এই হল রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘আবার প্রলয়’-এর শুরু! ১১ অগাস্ট এই সিরিজ মুক্তি পেয়েছে জি ফাইভে! গল্প থেকে পরিচালনা সবটাই রাজ চক্রবর্তীর! আর গল্পের প্রধান বিষয় হল সুন্দরবন! এবং সুন্দরবনের নারী পাচার! আর এই সমস্যার সমাধানের সব থেকে বড় ওষুধ হল অনিমেষ দত্ত! ছবিতে জুন মালিয়াকেও কয়েক ঝলক দেখা যাবে! শাশ্বতর স্ত্রী সে! অসম্ভব সুন্দরী! কয়েকটা দৃশ্য কলকাতার! তারপরেই গল্পের রেশ টেনে নিয়ে যাওয়া হয় সুন্দরবনে! সেখানে এক বিরাট চক্র ফাঁস করবেন অনিমেষ!
advertisement
আরও পড়ুন:
প্রথম চারটে এপিসোড দেখার পর থেকে মোটামোটি আপনি বুঝতে পারবেন কী হতে চলেছে। পাঁচ নম্বর এপিসোডে এসে আপনি ঠিক যেটা ভাবছেন, ওটাই কিন্তু এই সিরিজের শেষ। ঋত্বিক চক্রবর্তী, গৌরব এবং কৌশানী বাপ মা হারা তিন বন্ধু! বেঁচে থাকার জন্য রোজ নতুন বাধার মুখে পড়তে হয়। আর এই তিন বন্ধুর বন্ধুত্বেই আছে গল্পের আসল রশদ! সে আপনি দেখতে দেখতে বুঝবেন! তবে গল্প খুব একটা বলে লাভ নেই!
ছবির ক্যামেরা, সেট সব ঝকঝকে। নজর কাড়বে সোহিনী সেনগুপ্তর অভিনয়। ‘অ স্যার’ বলে যতবার তিনি ডেকে উঠছেন ততবার ফুটে উঠছে অভিনয়ের দক্ষতা। পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এন্ট্রি দেখে আপনি দারুণ আশা পাবেন মনে! কিন্তু হতাশ হবেন যে, কেন তাঁকে মিস্টার বচ্চন নামে ডেকেও দেওয়া হল না চমকদার কিছু করতে। বেশ মজা লাগবে ‘হ্যালো স্যর’ বলা পুলিশ অফিসারের মজাদার চরিত্র। এই পুলিশের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সেচ মন্ত্রী তথা নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক । তাঁর আরও একটি বড় পরিচয় হল, তিনি একজন নাট্যকর্মী । অন্যদিকে সায়নীর অভিনয়ও মনে দাগ কাটবে। কোথাও গতি কম আছে এমন নয়! বরং গতি অনেকটা বেশি। রাজ চক্রবর্তীর সিনেমা যেমন হয়, এই সিরিজ তেমনই! তবে শাশ্বতর মুখে মজার ছলে গালিগালাজ কিন্তু হাসাবে! কঠিন সময়েও অনিমেষ দত্ত এক্কেবারে ঠান্ডা ঠান্ডা কুল! যেন সব কিছুই তাঁর জানা! আত্মবিশ্বাসে ভরা শাশ্বতর অভিনয় মুগ্ধ করবে !
আরও পড়ুন: মেয়েদের ঠোঁট কেটে পুঁতে দেওয়া হয় কাঠের চাকতি! কেন জানেন? ভিডিও দেখলে শিউরে উঠবেন
কৌশানীকে এই প্রথমবার একেবারে অন্যরকম দেখা গেল! যতটুকু চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন! তা মন জিতবে! ঋত্বিককে নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই! সব সময় অসাধারণ। চরিত্রের রহস্য এই সিরিজ দেখলেই বুঝতে পারবেন! তারপরেও সঠিক ব্যবহার কিন্তু হয়নি! কোথাও গিয়ে মনে হবে চরিত্রের জাস্টিস ঠিক করে হয়নি! এছাড়াও একটা বিষয় প্রথম থেকেই খটকা লাগবে তা হল সুন্দরবনের মতো জায়গায় মেয়েদের চোখের মণি নীল কেন? যা একেবারেই মানান-সই নয়! যদিও সে উত্তর সিরিজের শেষে পাবেন! সিরিজটিতে প্রেক্ষাপট সুন্দরবন থাকলেও, সেখানকার মাটিকে কিন্তু ছুঁয়ে দেখা হয়নি!
জনজাতি থেকে শুরু করে জীবনযাত্রা সবেতেই বিস্তর ফারাক বাস্তবের থেকে! লক্ষ্য কেবল মাত্র কীভাবে গল্পটাকে খেলানো যায়! সুন্দরবনের জায়গায় এই পাচার কাহিনি না করে, যে-কোনও জায়গাতেই করা যেত! তবে বাংলার প্রেক্ষাপটে সুন্দরবনের থেকে ভাল জায়গা আর কী হতে পারে! তাই বলে জলের তলে যা দেখানো হয়েছে, তা সুন্দরবেন সম্ভব নয়! এবং সুন্দরবনের চলতি ভাষাতেও রয়েছে বিরাট গলত! আর ঠিক এইসব কারণেই, নেটফ্লিক্সের যুগে কোথাও গিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে ‘আবার প্রলয়’! আরও অনেক ভাবনা ও বিন্যাসের দরকার ছিল! প্রচুর খেলার জায়গা ছিল! কিন্তু সেই সব জায়গা মিস করে গিয়ে, খেলাটা ঠিক জমেও জমলো না! সিরিজে সাউথের মারাকাটারি ছোঁয়া দেখতে খুব একটা খারাপ লাগবে, এমন নয়! আবার এই সিরিজ না দেখলে বিরাট মিস, এমনটাও কিন্তু নয়! বাকি সব রহস্য জানতে হলে ‘আবার প্রলয়’-এর দরজায় নক করা বাধ্যতামূলক!