শুক্রবার শুনানিতে বিচারক সিবিএফসি-র ভূমিকার ওপর প্রশ্ন তুলে জানাল, ‘সেন্সর বোর্ডের কাজ তো সার্টিফিকেট দেওয়া ৷ কোন দৃশ্য বাতিল হবে তা নয় ৷’ এদিন হাইকোর্ট আরও বলে, ‘ব্যক্তিগত পছন্দ নিয়ে কেন আপত্তি তুলছে সিবিএফসি ? টিভি হোক বা সিনেমা মানুষকে দেখতে দিন ৷ মাল্টিপ্লেক্সের দর্শক অনেক বুদ্ধিদীপ্ত ৷ তাঁদের ভাবনা-চিন্তার ক্ষমতা রয়েছে ৷ ’
advertisement
সিবিএফসি চেয়ারম্যান পহেলাজ নিহালনি ও ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবির টিমের এই বচসাকে অকারণে ছবির পাবলিসিটি হিসেবেই মন্তব্য করেছে মুম্বই হাইকোর্ট ৷ শুক্রবার শুনানিতে মুম্বই হাইকোর্ট মন্তব্য করে ‘এই ধরণের বচসা, আলোচনা, শুধুমাত্র ছবিকে পাবলিসিটি দিচ্ছে ৷ ’
শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ থেকে মুম্বই হাইকোর্টে শুরু ‘উড়তা পঞ্জাব’ নিয়ে শুনানি ৷ যেখানে একের পর এক যুক্তি টেনে আনেন ‘উড়তা পঞ্জাব’ টিম ও সিবিএফসি-র আইনজীবী ৷ ছবির পরিচালকের আইনজীবীর তরফ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, এর আগেও গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর, দিল্লি বেলির মতো ছবি ছাড়পত্র পেয়েছে ৷ অন্যদিকে সিবিএফসি-র আইনজীবী হাইকোর্টকে জানান, ছবিতে ব্যবহার হওয়া বেশ কিছু সংলাপ গ্রহণযোগ্য নয় ৷ বিশেষ করে ‘খঞ্জর’ শব্দটি নিয়েই আপত্তি তুলেছে সিবিএফসি ৷
মুম্বই হাইকোর্ট ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর কাট সম্পর্কীত সিবিএফসি-র আপত্তিকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছেন ৷ তবে ছবি থেকে ‘খঞ্জর’ ছবিটি ব্যবহারকে বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ছবির একটি দৃশ্য শাহিদ কাপুরের মুত্রত্যাগ বাতিল করারও ৷
‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবির বিতর্ক মূলত শুরু হয় ছবির নামে ‘পঞ্জাব’ শব্দটি ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে ৷ আপত্তি ওঠে ছবির গল্পের প্রেক্ষাপট পঞ্জাব ও মাদক আসক্তি নিয়েও ৷ এমনকী, সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান পহেলাজ নিহালনি ছবির বেশ কিছু সংলাপে, দৃশ্যে পঞ্জাবস রাজনীতি ব্যবহার করাতেও আপত্তি জানিয়েছেন ৷ ছবির কয়েকটি গানের কথা নিয়েই আপত্তি তুলেছেন নিহালনি ৷
বুধবার এই বিতর্ক ঘিরে এক বিশেষ সাংবাদিক বৈঠক আয়োজন করে বলিউডের তাবড়রা ৷ সাংবাদিক বৈঠকে সেন্সর বোর্ডের আচরণকে সমালোচনা করে পরিচালক মহেশ ভাট বলে, ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবিতে আমি পরিচালকের কাজের প্রশংসা করছি ৷ সেন্সর বোর্ডের অরাজকতা চলতে পারে না৷’
‘উড়তা পঞ্জাব’ ইস্যু নিয়ে এখন একজোট বলিউড ৷ বুধবারের বৈঠকে পরিচালক জোয়া আখতার বলেন, ‘সেন্সর বোর্ড স্কুল প্রিন্সিপালের মত করছে ৷ যতই বাধা আসুক সিনেমা মুক্তি পাবেই ৷ ইন্টারনেটেও দর্শক দেখতে পাবে ৷ ’
শাহিদের এই ছবি নিয়ে বিতর্ক ওঠে ছবির নামে ‘পঞ্জাব’ ব্যবহার করাতেই ৷ ছবির গল্প পঞ্জাবে নেশা ও মাদকের ব্যবহার নিয়ে, পঞ্জাবের ইয়ং জেনারেশনে মাদকাসক্তি নিয়ে ৷ পরিচালক ও প্রযোজকের কথায়, ‘উড়তা পঞ্জাব’ থেকে পঞ্জাব সরিয়ে নিলে বিষয়টিই স্পষ্ট হবে না ৷ অন্যদিকে সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান পহেলাজ নিহালনি আপত্তি তুলেছে এই ‘পঞ্জাব’ শব্দ নিয়েই ৷ শুধু তাই নয়, পহেলাজ নিহালনি ‘ঘুষ’ খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন অনুরাগের বিরুদ্ধে ৷
বুধবার বৈঠকে অনুরাগ কাশ্যপ জানিয়েছেন, ‘বিভিন্ন ধরণের সিনেমা তৈরি হচ্ছে ৷ তিনি একা দেশের নীতিবোধ তৈরি করতে পারেন না ৷ আমি শেষ পর্যন্ত লড়ব ৷ দর্শকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা অপরাধ ৷ একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন নিহালনি ৷ সেন্সর বোর্ডের অরাজকতা কয়েক বছর ধরে চলছে ৷ আমি অনেকদিন ধরে এর প্রতিবাদ করছি ৷ এই সিনেমা নিয়ে অযথা রাজনীতি হচ্ছে ৷ আমি বাস্তব ঘটনা নিয়ে সিনেমা করি ৷ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সিনেমা আজ পর্যন্ত করিনি ৷ সাধারণের জন্য সিনেমা করি ৷ আমি এভাবে সাংবাদিক বৈঠকে বসব ভাবিনি ৷ আমি রাজনীতি করি না, সিনেমা তৈরি করি ৷ ’