TRENDING:

Poila Baisakh || Ambarish Bhattacharya : প্রযুক্তির মাঝে আনন্দ কম পড়েছে, নববর্ষে ওই ছোট 'আমি'টার কথা মনে পড়ে: অম্বরীশ

Last Updated:

পয়লা বৈশাখ এলেই নিজের ছোটবেলার ‘আমি’টাকে দেখতে পাই। পাট ভাঙা নতুন জামার গন্ধ। সেই জামা পরে পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটা ছেলে। হয়তো কখনও কখনও ট্যাগটা ছিঁড়তেও ভুলে যেত সে। তখন তো নতুন জামা বলতে হাতিবাগানের ফুটপাত। সেটাই আমার কাছে তখন বড় বড় শপিং মলের মতো।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
কাজ নিয়ে তিনি বেজায় ব্যস্ত। কিন্তু পয়লা বৈশাখের দিন একরাশ নস্টালজিয়া ঘিরে ধরে তাঁকে। নিউজ18 বাংলার জন্য কলম ধরলেন অভিনেতা অম্বরিশ ভট্টাচার্য। স্মৃতির ঝাঁপি উপুড় করে লিখলেন পয়লা বৈশাখের কথা।
অম্বরিশ ভট্টাচার্য
অম্বরিশ ভট্টাচার্য
advertisement

পয়লা বৈশাখ এলেই নিজের ছোটবেলার ‘আমি’টাকে দেখতে পাই। পাট ভাঙা নতুন জামার গন্ধ। সেই জামা পরে পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটা ছেলে। হয়তো কখনও কখনও ট্যাগটা ছিঁড়তেও ভুলে যেত সে। তখন তো নতুন জামা বলতে হাতিবাগানের ফুটপাত। সেটাই আমার কাছে তখন বড় বড় শপিং মলের মতো। চৈত্র সেলে মায়ের হাত ধরে জামা কাপড় কিনতে যেতাম। জামা কেনার ফাঁকে একটু ফুচকা, এগরোল খাওয়ার মধ্যে ছিল বিরাট আনন্দ। আসলে এগুলো কিন্তু আমাদের ছোটবেলার একটা দারুণ আবিষ্কার। চৈত্র সেলের ওই ভিড়ে মধ্যে ধক্কাধাক্কি করে জামা কাপড় কেনা আর তার মাঝে বিভিন্ন দোকানদারের চিৎকার করে দাম বলার ক্যাকাফোনিটার মধ্যে কোথাও একটা জীবন খুঁজে পেতাম। বছরে পাঁচটা জামা হত। চারটে দুর্গাপুজো আর একটা পয়লা বৈশাখে। সেগুলো মা-বাবাই পছন্দ করে দিতেন।

advertisement

আরও পড়ুন:  '৩ মাসের অপেক্ষার ফল', 'রামপ্রসাদ'-এ অভিনয় নিয়ে অকপট সায়ক, জানালেন কবে শুরু মেগা

ছোটবেলার পয়লা বৈশাখ মানে সকাল থেকেই ছুটির মেজাজ, কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া। তারপর আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যেতাম। দিনভর চলত খাওয়া-দাওয়া। জলখাবার হত লুচি-তরকারি দিয়ে। তারপর দুপুরে ডাল, নানা রকমের ভাজা, হলুদ পোলাও আর ধোঁয়া ওঠা গরম পাঁঠার মাংস। প্রতি পয়লা বৈশাখে দুপুরে বাঙালি খাবারই পাতে পড়ত। তবে মেনুতে কিছু কিছু পরিবর্তন যে একেবারেই থাকত না, তা নয়। কিন্তু বাসন্তী পোলাও আর পাঁঠার মাংসটা কখনও বাদ পড়তে না। বিকেলটা খুব অন্যরকম ভাবে কাটত। তখন নানা জায়গায় গানের অনুষ্ঠান হত। বাবা-মার হাত ধরে রবীন্দ্র সদনে অনেক পয়লা বৈশাখে গান শুনতে যেতাম। মনে পড়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম পয়লা বৈশাখের পড়ন্ত এক বিকেলে।

