TRENDING:

KK Death: মুছে গেল 'ইয়ারো দোস্তি'র মায়াজাল, 'জব তুনে কহে দিয়া, আলবিদা' কেকে...

Last Updated:

KK Death: ভিড়ে উপচে পড়া নজরুল মঞ্চে যে মানুষটা কিছুক্ষণ আগে গাইছেন, 'বাহো মে, মেরি বাহো মে..', বলছেন জীবনকে, প্রেমকে আলিঙ্গন করে নিতে, সেই মানুষটাই হঠাৎ সমস্ত বাহুডোর ছাড়িয়ে চলে গেলেন।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: আপাত নিস্তরঙ্গ শহর। রাত বাড়ছে। গেরস্থ বাড়িতেও দিন শেষের রুটিন কাজে ব্যস্ত আম বাঙালি। রাত বাড়লেও শহরের হাসপাতালগুলোও আর পাঁচটা দিনের মতোই- ব্যস্ত, কিন্তু নিঃশব্দ। আর সেই নৈঃশব্দই খানখান হয়ে গেল রাত এগারোটা নাগাদ। কলকাতার সিএমআরআই হাসপাতালের খবরটা ছড়িয়ে পড়ল আলোর গতিতে। রাত বারোটা দুই মিনিটে ট্যুইট করলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি, দেশের প্রধানমন্ত্রী! কিন্তু কী এমন ঘটল সিএমআরআই-তে? মারা গিয়েছেন কেকে! কে? খবরটা শুনে অবিশ্বাসে রাতের খাবারের শেষ গ্রাসটুকু কত যে মুখ থেকে পড়ে গেল, তার ইয়ত্তা নেই। হ্যাঁ, 'ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল' গাইবার কয়েক মিনিটের মধ্যেই কলকাতার বুকে নিজেকে ইয়াদের দুনিয়ায় নিয়ে চলে গেলেন কেকে। কী অন্ধকার এক রাতের মুখে এসে দাঁড়াল গোটা দেশ। এ রাত যত গভীর, ততই কষ্টের...
আব ক্যাহেনা অর ক্যায়া, যব তুনে কহে দিয়া আলবিদা....
আব ক্যাহেনা অর ক্যায়া, যব তুনে কহে দিয়া আলবিদা....
advertisement

খবর পেয়ে সিএমআরআই-তে তখন ছুটে যাচ্ছেন একের পর এক তারকারা। যাচ্ছেন একেবারে আম ভক্ত, শুধু কেকের গানের ভক্ত। হাসপাতালের বাইরের অন্ধকার ফুটপাতে দাঁড়িয়েই তেমন এক মধ্যবয়সীর প্রশ্ন, 'কেকে-র বয়স কত! এত ইয়াং!' হ্যাঁ, আসলে কেকের গানে মত্ত দেশ তাঁকে চিরযুবকই ভেবে এসেছে। তাতে এভারগ্রিন মার্কা দ্যুতি না থাক, বিশ্বাস ছিল... কেকে এখনও বহুদিন গান শোনাবেন আমাদের। সেই বিশ্বাসটাই মুহূর্তে ভেঙে গেল এই অশনি রাতে। মাইকেল জ্যাকসনের অন্ধ ভক্ত চলে গেলেন মাত্র ৫৪-তেই। অবশ্য জ্যাকসনও তো গেছেন ৫১-তে। কিংবদন্তীরা কি গড়পড়তায় স্বল্পায়ুই হন?

advertisement

দিল্লির মালায়লি পরিবারে জন্ম কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের। মঙ্গলবার রাতের আগে ক'জন জানত সে নাম! নতুন দিল্লিতে বেড়ে ওঠা কৃষ্ণকুমার তখন ধীরেধীরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন কেকে হয়ে ওঠার। মাউন্ট সেন্ট মেরি'স স্কুল, কিরোরি মাল কলেজ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়- পড়তে পড়তে সুর বুনছেন কেকে। মুহূর্তে বানিয়ে ফেলছেন জিঙ্গল। বলিউডে প্রবেশের আগেই কেকে-র জিঙ্গলের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার! তবে, গোটা দেশ নড়েচড়ে বসল ৯৯-তে। ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সমর্থনে কেকে গাইলেন 'জোশ অফ ইন্ডিয়া'! 'হাউ ইজ দ্য জোশ'-এর অনেক আগেই সেই 'জোশে' মজেছিল আসমুদ্র হিমাচল। ভারতীয় ক্রিকেটারদেরও সেই গান শুনিয়ে পেপটক দেওয়া হয়েছিল। সেই বছরই আবার 'হাম দিল দে চুকে সানাম'! গান ছাড়া কেকে-কে নিয়ে খবর হত না তেমন। নির্বিবাদী, মিষ্টি ব্যবহারের সেই মানুষটাই রাতজুড়ে গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমকে দিয়ে 'খবর' করাচ্ছেন।

advertisement

আরও পড়ুন: নজরুল মঞ্চে জমজমাট গান গাইলেন প্রিয় গায়ক, শেষ হতেই সব শেষ! প্রয়াত কেকে, দেখুন

সেই ৯১ সালে বিয়ে করেছিলেন জ্যোতিকে। সেই জ্যোতির জীবনে সমস্ত আলো আজ নিভিয়ে দিয়ে চলে গেলেন সবচেয়ে কাছের মানুষটা। আর কন্যা তমরা! পায়ের তলার মাটি সরে গেল গোটা কুন্নাথ পরিবারের। কিশোর কুমার, আর ডি বর্মনকে ঈশ্বর মনে করা কেকে আজ পৌঁছে গেলেন ঈশ্বরেরই দরবারে। দেখা হবে বিলি জোয়েল, ব্রায়ান অ্যাডামস, লেড জেপেলিনদের সঙ্গেও। কেকে তো তাই চাইতেন, বলতেন, ''একজন গায়কের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হল একজন গায়ককে শোনা, অনুভব করা।'' গভীর রাতে কত বাড়ি আজ কেকে-র গান শুনছে...

