কী ভাবে সফল হল এই লড়াই?
লড়াইটা শুরু থেকেই ছিল। এখনও চলছে। প্রতিদিন লড়াই করতে হয়। আমি বলতে গেলে ভীড়ের চরিত্রেই অভিনয় করতাম। দু'দুটো ধারাবাহিকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেও সেই জুনিয়র আর্টিস্টই পরিচয় ছিল। কিন্তু ভাগ্য বদলে যায় 'বাচ্চা শ্বশুর' সিনেমা থেকেই। সেখানে আমি পাগলের অভিনয় করছিলাম। একা নয়। সবার মাঝখানে আমাকে নজর করেন পাভেল স্যর। শুধু তিনি নন সুপারস্টার জিতের নজরেও আমি আসি। সেই মুহূর্তে শ্যুটিংয়েই জিতদা এবং পাভেলদা নিজেদের মধ্যে কথা বলে গোটা একটা সিন তৈরি করেন। এবং আমি সেই চরিত্রে অভিনয় করি। জিতদা নিজে এডিট করে আমার চরিত্রটাকে বড় করে দেখায়। বলতে গেলে সেই থেকেই একটু একটু করে বদলে যায় লড়াইটা। আমি সারা জীবন ভুলতে পারবো না এই অবদান।
advertisement
অনীক দত্তের 'অপরাজিত'-তে কী ভাবে কাজের সুযোগ এল?
আমি 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি', 'সুইৎজারল্যান্ড' এরকম অনেক ছবিতেই ছোট ছোট কাজ করছি। এর মধ্যে এল লকডাউন, করোনা। তখন বাড়ি বসে আমি ফেসবুকে কিছু ভিডিও বানাতে থাকি। নিজেই অভিনয় করি। 'দ্য গ্রেট ডিক্টেটর'-এর একটা অংশ আমি অভিনয় করি। সেটা ভাইরাল হয়। অনীকদা সে সময় সেই ভিডিও শেয়ার করে অনেক প্রশংসা করেছিলেন। শুধু অনীকদা নয় জিৎদাও আমার ভিডিওটা শেয়ার করে, আমার প্রশংসা করেন। ওই সময় থেকেই অনীকদা আমায় মনে রেখেছেন। এর পরে যখন 'অপরাজিত' হয় তখন উনি আমায় ডাকেন।
'অপরাজিত' আপনার কাছে কতটা?
আমার কাছে এই ছবি এখন সব কিছু। এই ছবিতে আমি সত্যজিৎ রায়ের সিনেম্যাটোগ্রাফারের ভূমিকায় কাজ করছি। যিনি 'পথের পাঁচালি' থেকে 'অপুর সংসার' সহ আরও অনেক ছবিতে নিজের অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। এই ছবিতে আমাকে এত বড় ভূমিকায় নেওয়া হবে আমি সত্যি ভাবিনি। আমি আমার সবটা দিয়ে কাজটা করেছি।
সিরিয়াল থেকেই কী কাজের শুরু?
না, না আমি থিয়েটার থেকেই অভিনয় শুরু করি। দেবশঙ্কর হালদার এবং গৌতম হালদার দু'জনের নাটকেই আমি অভিনয় শিখি। তবে আমার জীবনের সব থেকে বড় অবদান হল আমার শিক্ষক দেবাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের। উনিই আমায় উৎসাহ দেন অভিনয় নিয়ে। এমন বিশ্ব সিনেমার সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেন। এমকি থিয়েটারে অভিনয় করাটাও দেবাদিত্যদার উৎসাহতেই হয়।
আর সিনেমা যোগটা কী ভাবে হল?
২০১৬ সালে একটা রিয়েলিটি শো হয়েছিল জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলে। সেখানে আমি অভিনয়ে চ্যাম্পিয়ন হই। আমিই জিতি। তারপরেই ধারাবাহিকে সুযোগ আসে। 'গ্যাংস্টার গঙ্গা'। এর পর সিনেমা। কৌশিক দাসের হিন্দি শর্ট ফ্লিম 'Retribution' আমায় সেরার সেরা পুরস্কার এনে দিয়েছে। International Kolkata Short Film Festival-এ এই ছবির জন্য সেরা সহ অভিনেতার পুরস্কার পাই।
হিন্দিতেও কাজ করছেন নাকি?
হ্যাঁ করছি। আমার ফেসবুক ভিডিও দেখেই বলিউড থেকেও ডাক পাই আমি। মল্লিকা শেরাওয়াত, ইশা গুপ্তার সঙ্গে 'নকাব'-এ কাজ করি। বীজেন্দ্র কালা-জির সঙ্গে 'মাস্ক'! এছাড়া আমার একটা ওয়েবসিরিজও মুক্তি পাবে 'ধানবাদ'। বেশ কিছু কথা চলছে এখনও।
আর কলকাতায় কী কাজ চলছে?
সদ্য নর্থবেঙ্গলে শ্যুটিং শেষ করে এলাম 'শিকারপুর'-এর। এটি একটি ওয়েবসিরিজ। সেখানে আমি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছোট অল্প বয়সের চরিত্রে অভিনয় করছি। এর পর দেখা যাক। তবে এটুকু বলতে পারি আমার কাজে এখন আমার বাবা খুব খুশি। ভরসা করেন। পরিবারের মানুষদের মুখে আমি আমার অভিনয় দিয়ে হাসি ফোটাতে পেরেছি। এটা আমার কাছে বড় পাওয়া।