নিউজ 18 লোকমতের অ্যাঙ্কর বিলাস বাডের একটি প্রশ্নের জবাবে মোদি বলেন, “শিবসেনা এবং এনসিপির মধ্যে যে ঝড় উঠেছে তা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, অন্য নেতাদের চেয়ে শুধু পরিবারের সদস্যদের বেশি গুরুত্ব দিলে শুধু সমস্যাই তৈরি হয়, আর কিছু নয়। শরদ পওয়ারের সমস্যা একেবারে পারিবারিক বিবাদ। দলের লাগাম মেয়ের হাতে থাকবে না কি ভাইপোর হাতে? শিবসেনার কোন্দলও কংগ্রেসের মতো, যোগ্য নেতাকে পদোন্নতি দেওয়া উচিত না কি ছেলেকে?”
advertisement
মোদির কথায়, “এসব ওদের ঝগড়া বিবাদ। আমি বিশ্বাস করি, দেশ এই ধরনের পারিবারিক রাজনীতিকে ঘৃণা করে। যদি কেউ ‘সহানুভূতি’ শব্দ ব্যবহার করে মানুষের মধ্যে সহানুভূতি জাগানোর চেষ্টা করে, আমি বলব, সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হবে। মানুষ এই ধরনের রাজনীতিকে ঘৃণা করে। এই ধরনের আচরণ মেনে নিতে পারে না। এসব আপনাদের পারিবারিক বিবাদ, আপনারা ঘরেই এর সমাধান করুন। এর জন্য মহারাষ্ট্র ভুগবে কেন?”
বিজেপি মহারাষ্ট্রের জন্য আত্মত্যাগ করেছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কিছু লোক ভেবেছিল, আমরা বোধহয় মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাই। না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিতে পারতাম, কিন্তু নিইনি। আমরা মহারাষ্ট্রের মানুষকে বোঝাতে চেয়েছি, বিজেপি মহারাষ্ট্রের জন্য আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত। আমরা নিজেদের জন্য বাঁচি না। এই নির্বাচনে মানুষের সহানুভূতি বিজেপির দিকে ছিল। তাঁরা দেখছেন, এত বড় দলের একজন সফল মুখ্যমন্ত্রী, যিনি মহারাষ্ট্রের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আত্মত্যাগ করে উপমুখ্যমন্ত্রী হলেন।”
মহারাষ্ট্রের বাংলা বা বিহারের পথে হাঁটা উচিত নয় বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বাংলা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কলকাতা একসময় অর্থনীতিতে গোটা দেশকে নেতৃত্ব দিত। কিন্তু রাজনীতি তাকে নষ্ট করে দিয়েছে। একটা সময় বিহার এবং উত্তরপ্রদেশেরও অস্থির অবস্থা ছিল। মহারাষ্ট্রকে সেই পথে যেতে দেওয়া উচিত নয়। মুম্বই দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী। দেশের স্বার্থেই মহারাষ্ট্রকে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমরা এটাই মহারাষ্ট্রের মানুষকে বলছি, বোঝানোর চেষ্টা করছি। তাঁরাও ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন।”
মহারাষ্ট্রে বিজেপি কত আসন পাবে? প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা বিপুল শক্তি নিয়ে এগোচ্ছি। ভোট বাড়বে। আসনও বাড়বে।”
মহারাষ্ট্রের জোট সরকার নিয়ে মোদি বলেন, “এটা সত্য যে দীর্ঘদিন যাবৎ রাজ্যের মানুষ জোট সরকার দেখছে। একসময় বিলাসরাও দেশমুখ ছিলেন… শরদ পওয়ার যখন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন তিনিও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। দ্বিতীয়ত মহারাষ্ট্রের দুর্ভাগ্য যে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ছাড়া কোনও মুখ্যমন্ত্রীই পাঁচ বছর টানা সরকার চালাতে পারেননি। ফড়নবিশই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি পুরো মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বচ্ছ ভাবে সরকার চালিয়েছেন। গায়ে কোনও দাগ লাগতে দেননি। এমন একটা সরকার যা জনগণের কল্যাণে কাজ করেছে।”
বিজেপি-শিণ্ডে সেনা-অজিত পাওয়ার এনসিপি জোটে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে মোদি বলেন, “আমি মনে করি আপনি যে সমস্যার কথা বলছেন, তা বিরোধীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তারা আসন ভাগাভাগি করতে পারছে না। সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। সেখানে সমান্তরাল নির্বাচন হচ্ছে। বিজেপিতে এমন কোনও সমস্যা নেই। আমরা হাত মিলিয়েছি। ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে বেরিয়েছি। আমরা যথেষ্ট প্রস্তুতি আগেভাগেই নিয়ে রেখেছি। শিবসেনা, বিজেপি এবং এনসিপি একসঙ্গে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর মতো ভুয়ো সম্প্রীতি এখানে নেই।”