advertisement

গুলজারের মতো মানুষে কেকে-তে মুগ্ধ ছিলেন। 'ছোড় আয়ে হাম' থেকে ধীরেধীরে তরুণদের ঠোঁটে রাজত্ব করা 'পল'। কৈশোর, যৌবনের অঙ্গনে কেকে এনে দিলেন 'ইয়ারো দোস্তি'-র মায়াজাল। বন্ধুকে যেন জাপটে ধরার মন্ত্র দিলেন তিনি। সেরা গায়ক হিসেবে স্ক্রিন পুরস্কারও পেলেন। কিন্তু যে মানুষটা আজীবন বিশ্বাস করে এলেন শ্রোতার কানই তাঁর শ্রেষ্ঠ উপহার, তাঁকে ঠিক পুরস্কারের নিক্তিতে মাপা যায় না। আট সালের শুরুতে 'হামসাফর' হলেন কেকে। 'দেখো না' বলে দেখালেন 'আসমান কে'! কেকে-র ঠোঁটেই তো মানায় 'ইয়ে কাহান মিল গ্যায়ে হাম'।

advertisement

আরও পড়ুন: ইয়ারো দোস্তি থেকে পল, গানে গানে জীবনের শিক্ষকও ছিলেন গায়ক কেকে

নিজে যেমন গেয়েছেন এক একটা মাইলস্টোন, গানের সন্ধান করে গিয়েছেন দিনরাত। চকচকে রিয়েলিটি শো-তেও তাই কেকে ছিলেন এক ব্যতিক্রমী মিনার, ঠিক যেন স্ক্রিপ্টের বাইরের পান্ডুলিপি। যেখানে সুর আছে, লয় আছে, আর আছে অতল সমুদ্রের গভীরতার মতো এক কণ্ঠ, যা কত মানুষের রাতের ঘুমের বড়ি হয়ত...

মায়ানগরী মুম্বইয়ের বুকে কতবার কত মঞ্চে ঘোষক-ঘোষিকারা বলেছেন, 'ইটস দ্য টাইম টু অ্যানাউন্সমেন্ট ফর বেস্ট প্লে ব্যাক সিঙ্গার', কত বার গমগমে প্রেক্ষাগৃহে উচ্চারিত হয়েছে সেই একটাই নাম- কেকে! মঞ্চে উঠেছেন বারবার, বলেছেন, ''আমার এই পুরস্কার আমি তুলে দিলাম আমার শ্রোতা, আমার ভক্তদের হাতে। মঞ্চ থেকে সেই সম্মান যেন স্পন্দিত হত কোটি-কোটি বুকে। কিন্তু শেষবেলাতেই ব্যতিক্রম হল। অসুস্থ বোধ করায় নজরুল মঞ্চের শো থেকে সোজা গ্র্যান্ড হোটেল। হোটেলের লবিতে তখন থিকথিক করছে কেকে প্রত্যাশীরা। অটোগ্রাফ আর সেলফির আবদারে তখন কান পাতা দায়। কিন্তু ভক্তপাগল মানুষটা ফিরিয়ে দিলেন তাঁদের। জানিয়ে দিলেন, অসুস্থ বোধ করছেন। ফিরে গেলেন ঘরে। সেই শেষ বার আম জনতার চোখের সামনে দিয়ে চলে গেলেন 'লাইভ কেকে'! ইনস্টা প্রোফাইলেরও যে নাম রেখেছিলেন, 'কেকে লাইভ নাও'! প্রোফাইলের মালিকটাই হারিয়ে গেলেন হঠাৎ করে।

আরও পড়ুন: সমাপতনের শিকার! কেকে-এর মৃত্যুতে সামাজিক মাধ্যমে চরম কটূক্তি রূপঙ্করকে

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
শীতের মরশুম এলেই গৃহবধূদের উপরি রোজগার! সংসার সামলে ছুটছেন মোয়ার দোকানে
আরও দেখুন

ভিড়ে উপচে পড়া নজরুল মঞ্চে যে মানুষটা কিছুক্ষণ আগে গাইছেন, 'বাহো মে, মেরি বাহো মে..', বলছেন জীবনকে, প্রেমকে আলিঙ্গন করে নিতে, সেই মানুষটাই হঠাৎ সমস্ত বাহুডোর ছাড়িয়ে চলে গেলেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে মহড়া দিয়েছেন। সারা ক্ষণ মুখে শুধুই অনুষ্ঠান। নিখুঁত অনুষ্ঠানের সমস্ত ছক সারা ছিল। কিন্তু জীবনের ছকটাই ওলটপালট হয়ে গেল রাত সাড়ে নটায়। চিকিৎসক জানিয়ে দিলেন, মারা গিয়েছেন কেকে! কে? অবিশ্বাসে রাতের খাবারের শেষ গ্রাসটুকু কত যে মুখ থেকে পড়ে গেল, তার ইয়ত্তা নেই। 'আব ক্যাহেনা অর ক্যায়া, যব তুনে কহে দিয়া আলবিদা....'

Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
KK Death: মুছে গেল 'ইয়ারো দোস্তি'র মায়াজাল, 'জব তুনে কহে দিয়া, আলবিদা' কেকে...
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল