কালনার যুবক টিঙ্কু রায় হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করে দুবাইয়ে চাকরি করতে গিয়েছিলেন ২০১১ সালে৷ সেখানে বছর দু’য়েক চাকরি করার পর আর মন সায় দেয়নি৷ আকৃষ্ট হন যোগাভ্যাসে৷ দেখেন, মরুশহরে যাঁরা যোগচর্চা শেখাচ্ছেন, তাঁরা শ্বেতাঙ্গ৷ টিঙ্কুর মনে হয়, বিদেশিরা যদি যোগচর্চায় এত আগ্রহী হন, তাহলে তাঁরও ভারতীয় হিসেবে যোগাভ্যাস করা উচিত৷ কারণ যোগচর্চার আদি পীঠস্থান প্রাচীন ভারত৷
advertisement
দুবাইয়ের চাকরি ছেড়ে দিয়ে কালনা ফিরে আসেন টিঙ্কু৷ যোগচর্চা নিয়ে পড়াশোনা করে নিজেই প্রশিক্ষক হয়ে যান৷ হৃষিকেশে যোগাভ্যাস প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে আলাপ ক্যাথরিনের সঙ্গে৷ কানাডা থেকে যোগচর্চা করতে ভারতে এসেছিলেন ক্যাথরিন৷ তাঁর কণ্ঠে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রপাঠ শুনে মুগ্ধ হয়ে যান টিঙ্কু৷ ছাত্রীকে প্রশ্নই করে ফেলেন ‘তোমার কি কোনও ভারতীয় প্রেমিক আছে?’ তখন ভাবতেও পারেননি তিনি নিজেই একদিন সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন৷
হিমালয়ের কোলে হৃষিকেশে যোগচর্চা শেখাতে এবং শিখতে শিখতেই টিঙ্কু ও ক্যাথরিনের আলাপ পরিণত হয় প্রেমে৷ পরবর্তীতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন এই জুটি৷ ক্যাথরিনের পরিবারে প্রথম থেকেই সব কিছু জানতেন সবাই৷ তাঁরা মেয়ের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সব মেনে নিয়েছেন৷ সেরকম সমস্যা হয়নি টিঙ্কুর বাড়িতেও৷ মনের দ্বিধা সংশয় ঝেড়ে ফেলে বিদেশিনীকে বধূ হিসেবে বরণ করেছে কালনার রায় পরিবার৷
আরও পড়ুন : উপকারে ঠাসা হলেও আমলকি খাবেন না এঁরা! জানুন কারা এই সবুজ ফল খেলেই শরীর ফুটিফাটা হবে
শ্বশুরবাড়িতে বেজায় খুশি ক্যাথরিনও৷ বাঙালি বধূদের মতো শাড়ি-গয়না-সিঁদুরে সাজতে খুব ভালবাসেন তিনি৷ চেষ্টা করছেন নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার৷ বাংলা বুঝতে পারেন৷ বলতেও পারেন ভাঙা ভাঙা, অল্প স্বল্প৷ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের পেয়ে তিনি মুগ্ধ এবং অভিভূত৷ ফোন, ভিডিও কলে নিয়মিত যোগাযোগ আছে কানাডাবাসী বাবা মা ও অন্যান্য পরিজনদের সঙ্গেও৷ রিয়্যালিটি শো-এর মঞ্চে একসঙ্গে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করে তাক লাগিয়ে দেন এই দম্পতি৷
