বৃহস্পতিবার সকালে এমন দৃশ্য় দেখা গেল রাজস্থানের সূর্যমুখী হনুমান মন্দিরের সামনে। কারণ সেখানেই এখন ভারত জোড়ো যাত্রার পদযাত্রা করছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি।
আরও পড়ুন: সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল শতাধিক মানুষের, গুজরাতের সেই মোরবিতেও এগিয়ে বিজেপি
রাজস্থানের ছবিটা যখন এরকম, তখন গুজরাতের আহমেদাবাদে কংগ্রেসের সদর দফতরের ছবিটা ঠিক উল্টো। যে বহুতলের নাম রাজীব গান্ধি ভবন। গুজরাতের আজ ফল ঘোষণা। অথচ সকালবেলা কংগ্রেস অফিসের ছবি দেখলে মনে হবে তালা খোলারও লোক নেই। খা খা করছে চারপাশ। কর্মী, সমর্থকরাও ভোটের ফল আগাম বুঝে নিয়েই আর ও পথে পা বাড়াননি। ঠিক একদিন আগে যেমন পুরভোটের ফল ঘোষণার দিন কাক পক্ষীও দেখা যায়নি দিল্লির কংগ্রেস দফতরে।
advertisement
গুজরাতে এটাই বোধহয় কংগ্রেসের ভবিতব্য় ছিল। অনেকটা পরীক্ষায় ফেল করবে জেনে পড়তে না বসার মতো বিষয়। কংগ্রেস নেতারা তাই বাস্তববাদী। দিল্লির শীর্ষ নেতারা যেমন গুজরাত নির্বাচনে ঠিক মতো প্রচারে যাওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি, তখন ফলাফল ঘোষণার দিন সাধারণ নেতা, কর্মীরাও কোন আশায় আর দলীয় কার্যালয়ে যাবেন!
আরও পড়ুন: হিমাচলে জোর টক্কর, জয়ী বিধায়কদের রাজস্থানে নিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস
গুজরাত বিজেপি-র শক্ত ঘাঁটি, সেকথা নতুন করে বলতে হবে না। কিন্তু তা বলে গুজরাত নির্বাচনের প্রচারে রাহুল গান্ধি সহ দলের শীর্ষ নেতাদের গুজরাত মুখো না হওয়া অনেককেই অবাক করেছে। কংগ্রেস যেন সেখানেই হার স্বীকার করে নিয়েছিল। এর পরে যা হওয়ার ছিল, সবটাই ভবিতব্য। বলা ভাল, নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই যেন লিখেছেন কংগ্রেস নেতারা। রাহুল গান্ধির কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল ভারত জোড়ো যাত্রা। মোদি, শাহ, কেজরীওয়ালরা যেখানে গুজরাতে গিয়ে আদা জল খেয়ে পড়ে থেকেছেন, সেখানে গুজরাতে সময় দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি রাহুল-প্রিয়াঙ্কারা।
অথচ প্রায় তিন দশক ক্ষমতায় ফিরতে না পারলেও গুজরাত একেবারে খালি হাতে ফেরায়নি কংগ্রেসকে। বরং ২০১৭ সালের নির্বাচনেও একটা সময় বিজেপি-র সঙ্গে রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল কংগ্রেসের। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতিটি বিধানসভা নির্বাচনেই কংগ্রেসের ভোট প্রাপ্তির হার এবং আসন সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই গুজরাত নিয়েই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের এই নিষ্পৃহতা রাজনৈতিক মহলকে অবাক করেছে। হাতে ছিল মোরবি সেতু বিপর্যয়, বিলকিস বানো ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার মতো ইস্যু। কিন্তু কোনও কিছুই কংগ্রেস নেতাদের জাগিয়ে তুলতে পারেনি। আসলে কংগ্রেসের কৌশল এখন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরাই হয়তো বুঝতে পারেন না।