আরও পড়ুন সুদীপা চট্টোপাধ্যায় অহংকারী মানসিকতার! ফেসবুক পোস্ট বিতর্কে অভিযোগ অরিত্র
১১ অগাস্ট ছিল প্রদীপবাবুর জন্মদিন৷ দত্তার সেটে কেক কেটে পালন করা হয়েছিল৷ তাঁকে না জানিয়েই সব ব্যবস্থা করা হয়৷ শ্যুটিং-এর প্যাক আপের পর সকলে একসঙ্গে হয়ে কেটেছিলেন কেক৷ খুব খুশি হয়েছিলেন প্রদীপবাবু৷ সেদিনের ভিডিও পোস্ট করেছেন তাঁর শেষ ছবির পরিচালক নির্মল চক্রবর্তী৷ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নির্মলদা জানান, "উনি ২ বছর থেকে অসুস্থ, ২০২০ থেকেই কাজ কম করছিলেন৷ এই ছবির চরিত্রটা পছন্দ হয়েছিল৷ বারবার আমায় বলতেন কাজ ফেলে রেখো না, তাড়াতাড়ি করে ফেলো৷ সেভাবেই শেষ ৫-৬টি দৃশ্য ৪দিনে শ্যুট করেছিলাম৷ অসুস্থতা নিয়ে কাজ করেছেন৷ কমিটমেন্টের জন্যই কাজটা করেছিলেন তিনি৷ তিনি নিজেও খুব চেয়েছিলেন দত্তা ছবির কাজটা শেষ করতে৷ মূলত লাঞ্চ ব্রেকের পরই থাকত তাঁর দৃশ্যগুলো৷ তাঁর বাড়ি ছিল পাইকপাড়া, আর আমাদের শ্যুট হত বেলগাছিয়া রাজবাড়ি৷ খুব বেশি দূর ছিল না৷ অত্যন্ত বড় মাপের অভিনেতা, অসম্ভব সুন্দর কণ্ঠস্বরের অধিকারী ছিলেন৷ দত্তা ছবিতে আচার্যের চরিত্রে অভিনয়ে করেছেন তিনি৷ ১৩ তারিখেই শেষ হয়েছে ছবির শ্যুটিং৷ তবে এবার ডাবিং-এ তিনি নেই, চেষ্টা করব যতটা সম্ভব সিঙ্ক সাউন্ড থেকে স্বর বার করার৷ বাকিটা দেখা যাক৷ প্রদীপবাবুর কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ৷ আমার মতো নতুন পরিচালকের সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন এবং বারবার আমায় জিজ্ঞাসা করতেন কীভাবে শট দেবেন৷ তাঁর মতো মানুষের তুলনা হবে না"৷ বলেই গলা ধরে এলো নির্মলদার৷
advertisement
দত্তার ছবি অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন৷ "তাঁর থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল"৷ বলছেন ঋতুপর্ণা৷ "প্রদীপদার সঙ্গে অনেকগুলি ছবি করেছি৷ শেষ তিনটি ছবি পার্সল, ছুটি, দত্তা-তেও আমার সঙ্গে ছিলেন প্রদীপদা৷ খুবই আন্তরিক ব্যবহার ছিল৷ এত অসুস্থ হয়েও তিনি কাজ শেষ করে গিয়েছে৷ শারীরিক কষ্ট উপেক্ষা করেও অভিনয় করেছেন৷ কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা কী, সেটা তাঁর থেকে শেখা উচিৎ৷ অনেক গল্প শুনেছি প্রদীপদার থেকে৷ অনেক ভাল স্মৃতি রয়েছে ওঁর সঙ্গে"৷ জানিয়েছেন ঋতুপর্ণা৷
১৯৭৬ সালে সত্যজিৎ রায়ের 'জন অরণ্য'তে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন অভিনেতা। তার পর বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর 'দূরত্ব' বা ঋতুপর্ণা ঘোষের 'উৎসব'-এর তাঁর অভিনয় বিশেষ ভাবে নজরে এসেছিল। জীবনের শেষ দিন পর্যনত অভিনয় করেছেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।