দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকে দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় চলে আসেন তিনি ছোটবেলাতেই। সঙ্গীতচর্চা চলতে থাকে। কে জানত বাংলার শ্রোতাকে আধুনিক গানের সঙ্গে আত্মিক পরিচয় করাবেন এই নির্মলা, স্বর্ণযুগের অন্যতম জনপ্রিয় গায়িকার তকমা পাবেন তিনি। নির্মলার স্বামী প্রদীপ দাশগুপ্তও ছিলেন এক জন শিল্পী ও গীতিকার।
১৯৬০ সালে সঙ্গীত পরিচালক বালকৃষ্ণ দাস তাঁকে ‘শ্রী লোকনাথ’ ছবির গানে কণ্ঠ দেওয়ার সুযোগ দেন। ওই শুরু। এর পরে বহু ছবির জন্য প্লেব্যাক করেছেন তিনি। কয়েকটি গান, 'তুমি আকাশ এখন যদি', 'আমি হারিয়ে ফেলেছি গানের সাথীরে', 'রিমিঝিমি রিমিঝিমি', 'আবিরে রাঙালো কে আমায়', 'চোখের মণি হারিয়ে খুঁজি'।
advertisement
কিন্তু নির্মলার সঙ্গে দু'টি প্রজন্মের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে পুজোর। দেবীর সঙ্গে আগমন হত গায়িকার। পুজোয় তাঁর নতুন অ্যালবাম বেরোত। পুজোর প্যান্ডেলে বাজত 'এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না'-র মতো জনপ্রিয় গান। যদিও ১৯৭৬ সালে উত্তরকুমারের সঙ্গে নব-রূপে তৈরি মহালয়ার প্রভাতী অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নিলেও তা মানুষের মনে জায়গা পায়নি। তাই পরের বার থেকে আবার পুরনো মহালয়াতেই ফিরে গিয়েছিলেন সকলে।
আরও পড়ুন: প্রয়াত নির্মলা মিশ্র, বাংলা সঙ্গীত জগতে ফের নক্ষত্র পতন
আরও পড়ুন: নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, আজ কেওড়াতলায় শেষকৃত্য
নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে শোকবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি গভীর রাতে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কণ্ঠের জাদুতে তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। তাঁর গাওয়া এই বাংলার মাটিতে, এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না, ও তোতা পাখি রে-র মতো অজস্র কালজয়ী গান আজও শ্রোতাদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। আধুনিক, নজরুলগীতি, শ্যামাসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক, লোকগীতি ছাড়াও বহু ছায়াছবিতে তিনি গান গেয়েছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমির উপদেষ্টা পরিষদ ও বাংলা সঙ্গীতমেলা কমিটির কার্যকরী সমিতির সদস্যা ছিলেন।