মুম্বইয়ের কার্টার রোডের উপর দাঁড়িয়ে এই বিখ্যাত বাংলো। শোনা যায় বাংলোটি আসলে ছিল এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারের। বাংলোর আসল নাম কি ছিল তা জানা যায় না। তবে এই বাংলোর মালিক একসময় ছিলেন সুপারস্টার রাজেশ খান্না।
advertisement
বলিউড তারকাদের মধ্যে প্রথম এই বাংলোটি কেনেন ভরত ভূষণ। ১৯৫০ সাল নাগাদ এই বাংলো বাড়ির মালিকানা তাঁর কাছে যায়। বাড়ি কেনার সময় তাঁর কেরিয়ার ছিল শীর্ষে। ‘বৈজু বাওরা’, ‘মির্জা গালিব’, ‘গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া’ এবং ‘বরসাত কি রাত’-এর মতো হিট ছবি দিয়ে তিনি তখন প্রচুর টাকার মালিক।
কিন্তু এর কিছুদিন পর থেকেই ভরত ভূষণের একের পর এক ছবি ফ্লপ হতে শুরু করে। একসময় দেনার দায়ে তাঁকে বাড়ি বিক্রি করে দিতে হয়। সেই প্রথম এই বাড়ি নিয়ে নেতিবাচক গল্পের শুরু।
৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে বাংলোটির জরাজীর্ণ অবস্থা ছিল। তখন উঠতি তারকা রাজেন্দ্র কুমার এটি মাত্র ৬০,০০০ টাকায় কিনতে পেরেছিলেন। তিনি তার মেয়ের নামে বাংলোটির নাম রাখেন ডিম্পল। ডিম্পলে থাকাকালীন রাজেন্দ্র কুমার একের পর এক হিট ছবি পেতে থাকেন এবং তিনি জুবিলি কুমার নামে পরিচিত হন।
১৯৬৮ সালের দিকে রাজেন্দ্র কুমারের ভাগ্যে নেমে আসে বিপর্যয়। কুমারের চলচ্চিত্রগুলি ব্যর্থ হতে শুরু করে। তার প্রোডাকশন হাউসও ব্যর্থ হয় এবং তিনি গুরুতর আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হন। পরে লোকসান পুষিয়ে নিতে বাংলো বিক্রি করতে বাধ্য হন তিনি।
এরপর এই বাড়ির মালিক হন সেসময়ের নতুন সুপারস্টার রাজেশ খান্না। তার বয়স ৩০ হওয়ার আগেই, তিনি ইন্ডাস্ট্রির এক নম্বর অভিনেতা হয়ে ওঠেন। তিনি বাংলোটির নাম দেন আশির্বাদ। অমিতাভের ‘জলসা’ এবং শাহরুখের ‘মন্নত’-এর মতোই এই বাড়িটি মুম্বইতে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
কিন্তু ১৯৭৪ সাল নাগাদ, রাজেশ খান্নার চলচ্চিত্র ব্যর্থ হতে শুরু করে। তিনি তার সুপারস্টারের তকমা হারান। খ্যাতি হারানোর পরে, তাঁর বিয়েও ভেঙে যায়। কর্মজীবনের শেষের দিকে, রাজেশ খান্না বাংলোতে একা থাকতেন যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
২০১৪ সালে, সেই বাংলোটি ৯০ কোটি টাকায় একজন শিল্পপতির কাছে বিক্রি হয়েছিল। ফেব্রুয়ারী ২০১৬ সালে, নতুন মালিক এই আইকনিক বাংলোটি ভেঙে ফেলেন। এর মধ্য দিয়েই শেষ হল সেই বাড়ির যাত্রা, যেটি একসময় ছিল তিন বলিউড তারকার বাড়ি।
যারা বাস্তু এবং ফেং শুইতে বিশ্বাসী তারা বলেন যে যেভাবে একটি বাড়ি তৈরি করা হয় তা একজনের ভাগ্য নির্ধারণে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে যদি এটি ভুল হয়ে যায় তাহলে বাড়ির মালিকের জন্য দুর্ভাগ্য ডেকে আনে। মুম্বইয়ের এই বাংলোটিকেও এমন ভাবেই বাস্তু দোষে দোষী ভাবেন অনেকে। যদিও এর কোনও প্রমাণ নেই।