বিশ্ব চলচ্চিত্র সমালোচকদের আঙিনায় ফের ‘পথের পাঁচালী’-র শ্রেষ্ঠত্ব লাভে অভিভূত বাংলা ছবির সমালোচক তথা দর্শকমহল৷ সত্যজিৎ রায়ের জন্মশবার্ষিকী উদযাপনকে যেন আরও উজ্জ্বল করে তুলল এই স্বীকৃতি৷ কানু বন্দ্যোপাধ্যায়, করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনীবালাদেবী, উমা দাশগুপ্ত, সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত এই ছবি মুক্তির দিন থেকেই বাংলা তথা ভারতীয় ছবির মাইলফলক৷ ইতিমধ্যেই বহু অলঙ্কারে ভূষিত এই ছবির শিরোপায় যোগ হল নতুন কুর্নিশ-রত্ন৷ আজ থেকে ৬৭ বছর আগে বিজ্ঞাপন জগৎ থেকে ছায়াছবির দুনিয়ায় এসে তরুণ তুর্কি সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি পরিচালনা করার পথের বন্ধুরতা নিয়ে অনীক দত্তের ছবি ‘অপরাজিত’ এ বছরই ভূয়সী প্রশংসিত হয়েছে দর্শকের দরবারে৷
advertisement
আরও পড়ুন : টেট আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশি অভিযানের তীব্র নিন্দা, সুবিচার চান সৃজিত
নিশ্চিন্দিপুরের অপু-দুর্গার জ্যোৎস্নামাখা অশ্রুযাপন থেকে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ফ্রেমবন্দি হয়ে আছে দেশভাগ পরবর্তী উদ্বাস্তু-ক্ষত৷ যা অনুরণিত হয়েছিল ‘নীতার’ কণ্ঠে, ‘দাদা, আমি বাঁচতে চাই’৷ ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ নিছক ছবি নয়, জীবনযুদ্ধের রক্তাক্ত দলিল৷ তৃতীয় স্থানের শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা পাওয়া মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ আবার সময় পরিবর্তনের ক্যালাইডোস্কোপ, যা ধরা পড়ে কেন্দ্রীয় চরিত্রের চোখে৷ বনফুলের উপন্যাসের মূল চরিত্র প্রৌঢ় ভুবন সোম নতুন আঙ্গিকে ধরা দেন মৃণাল সেনের পরিচালনায়, উৎপল দত্তের অভিনয়ে৷ এই স্বীকৃতি আরও এক বার প্রমাণ করল, যত দিন ভারতীয় চলচ্চিত্র থাকবে, তত দিন একই বন্ধনীতে উচ্চারিত হবেন সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল৷
আরও পড়ুন : মেট্রো স্টেশনে প্রসেনজিতের নাচ দেখতে অশান্ত ভিড়! মাইক হাতে সামাল দিলেন নায়ক
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফিল্ম ক্রিটিকস প্রকাশিত এই তালিকার চতুর্থ শ্রেষ্ঠ ছবি হল আদুর গোপালকৃষ্ণন পরিচালিত মালয়লম ছবি ‘এলিপ্পাথায়াম’৷ গিরীশ কাসারাবল্লীর ছবি ‘ঘাটশ্রাদ্ধ’ রয়েছে পঞ্চম স্থানে৷ ষষ্ঠ সেরা ছবি হিসেবে আছে এম সথ্যুর ‘গরম হাওয়া’৷ সপ্তমে ফের সত্যজিৎ, এ স্থানে আছে তাঁর আর এক অমর সৃষ্টি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নষ্টনীড়’ অবলম্বনে ‘চারুলতা’৷ শ্যাম বেনেগালের ‘অঙ্কুর’ এবং গুরু দত্তের ছবি ‘প্যায়সা’ আছে তালিকার যথাক্রমে অষ্টম ও নবম স্থানে৷ দশম স্থানে তালিকা শেষ হয়েছে অবশ্য অমিতাভ-হেমা-ধর্মেন্দ্র-জয়া-আমজাদ-সঞ্জীবকুমারের আইকনিক ‘শোলে’ দিয়ে৷