সদ্য প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। জেলা জুড়ে ভাল ফল হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। তবে সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছেতেই এবং নিজের মনের জোরকে সঙ্গী করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করে ৪১৪ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়েছে প্রত্যন্ত গ্রামের সাদামাটা এই মেয়ে। ছিপছিপে চেহারা, বাড়িতে মা বাবা দাদা মিলে চারজনের সংসার। অর্থের অভাবে দাদা বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেনি। তবে তারও আগামী ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্ধিহান বাড়ির সকলে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ব্লকের গোপালবাড় এলাকার এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী স্মৃতি দাস। দাঁতন ভাগবতচরণ হাই স্কুল থেকে এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪১৪।
advertisement
ছোট্ট একচালা বাড়ি। আজ থেকে প্রায় কয়েক বছর আগে বাবা অসুস্থ হয়ে যায়, ছোট্ট দোকান এবং সামান্য চাষে চলে সংসার। দুই ছেলে মেয়ের পড়াশোনা চালানোর সহজসাধ্য ছিল না। স্মৃতির দাদা বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করলেও বেশি দূরে এগোতে পারেনি। তবে এবারে বিজ্ঞান বিভাগে ৪১৪ পেয়ে আগামীতে নার্স হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে স্মৃতির। সংসার চালাতে এবং বাড়ি থেকে বেশ অনেকটা দূরের কারণে নিয়মিত আসতে পারত না বিদ্যালয়। সামান্য কয়েকটা টিউশনি এবং নিজের ইচ্ছেতে পড়াশুনা করে এতদূর এগিয়েছে সে। বাড়িতে মায়ের সঙ্গে প্রতিদিন কাজ করতে হত। থাকতে হয় দোকানে।
তবুও বাঁধাধরা নিয়ম মেনে পড়াশোনা করেনি কখনও, নিজের ইচ্ছেতেই পড়াশোনা করে আজ সফল স্মৃতি। ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই পরিবারে। আর্থিক অসচ্ছলতা বাধা আগামী ভবিষ্যতে। আদৌ কি স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে গ্রামের এই মেয়ে নাকি দাদার মত মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাবে পড়াশোনা সে আশঙ্কাই এখন পরিবারের।
রঞ্জন চন্দ