এই সিনেমার মূল গল্প হল মুম্বইয়ে বসবাসকারী দুই মহিলার জীবন সংগ্রামের। এই ছবির জন্য আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসায় ভাসছেন অনুপর্ণা। ফরাসি পরিচালক জুলিয়া ডুকুরনো নিজ হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুপর্ণার হাতে।
আপনি কি মাইক্রোবায়োলজিতে স্নাতকোত্তর? বিরাট কাজের সুযোগ আইআইটিতে, জানুন!
দাউদাউ জ্বলছে সরকারি বাস! যাত্রীরা যা করলেন… বাগুইহাটির ব্যস্ত রাস্তায় ত্রাস!
advertisement
বিদেশের মাটিতেও ভারতীয় সংস্কৃতিকে ভুলে যাননি তিনি। কারণ তাঁর পরনে ছিল সাদা-লাল শাড়ি। মঞ্চে উঠে, পুরস্কার হাতে আবেগে ভেসেছেন তিনি। সেই মঞ্চ থেকেই তিনি বলেন, এই সম্মান তাঁর ব্যক্তিগত জয় নয়। নিঃশব্দে লড়াই করা সব নারীর সম্মান। সেই সমস্ত মহিলাদের এই পুরস্কার উৎসর্গ করেন তিনি। ভুলে যাননি নিজের মাটিকেও। মঞ্চ থেকে পুরুলিয়া জেলার মানুষদের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন তিনি। সকলের উদ্দেশ্যে তিনি তার পুরস্কার উৎসর্গ করেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার নিতুরিয়া ব্লকের নারায়ণপুর গ্রামের আদি বাড়ি অনুপর্ণার। নিতুরিয়ার রানীপুর কোলিয়ারী হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেছিলেন তিনি। পুঞ্চার নপাড়াগ্রামে তাঁর মামার বাড়ি। মাধ্যমিক পাস করার পর তিনি তাঁর মামার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। নপাড়া হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। তাঁর মামা নিলৎপল সিংহ। তিনি ইংরেজির শিক্ষক। মামার কাছেই ইংরেজি সাহিত্যচর্চা অনুপর্ণার।
এরপর কুলটি গার্লস কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর তিনি দিল্লির একটি কলেজ থেকে মাস কমিউনিকেশন এন্ড জার্নালিজমের উপর ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখান থেকেই তার সিনেমা জগতের প্রতি আগ্রহ। বেশ কিছুদিন দিল্লির একটি সংবাদমাধ্যমে কাজ করার পর তিনি শর্ট ফিল্ম বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর প্রথম শর্ট ফিল্ম ‘রিভার ফর দা রান’ (River for the run)। এই সিনেমাটির শুটিং হয় পুরুলিয়ার নামপাড়াতে।
সেই সময় কলকাতার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এই শর্ট ফিল্মে কাজ করেন। এছাড়াও স্থানীয় এলাকার যুবক-যুবতীরাও এই শর্ট ফিল্মে নিজেদের অভিনয় তুলে ধরেন। সেই সময়ও সেই শর্ট ফিল্ম মানুষের মনে যথেষ্ট দাগ কেটেছিল। পরবর্তীতে অনুপর্ণা দিল্লি থেকে মুম্বইতে শিফট করেন। সেখানেই তাঁর পরিচয় হয় পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে। তার পরই তাঁর এই সাফল্য যা দেশের বিদেশে সর্বত্র সাড়া ফেলে দিয়েছে। পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ ছিলেন অনুপর্ণা ‘সংগস অফ ফরগটেন ট্রিজ’ ছবির প্রেজেন্টার।
এ বিষয়ে অনুপর্ণার মামা নিলোৎপল সিংহ বলেন, তাঁর ভাগ্নির এই সাফল্যে তিনি খুবই গর্বিত। এই সাফল্য শুধুমাত্র অনুপর্ণার সাফল্য নয় এই সাফল্য প্রতিটি মেয়ের যাঁরা প্রতিনিয়ত লড়াই সংগ্রাম করে নিজেদের জীবনে এগিয়ে চলেছেন। তাঁর ভাগ্নি বিদেশের মাটিতেও দাঁড়িয়ে পুরুলিয়ার সংস্কৃতি পুরুলিয়ার শিক্ষা, কোনও কিছুই ভুলে যায়নি তা দেখে তিনি আপ্লুত। আগামিদিনে তাঁর ভাগ্নি যাতে আরও অনেক দূরে এগিয়ে যায় সেই কামনাই করেছেন তিনি।
পুরুলিয়ার ছেলে-মেয়েরা যে, কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই তা আবারও প্রমাণ হয়ে গেল। এই ছবির সাফল্য সমস্ত ভারতবাসীর গর্ব।