বেলগাছিয়া পোস্ট অফিসের কর্মী ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট লিখে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। যেখানে লেখা, ‘পেশায় গায়ক রূপঙ্কর বাগচী মহাশয় আজ সস্ত্রীক আমাদের পোস্ট অফিসে আসেন আধারের কাজ করাতে। প্রথমে সাড়ে বারোটা নাগাদ জনৈক চৈতালি লাহিড়ী (পরে বোঝা গেল উনি রূপঙ্কর বাবুর স্ত্রী) এসে আধার নথিভুক্তিকরণের জন্য থাকা কর্মীকে বলেন উনি রাজ্য সরকারের মহিলা সুরক্ষা দফতর থেকে আসছেন। ওনাকে ‘তক্ষুনি’ করে দিতে হবে। প্রত্যুত্তরে আধার কর্মী বলেন, তিনি করে দেবেন কিন্তু আগে যারা সেই সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তাদের করে তারপর..।’
advertisement
পোস্ট অফিসের সেই কর্মী জানিয়েছেন, তাঁদের অফিস সকাল ১০টায় খোলে। তারপর প্রচুর লোক লাইন দিয়ে থাকেন। তাই তাঁরা জানান, এই অবস্থায় কোনওমতেই একজন শিল্পীকে সেই সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলিকে টপকিয়ে আগে সার্ভিস দেওয়া সম্ভব নয়, অন্তত নীতিগত ভাবে তো নয়ই। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, এটা বুঝিয়ে বলার পরেও রূপঙ্কর-জায়া রীতিমতো ‘পাওয়ারফুল শিল্পীপত্নী’ সুলভ আচরণ করেন এবং স্বঘোষিত ভাবে বলেন, দুপুর দেড়টার সময় ফের আসবেন।
ফেসবুকে লেখা হয়েছে, ‘দেড়টার বদলে ওনাদের কাজ ১:৩৫ এ শুরু হয়, তাতেই রূপঙ্কর বাবুর শৈল্পিক সত্তায় আঘাত লাগে। ওনার স্ত্রী চৈতালি দেবীর বক্তব্য অনুযায়ী ‘মুড়ি মুড়কি এক করলে চলবে না, বুঝতে হবে কাকে আগে করতে হবে’। অর্থাৎ ওনারা দামি মুড়কি আর সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলি সস্তার মুড়ি। ইতিমধ্যে আমরা অর্থাৎ উক্ত ডাকঘরে থাকা কর্মীরা ছুটে যাই, ওনাকে বোঝানোর চেষ্টা করি। বলি যে আপনারা দরকার পড়লে আলাদা ভাবে বলতেন, আমরা এনাদের করে শেষ বেলার দিকে আপনাদের সময় করে দিতাম, ইত্যাদি.. কিন্তু অহঙ্কারবশত বাগচিবাবু ভুলে যান যে উনি একজন কর্তব্যরত সরকারী কর্মচারীর সঙ্গে কী ব্যবহার করছেন। তাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাবে বলেন গালিগালাজ করেন। তারপর আমরা সকল কর্মী এবং সেখানে উপস্থিত কিছু কাস্টমারেরা সম্মিলিত ভাবে জোর গলায় ওনার ‘অসাংবিধানিক’ শব্দবন্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বাগচীপত্নী স্বামীকে বগলদাবা করে পিছু হটতে বাধ্য হন।’
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হয় রূপঙ্করকে। প্রথমে তিনি ফোন না ধরলেও পরবর্তী কালে ফোনের উত্তর দিয়েছেন। নিউজ18 বাংলাকে গায়ক বলেন, ”আমি এই বিষয়ে এখন কিছুই মন্তব্য করতে চাই না।” তাহলে কি আশা করা যায়, গায়ক এবং গায়কের স্ত্রী আগেরবারের মতো বিবৃতি প্রকাশ করবেন কিছু দিন বাদে?
এরপরই সেই কর্মী লেখেন, ‘আমার একটাই কথা, এই গায়ক মহাশয় এতোটা স্পর্ধা পান কোথা থেকে? আমাদের অনেক ব্যস্ত কাস্টমারেরা থাকেন যারা অনলাইন স্লট বুকিং করে আধারের কাজ করিয়ে থাকেন। কিন্তু সেই বলে আমি মহিলা দফতরের কর্মী, আমি দেরি করে আসব, আর যাদের আগে হওয়ার কথা তারা মুড়ি বলে আমি মুড়কি, গায়ক/গায়কপত্নী হয়ে সুবিধা নিয়ে চলে যাব, এটা ভাবেন কোন আক্কেলে?’