সঙ্গীত এখন অনেকটাই টেকনোলজির ওপর নির্ভরশীল ৷ তা প্রচারের ক্ষেত্রে হোক, কিংবা সঙ্গীত তৈরির ক্ষেত্রে হোক ৷ এই সময়ে দাঁড়িয়ে বিশ্ব সঙ্গীত দিবস সম্পর্কে আপনার মত ?
অনিন্দ্য বোস: প্রথমত বলব, একজন শিল্পীর কাছে আলাদা করে কোনও সঙ্গীত দিবস থাকতে পারে না ৷ কারণ, একজন শিল্পীর রোজ সকালটা শুরু হয় সঙ্গীত দিয়ে, আর রাতটাও শেষ হয় সঙ্গীত দিয়ে ৷ তাই আমার কাছে রোজই সঙ্গীত দিবস ৷ আর টেকনোলজি ব্যাপারটা খুব ভালো বিষয় ৷ এর ভালো ও খারাপ দিক দু’ই রয়েছে ৷ তবে যেহেতু গান, সঙ্গীত নিয়ে কথা হচ্ছে, তাই সঙ্গীতের জন্য টেকনোলজি ব্যাপারটা খুবই ক্ষতিকারক ৷ আজ বাঁশি বাজাতে হলে, বাঁশির দরকার পড়ছে না ৷ পিয়নোর সুর দরকার হলে, পিয়ানোর দরকার পড়ছে না ৷ সবই হয়ে যাচ্ছে কিবোর্ডের মধ্যে দিয়ে ৷ গায়কের গলাও টিউন করে দেওয়া হচ্ছে টেকনোলজির সাহায্যে ৷
advertisement
আমার মনে হয়, সমস্যাটা শুধুই টেকনোলজি নয়, আমার মনে হয় আজকের গান নিজস্বতা হারিয়েছে, ‘সোললেস’ গান তৈরি হচ্ছে ৷ তাই আজকের তৈরি গান ‘টাইমলেস’ হচ্ছে না ৷ একেবারে চানাচুরের মতো হয়ে হয়ে গিয়েছে ৷ এক মিনিটে সব স্বাদ শেষ !
বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে দাঁড়িয়ে একটাই কথা বার বার বলতে চাই ৷ গান চাই, যা মন ছুঁয়ে যাবে ৷ আমারও দায়িত্ব রয়েছে এরকম গান তৈরি করার ৷ শুধু অন্যকে দোষ দিয়ে লাভ নেই ৷ কিন্তু পরের মুহূর্তে ভাবি, কী হবে এম্ন এক গান বানিয়ে, যা টরেন্ট, ইউটিউবের জন্য বিনা পয়সা, বিনা সম্মান ছাড়া, সবার মোবাইল ফোনে ঢুকে হাতের মুঠোয় চলে যাবে ! তবে এই সমস্যা অনেক বড় ৷ অল্প কথায় হবে না ৷ তাই ছোট্ট করে বলি, বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে আমি খুঁজছি গানের নিজস্বতা ৷ বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে আমার অভিমান বাংলা গানের পুরনো দিন হারিয়ে গেল ৷ আমার আবদার, প্লিজ লাইভ মিউজিক আবার ফিরিয়ে আনা হোক !