অভিষেক মন্ডল কিম্বা কৌশানি কুন্ডুর সারাদিন ছবি, সাহিত্য,সিনেমা নিয়ে ভাবনাতেই দিন কাটে । সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা বা লেখার ভক্ত তাঁরা ছোট থেকেই। তিনি চলচ্চিত্রের রাজার রাজা। তাঁর সৃষ্টি, মননশীলতাকে প্রতিমুহূর্তে ভাবায় শহরের নবীন পরিচালক অভিষেক আর কৌশানিকে। ২রা মে। সত্যজিৎ রায়ের জন্ম শতবর্ষে সকাল বেলা থেকেই কৌশানির মনে হতে থাকে আজ তো সবাই তাঁদের প্রিয় পরিচালক সেলুলয়েডের মহারাজাকে সেলাম জানাচ্ছেন। তাঁরাও কিছু একটা করবেন। নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মধ্যে থেকেই উঠে এল নতুন সৃষ্টির ভাবনা। শুরু করে দিলেন সত্যজিতের জন্মশতবর্ষে তাকে নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরীর কাজ ' শতবর্ষে সত্যজিৎ'।
advertisement
কিন্তু শুধু একদিন কেন, রোজ যদি সত্যজিৎ রায়ের ছবির চরিত্রগুলো জীবন্ত হয়ে উঠত! এই যেমন, একজন উদয়ন মাস্টার যদি সত্যি থাকতেন তবে পৃথিবী আরও সুন্দর হত। আরও চরিত্রের নাম মনের মধ্যে বাসা বাঁধতে থাকে। মনে হয় ভুতের রাজার বর যদি পাওয়া যেত! কৌশানির কাছে ভুতের রাজার সেই বর যেন অভিষেক। কৌশানি মনে করেন, সে শুধু ভাবতে আর শুধু লিখতে পারে তা নয়, কিন্তু সেই লেখাকে ছবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাজিয়ে তুলতেও পারেন অভিষেক। তাই প্রথম ফোনটা ভাই অভিষেককেই করেন কৌশানি। অভিষেক আর কৌশানি এক্ষেত্রে একে অপরের পরিপূরক, ভাবার সাথে সাথে কাজ শুরু করে দেন।
লকডাউনের কারণে ফোনে ফোনে আলোচনাতেই দু ঘন্টারও কিছুটা কম সময়ের মধ্যে সত্যজিৎকে নিয়ে চার মিনিট সতেরো সেকেন্ডের স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি বানিয়ে ফেলেন এই শহরের দুই তরুণ সিনে পাগল । অভিষেক আর কৌশানির কথায়, 'যদি সত্যজিৎ রায়ের দর্শনবোধের অনুপ্রেরণায় প্রতিদিন সবাই পথ চলতে পারেন তবে পৃথিবীটা আরও সুন্দর হবে। ৯৯ বছর পূর্ণ করে শতবর্ষে পদার্পণ করলেন সত্যজিৎ রায়। অভিষেক, কৌশানির ইচ্ছে, সারাবছর ব্যাপী সত্যজিৎ রায়কে উৎসর্গ করে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করার। কিন্তু এই লকডাউনের মধ্যে তার শুরুটা হল বাড়িতে বসেই তথ্যচিত্র বানানোর মধ্য দিয়ে'। ইতিমধ্যেই এই তথ্যচিত্র ইউটিউব ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সত্যজিৎ রায়কে সম্মান জানিয়ে একটি সৃজনশীল কাজ। লেখায়-ছবিতে তাঁদের মনের কথা গুলো জানিয়ে দিলেন অভিষেক-কৌশানি। বললেন ,জন্মদিনের দিনই শুধু নয় , প্রতিটি দিনই আজীবনময় হোক "সত্যজিৎ"।