সে শাড়ি কিন্তু মহার্ঘ্য জমকালো কিছু নয় ৷ বরং, মিহিসুতোর পাড়ের মোলায়েম শাড়ি ৷ পরতেন তাঁর পিসি ৷ ফেসবুকে সুদীপা ফিরে গিয়েছেন পুরনো দিনে ৷ বলেছেন, ওই শাড়িগুলি দিয়েই পরে পরিবারে সকলের নামে কাঁথা তৈরি হত ৷ সুদীপার মনে হয়, আর কোনও শাড়ি এত আরামদায়ক নয় ৷
স্মৃতির শাড়ি পরে কিছুটা যেন অতীতচারী হওয়ার ইচ্ছেই হয়েছিল সুদীপার ৷ তাঁর কথায়, জরি ছাড়া মিহি সুতোর পাড়ের একাধিক শাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন এক নামী তন্তুবায় ৷ সেই শাড়ি পরে নিজের শো সঞ্চালনা করেছেন সুদীপা ৷ মনে হয়েছে, আচ্ছা তাঁকে কি তাঁর পিসির মতো দেখতে লাগছে ?
advertisement
পিসির প্রসঙ্গে সুদীপা ফিরে গিয়েছেন পুরনো দিনে ৷ তাঁর মনে বার বার ফিরে এসেছে সোদপুরে গাছগাছালি ঘেরা পিসির বাড়ির কথা ৷ সেই বাড়িতে সুদীপার রন্ধনপটীয়সী পিসির অতিথি আপ্যায়ন ছিল আদর এবং যত্নে ঘেরা ৷ তাঁর হাতের সূচিশিল্পও ছিল দেখার মতো ৷ অজাতশত্রু পিসি রাত জেগে বই পড়ার সময় হ্যারিকেনের একদিকে পোস্টকার্ড লাগিয়ে দিতেন ৷ যাতে পিসেমশাইয়ের ঘুমের ব্যাঘাত না হয় ৷ পিসিমাকে নিয়ে সুদীপার কথায়, ‘‘সাংঘাতিক ভালোবাসতেন পিসেমশাইকে। তিনি মারা যাবার পর,পিসি আর কোনোদিন তাঁর সেগুন কাঠের খাটে ঘুমোননি। মাটিতে বিছানা করে শুতেন।
আমরা ছোটরা তাঁর ওই টানটান,ধবধবে সাদা চাদরে মোড়া বিছানার ওপর সারাদিন নজর দিতুম। রাতে আমরা পরপর শুয়ে পরতুম ওই বিছানায়।’’
কচিকাঁচাদের গায়ে থাকত পিসির হাতে তৈরি প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা কাঁথা ৷ সেই মিহিসুতোয় বোনা শাড়ি দিয়ে তৈরি কাঁথা ৷ যার পরশে চোখ জুড়ে এসে বসত ঘুমের মাসি, ঘুমের পিসি ৷ আরামদায়ক সেই শৈশব সুদীপা আবার ফিরে পেয়েছেন মিহি সুতোর নরম তাঁতের শাড়িতে ৷
শুধু পিসি নন ৷ সুদীপা জানিয়েছেন, তাঁর মা-ও পরতেন মিহিসুতোর শাড়ি ৷ এই শাড়ির আঁচলেই মুখ মুছে আরাম পেত ছোটরা ৷ সুদীপার ঘোর যেন কাটতেই চায় না ৷
শাড়ির সঙ্গে মানানসই গয়নার কথা ও ছবিও শেয়ার করেছেন সুদীপা ৷ এর আগে গয়নার ছবি দিয়ে এবং এক নেটিজেনের প্রশ্নের উত্তরে ট্রোলড হয়েছিলেন সুদীপা ৷ তবে তাঁর মিহিসুতোর পোস্ট ঘিরে নেটিজেনরা স্মৃতিমেদুর ৷ সুদীপার সরল সাবলীল ভাষায় আটপৌরে সাংসারিক অন্দরমহলের গল্পে মুগ্ধ সকলে ৷