সুজিত সরকারের ‘গুলাবো সিতাবো’ বলিউডের এমন প্রথম বিগস্টার ছবি যা অ্যামাজনের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রিমিয়ার হলো ৷ করোনার প্রকোপের মাঝে, লকডাউনের কারণে, মূলত বাধ্য হয়েই ছবির টিমের সিদ্ধান্তে এই মুক্তি পাওয়া ৷ হ্যাঁ, বড় পর্দায় এই ছবি না দেখার অভিজ্ঞতা সত্যিই বড় মিস ৷ কারণ, সিনেম্যাটোগ্রাফার অভিক মুখোপাধ্যায়ের ক্যামেরায় লখনউ, সত্যিই ম্যাজিক্যাল ! তবে মোবাইল বন্দি হয়েও এই ছবি থেকে প্রাপ্তি প্রচুর ৷
advertisement
ছবি শুরু হয়, মির্জার টাকা রোজগারের জন্য বাড়ির থেকে খুলে নেওয়া বাল্ব, সাইকেলের ঘণ্টা সস্তায় দোকানে বিক্রি করার দৃশ্য থেকে ৷ আর তারপরেই গল্প বহু সংলাপের মধ্যে দিয়ে এগোতে থাকে বাড়ির ভাড়াটে তাড়ানো, মির্জার বাড়ির মালিক হওয়ার শত চেষ্টার মধ্যে দিয়ে ৷ তবে এই চেষ্টা চলে দুই উপায়ে ৷ ভাঙা বাড়ির নিচে আসলে সুজিত সরকার দুটো গল্পকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেন ৷ একদিকে বাঁকে রস্তোগি অর্থাৎ আয়ুষ্মানের অস্তিত্বের সংকট, আরেক দিকে বুড়ো মির্জার ‘লোভ’ ! এই দুটো গল্পকে আকার দেওয়ার জন্যই সুজিত গল্পে নিয়ে আসেন আর্কিওলজিস্ট ও আইনজীবীর চরিত্র ৷ প্রথমে মির্জা ও বাঁকের গল্পে সংঘাত লাগলেও ৷ পরে দুটো গল্প যেন এক লাইনেই এসে দাঁড়ায় ৷
এখান থেকেই সুজিত সরকারের ‘গুলাবো সিতাবো’ অন্যদিকে ঘুরতে থাকে ৷ বাড়িকে সামনে রেখে অস্তিত্বের গল্প হঠাৎই হয়ে ওঠে এক ভালোবাসা না পাওয়ার গল্প ৷ এক প্রিয়জন হারানো গল্প ৷ বাড়ির সঙ্গে এক মালিকের, প্রেমিকের সঙ্গে এক প্রেমিকার ৷ লাভ স্টোরির নিয়ম মেনে এই গল্পে, বিচ্ছেদ, বিরোহ সবই একে একে জায়গা করে নেয় ছবিতে ৷ তবে তা ঘটে একেবারে ছবির শেষভাগে এসে ! এখানেই সুজিত সরকারের ‘গুলাবো সিতাবো’ হয়ে ওঠে এক ম্যাজিক্যাল ছবি !
সুজিত সরকারের এই ছবি চিত্রনাট্যকার জুহি চতুবর্দীর লেখা অসাধারণ চিত্রনাট্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রত্যেকটি অভিনেতাদের দুরন্ত অভিনয়ের ওপরই ভর করে এগিয়ে চলে ৷ মির্জা চরিত্রে অমিতাভ বচ্চনকে গোটা ছবিতে একেবারে হতবাক হয়ে দেখতে হয় ৷ বরং আয়ুষ্মান এই ছবিতে পেয়েছেন কম সুযোগ ৷ বিজয় রাজ, বিজেন্দ্র কালা, সৃষ্টি শ্রীবাস্তব, ফারুখ জাফর অনবদ্য৷
‘গুলাবো সিতাবো’ ছবির গতি প্রথম দিকে স্লথ হলেও, দ্বিতীয়ভাগে ছবির গতি সামলে নেন সুজিত ৷ এই ছবির শেষ ১৫ মিনিটেই আসল গল্প বলে যান তিনি ৷ যেখানে ভালোবাসা, লোভ, অস্তিত্বের সংকটকে টেনে নিয়ে এসে পাশাপাশি বসিয়ে দেন সুজিত ৷ ঠিক যেমন ছবির দুটি চরিত্র মির্জা আর বাঁকে রস্তোগি ৷ অমিতাভ বচ্চন এবং আয়ুষ্মান খুরানা ৷