ডাক্তারের এই সতর্কবার্তা শোনার পরেও তাঁরা অপেক্ষা করেছিলেন, ভেবেছিলেন বাবা সুস্থ হয়ে ফিরবেন৷ চঞ্চল লিখছেন, ‘‘তারপর থেকে আমরা শুধু অপেক্ষা আর চেষ্টা করেছি বাবাকে ফিরিয়ে আনতে। বাবা প্রায় ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে হেরে গেলেন। ডাক্তারদের হিসেব মতো যে কোন সময় চলে যাওয়ার কথা বললেও, বাবা ১৫ দিন লাইফ সাপোর্টে বেঁচে ছিলেন। সন্তান বা আত্মীয় পরিজন হিসেবে চোখের সামনে এই কষ্ট দেখা যায় না। একটা সময় প্রার্থনা করেছি বাবার জ্ঞান ফিরে আসুক, সুস্থ্ হয়ে যাক, বিনিময়ে আমরা সব কিছু করতে প্রস্তুত।’
advertisement
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারের কোদালবস্তির সিসি লাইন খুলে গেল পর্যটকদের জন্য
আরও পড়ুন: কাপড়ের ট্রাঙ্ক থেকে বেরল মহিলার পচাগলা দেহ, ঘনাচ্ছে রহস্য
আবেগমথিত চঞ্চল লিখেছেন, ‘ঠিক সেই আমরাই শেষের দিকে এসে, বাবার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে প্রার্থনা করেছি, বিশ্বাস করেছি, একমাত্র মৃত্যুই বাবাকে এই অসহ্য যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ভাবনা আর বিশ্বাসের এই বৈপরীত্য আমি এখনও মানতে পারিনি। আমরা-সহ বাবার ভালবাসার মানুষগুলো প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৯০২ নং কেবিনে বসে থাকতাম বাবার জন্য। এত ভিড়…বসার জায়গা হত না…. তারপরেও কেউ সেখান থেকে আসতে চাইতো না। বাবার কারনেই কেবিনটা মিলন মেলায় পরিনত হয়েছিল। আমরা আট ভাইবোন-সহ পরিবারের সবাই কখনও এতদিন একসঙ্গে থাকিনি। কত আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে যে দেখা হয়েছে কতদিন পরে,শুধু মাত্র বাবার কারনেই৷’
এর পরেই পিতৃবিগোয়ের সেই শোকগাথা রচনা করেছেন তিনি৷ লিখেছেন, ‘২৭ ডিসেম্বর সকাল থেকেই আমরা বুঝতে পারছিলাম ,বাবাকে আর ধরে রাখতে পারব না।
ঠিক রাত ৮ টার দিকে ডিউটি ডক্টর কেবিনে ফোন করে জানালেন,বাবার হার্ট বিট একদম নেমে যাচ্ছে….সঙ্গে সঙ্গে আমরা দৌড়ে গেলাম আইসিইউ-তে। সত্যিই……বাবার শরীরটা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। না ফেরার দেশে চলে গেল আমাদের বাবা। ১২ ডিসেম্বর অচেতন অবস্থায় ভর্তি হয়ে, ২৭ ডিসেম্বর ঐ অবস্থাতেই বাবা চির বিদায় নিলেন।’