আদালত নিজের রায়ে জানিয়েছে যে, প্রাথমিক ভাবে অপরাধে অভিযুক্তের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আর তাই এই প্রাথমিক পর্যায়ে অভিযোগ বাতিলের কোনও ভিত্তি নেই। মামলাটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ২২৮এ ধারা লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পর্কিত। যেখানে ধর্ষণের শিকার কোনও নারীর পরিচয় প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
advertisement
পূজা বেদী, অভিনেত্রী অন্বেষি জৈন, চৈতন্য ভোঁসলে, বরকয় পাটানি, গুরবানি ওবেরয়, শেরিন ভারগিজ, অভিনেতা সুধাংশু পাণ্ডে এবং আইনজীবী দীনেশ তিওয়ারির বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছিল অন্ধেরির মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। অভিযোগকারিণীর অভিযোগ, করণ ওবেরয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করার ঠিক পরেই ওই দলটি পূজা বেদীর বাসভবনে একটি সংবাদ সম্মেলন করে। আর সেখানেই নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ করা হয়। যার জেরে তিনি অন্ধেরির মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের দ্বারস্থ হন। ২০১৯ সালের জুন মাসে তাঁদের বিরুদ্ধে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রথমেই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পুলিশকে অভিযোগকারিণীর আনা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার এবং একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে যে, ২০১৯ সালের ৫ মে পূজা বেদীর বাসভবনে সাংবাদিত সম্মেলন করে ওই দলটি। সেখানেই অভিযোগকারিণীর পরিচয় তথা তাঁর নাম এবং অন্যান্য সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়। আর এটি এমন একটি কাজ, যা যৌন নির্যাতনের শিকার নারীর জন্য প্রদত্ত আইনি সুরক্ষা লঙ্ঘন করেছে।
আরও পড়ুন- দ্বিতীয়বার স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত তাহিরা, মারণ রোগের খবর শুনে যা বললেন স্বামী আয়ুষ্মান…
পুলিশ আরও জানিয়েছে যে, সাংবাদিক সম্মেলনের ভিডিওটি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হয়েছিল এবং অনলাইনে এখনও সেটি পাওয়া যাবে। তদন্তে পাওয়া এই সমস্ত দিকের কথা শুনে ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ওই গ্রুপটির বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অভিযুক্ত দলটির সদস্যরা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে, অভিযোগে নাম উল্লেখ করা সকল ব্যক্তি সরাসরি ভাবে অভিযোগকারীর পরিচয় প্রকাশ করেননি। আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, তাঁরা সংবাদ সম্মেলনের সময় নির্য়াতিতার নাম উল্লেখ করেননি কিংবা ব্যক্তিগত ভাবে শনাক্তকরণ সংক্রান্ত কোনও তথ্য ভাগ করে নেননি।
সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে দায়রা আদালত জানিয়েছে যে, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত এক বা একাধিক ব্যক্তিও যদি নির্যাতিতার নাম নেন, তবুও অভিযোগকারিণীর অভিযোগ অনুযায়ী, আবেদনকারীদের মধ্যে অপরাধ সংঘটনের অভিন্ন উদ্দেশ্যের জন্য সকলকেই দায়ী করা হবে।