‘‘একদিকে বাংলা বিরোধী জমিদাররা মানুষের টাকা আটকে রাখছে, অন্যদিকে দিদি আমাদের নারীশক্তিকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে তাদের ক্ষমতায়ন করছেন। পয়লা এপ্রিল থেকে আমাদের ফোন বেজেই চলেছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আওতায় বর্ধিত আর্থিক সাহায্য পেয়ে মহিলারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের আনন্দের কথা জানাচ্ছেন ৷” এমনটাই জানিয়েছেন শশী পাঁজা।
আরও পড়ুন– নজরে রাজবংশী ভোট ব্যাঙ্ক, আজ কোচবিহারে মোদি-মমতার হাই ভোল্টেজ সভা, সরগরম উত্তর
advertisement
কোচবিহারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্ধারিত সফরের একদিন আগে, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস একটি দাবি জানিয়েছিল, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার আওতায় বাংলার জন্য বরাদ্দ কত টাকা বাংলাকে দিয়েছে, তারই শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তোলা হয়েছিল। গত ১৪ মার্চ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই বিষয়ে খোলা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যেহেতু তিনি এখানে আসছেন, আমি আশা করব, ১৪ মার্চ আমি যে বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলেছিলাম, তিনি সেই দাবি পূরণ করবেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজের আওতায় বাংলাকে কত টাকা দিয়েছে, সেই হিসাব প্রকাশ্যে আনবেন তিনি।’’
বিজেপির উদাসীনতার জন্যই ঝড়ের কবলে পড়া জলপাইগুড়ির মানুষকে এত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে দাবি করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই মানুষগুলি যদি পাকা বাড়িতে থাকতেন, তাহলে জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের ঝড়ের কবলে পড়ে এত দুর্ভোগ পোহাতে হত না। কিন্তু, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার টাকা আটতে দিয়েছে। সেই কারণেই এত বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যদি বাংলার জন্য বরাদ্দ টাকা আগেই ছেড়ে দিত, তাহলে ময়নাগুড়ির বাসিন্দা, ২ বছরের একটি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হত না। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে বিজেপিই দায়ী!’’
আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং কলকাতায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনেও দলের নেতারা একই অভিযোগ তুলেছেন। কোচবিহারে দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘বহু মানুষ তাঁদের ঘর হারিয়েছেন। শিশুরা মারাত্মক জখম হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার যদি আগেই টাকা দিয়ে দিত, তাহলে এই পরিবারগুলির পাকা বাড়ি থাকত এবং এই শিশুগুলিকে এভাবে আঘাত পেতে হত না। স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য় সাধনের জন্যই বাংলা-বিরোধী বিজেপি বাংলার মানুষকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।’’
আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘মানুষের প্রয়োজনে বিজেপিকে পাশে পাওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপির সব নেতারাই দাবি করছেন, কেন্দ্রীয় সরকার নাকি আবাস যোজনার টাকা দিয়ে দিয়েছে। তাই যদি সত্যি হবে, তাহলে তাঁরা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছেন না কেন? কেন এই বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করছেন না? কারণ, বিজেপি এমন কোনও নথি পেশ করতে পারবে না।’’
রবিবার উত্তরবঙ্গে বিধ্বংসী ঝড় আছড়ে পড়তেই তৃণমূল কংগ্রেস ময়দানে নেমে পড়ে। একদিকে, জলপাইগুড়ি সংলগ্ন এলাকার দলীয় নেতানেত্রীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, অন্যদিকে ঝড়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় অকুস্থলে পৌঁছে যান। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ফারাক স্পষ্ট করে দলীয় নেতারা বলছেন, বিজেপি যখন বাংলার হকের টাকা আটকে রাখছে, ঠিক তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার আর্থিক সহযোগিতা করে মানুষকে মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলা করতে সাহায্য করছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আওতায় সারা রাজ্যে মহিলাদের মাসিক আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।