সদ্য প্রকাশিত মাধ্যমিকে দুর্দান্ত রেজাল্ট করে চমকে দিয়েছে এলাকার মানুষকে। প্রত্যন্ত কুঁড়েঘরে থেকেও এই মেয়ে স্বপ্ন দেখে বড় হওয়ার। মেয়েকে মানুষের মত মানুষ করে তুলতে চান তাঁর বাবা-মা। আগামীতে বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার পর চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছে তাঁর। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে প্রত্যন্ত গ্রামের দর্জি পরিবারের এই মেয়ে।
advertisement
সকাল থেকে সন্ধ্যা নিজের পড়াশোনার পর বাবা-মায়ের কাজে সাহায্য করে। কখনও অবসর সময়ে ফেলে দেওয়ায় জিনিসপত্র দিয়ে ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও, তা উপেক্ষা করে মাধ্যমিকে ৬২৯ পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার দুজিপুরের মেয়ে সঞ্জনা। নাম সঞ্জনা শাসমল, চোখে দৃষ্টিশক্তি কম। ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তার প্রতিদিনের দিনযাপন। তবে তার লক্ষ্য বড় হয়ে ডাক্তার হবে। সঞ্জনার বাবা প্রণব শাসমল এবং মা কল্যাণী দু’জনেই দুজিপুর বাজারে ছোট্ট একটা দর্জির দোকান চালান। কাপড় সেলাই করে যে টাকা রোজগার হয় তাতেই মেয়ের পড়াশোনার খরচ ওঠে। ছোট্ট কুঁড়েঘর অর্ধেক ইটগাঁথা আর অর্ধেক ছিটেবেড়া দেওয়া। মাথার উপর চাপানো অ্যাসবেসটস। এভাবেই দিন গুজরান হয় পরিবারে।
বাড়ির পাশে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত সঞ্জনা। মেয়ের পড়াশোনায় সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন বাবা-মা। আগামীতে বিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তিও হয়েছে বিদ্যালয়ে। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় অভাব গৃহ শিক্ষকের। শহরের দূরত্ব অনেকটাই, যাতায়াত বেশ কষ্টসাধ্য। মাটির একচালা বাড়িতে থেকে এই গরমে সমস্যা হয়। অন্যদিকে চোখেও দৃষ্টিশক্তি বেশ কম। কম আলো বা লো ভোল্টেজে পড়তে অসুবিধা হয়। কিন্তু সব প্রতিবন্ধকতা পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে গ্রামের মেয়ে সঞ্জনা।
রঞ্জন চন্দ