advertisement

একটু বড় হতে থিয়েটার দেখার চর্চা শুরু। আমি যেখানে থাকতাম, মানে হাতিবাগান তো আবার থিয়েটারের পাড়া। পয়লা বৈশাখে ছুটির দিন হিসেবে সেদিন ডবল শো হত। ‘বিশ্বরূপা’, ‘রংমহল’, এসব শো-গুলো দেখতে যেতাম বাবা-মায়ের সঙ্গে। মনে আছে সেই বার সাড়ে ৬টার শো দেখতে গিয়েছিলাম ‘রঙ্গালয়’-এ সেদিন বিশাল ভিড় ছিল। তখন থিয়েটার দেখার খুব রেওয়াজ ছিল। এখন তো সেসব অতীত। একটু বড় হতে আবার শুরু হল বন্ধুদের সঙ্গে নতুন বাংলা বা হিন্দি ছবি দেখতে যাওয়া।

advertisement

আরও পড়ুন: বাংলা মেগার এই সব অভিনেত্রীরা আসলে একে অপরের বোন! তাঁরা কারা জানেন? দেখে নিন

তারপর আবার সন্ধ্যাবেলা হালখাতা করতে যেতাম। আমাদের এখানে বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে, মুদির দোকানে হালখাতা হত। মিষ্টির প্যাকেট দিত সেই সব জায়গায়। দোকান থেকে কিছু না কিছু কিনলেই একটা বড় মিষ্টির প্যাকেট বরাদ্দ। সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতাম সেই মিষ্টির জন্য। শুধু মিষ্টির প্যাকেট নয়, সেই সময় একটা অদ্ভুত রকমের লাল রঙের শরবত দেওয়া হত। সঙ্গে দেওয়া হত বাংলা ক্যালেন্ডার। সেগুলো জমানোর একটা নেশা ছিল। পরে এই ক্যালেন্ডার অবশ্য খুব একটা কাজে লাগত না। কিন্তু এগুলো জমানোর প্রতি একটা অদ্ভুত ভাললাগা ছিল। আমাদের সময় তো মোবাইল ফোন ছিল না, কার্টুন দেখা বা টেলিভিশনেরও তত চল ছিল না। এইসব উৎসব অনুষ্ঠানগুলোই ছিল জীবনে আনন্দের রসদ। ছোট ছোট মজাগুলোই জীবনে বড় জায়গা জু়ড়ে ছিল।

advertisement

তাই পয়লা বৈশাখে সেই ছোটবেলার ‘আমি’টাকে খুব মিস করি। নতুন জামা পরতে ভাল লাগে না। এখন আমার স্বভাব হয়েছে পুরনো করে পরা। আর পয়লা বৈশাখটাও ঠিক আগের মতো উদযাপন করা হয় না। প্রতিবারই কিছু না কিছু কাজ বা শো থাকে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আজ থিয়েটারের একটা গানের অনুষ্ঠান আছে অ্যাকাডেমিতে দুপুর ৩টে থেকে, সেটাই করব। তাই দুপুরে খাওয়া-দাওয়া ঠিক গুছিয়ে হবে না। তা শো-এর শেষে প্ল্যান আছে বন্ধু-বান্ধবকে নিয়ে কোথাও গিয়ে জমিয়ে বাঙালি খাবার খাব। কাজের জন্য এবার বাড়িতে তেমন কোন প্ল্যান করতে পারিনি।

বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Poila Baisakh || Ambarish Bhattacharya : প্রযুক্তির মাঝে আনন্দ কম পড়েছে, নববর্ষে ওই ছোট 'আমি'টার কথা মনে পড়ে: অম্বরীশ
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল