেও ফিকে হয়ে গিয়েছিল তাঁর অভিনয়। সেখানেই ক্ষোভ অভিনেত্রী সুদীপ্তার। লিখেছেন ‘‘সমীর কাকুকেও ভুলে গেছি আমরা। সত্যজিৎ রায়ের বহু ছবি চললেই তাঁর দেখা পাই, অগুনতি সাদা কালো বা রঙ্গীন পুরনো বাংলা সিনেমায় ছোট থেকে বড় নানান চরিত্রে অভিনয় করে মানুষকে কখনো হাসিয়েছেন, কখনো রাগিয়েছেন সমীর কাকু।’’
প্রয়াত অভিনেতার সাধারণ জীবনযাত্রার কথাও তুলে ধরেছেন সুদীপ্তা। সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, অভিনেতা সমীর মুখোপাধ্যায়কে কোনওদিন তিনি গাড়ি চড়ে স্টুডিওয় ঢুকতে তিনি অন্তত দেখেননি। বরং সুদীপ্তার মনে পড়ছে বেহালায় নিজের পাড়ায় সাধারণ পোশাকে সমীরবাবুর বাজার করার স্মৃতি। এই সাধারণ জীনযাত্রার জন্যই কি বিনোদন দুনিয়া তথা দর্শকরা ভুলে গেল সমীর মুখোপাধ্যায়কে? নাকি তিনি ইনস্টাগ্রাম রিল বানাতেন না বলেই চলে গেলেন বিস্মৃতিতে? উত্তর খুঁজছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী।