‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা মঞ্চের নেত্রী সঙ্গীতা সাহা বলেন, “আমরা এই রায়ের পর হতাশ। আমাদের এখন আবেদন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা ছাড়া উপায় নেই। না হলে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।” চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, ”আদালতে আবেদন খারিজ হওয়ার ফলে ২০১৬ সালের ‘যোগ্য ‘স্পেশ্যাল বি.এড করা এবং অ্যাকাডেমিক কোয়ালিফিকেশনে (এনসিটিই) নিয়ম মেনে ৪৫ শতাংশে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা বঞ্চিত হল।”
advertisement
তাঁদেরই জন্য আমাদের লড়াই চলবে আমরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করব। ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের অন্যতম নেতা মেহবুব মণ্ডল বলেন, “যোগ্য’-রা আবেদন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছে তাঁর কারণ ‘অযোগ্য’-রা বাদ পড়েছেন। তার মানে এই নয় আমরা পরীক্ষা দেব। আমরা খুব শীঘ্রই সুপ্রিম কোর্টে যাব।”
আরও পড়ুন: SSC মামলায় জয় পেল রাজ্য, নতুন বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করা সব মামলা খারিজ করে দিল হাইকোর্ট!
বেশ কয়েকটি ‘যোগ্য’ শিক্ষক সংগঠনের দাবি, ”১৪ তারিখে প্রথম দফার আবেদনের শেষের আগেই বহু চাকরিপ্রার্থী যাঁরা ‘যোগ্য’, তাঁরা আবেদন করেছেন। আমরা কখনই কাউকে আবেদন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে বাধা দিইনি। কারণ এর মধ্যে তাঁদের জীবন-জীবিকা যুক্ত রয়েছে।” সুমন বিশ্বাস বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের গত ৩ এপ্রিল যে রায় দিয়েছিল সেই অনুযায়ী এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। এই বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ মানে পরীক্ষা নয়। আমরা আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরছি না রিভিউ পিটিশন আমাদের একমাত্র লক্ষ।”
নোটিফিকেশনের পর থেকেই কখনও ওবিসি সংরক্ষণ আবার বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মামলায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। এই রায়ের পর স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “এই রায় আমাদের অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে। আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া মসৃণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব।” ওয়েস্ট বেঙ্গল আন্টেনটেট টিচার অ্যাসোসিয়েশন এর যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের রয়েছে প্রায় হাজার মতো। তাঁদের দাবি তাঁরা আবেদনে অংশগ্রহণ করবে না। এই রায় তৈরি আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছে তারা শীর্ষ আদালতে যাবে দ্রুত। এই সংগঠনের আহ্বায়ক মৃন্ময়ী মণ্ডল বলেন, “আমাদের কেউ এই আবেদন প্রক্রিয়া অংশগ্রহণ করব না। আমরা আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ নিচ্ছি দ্রুত সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে যাচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের নিয়োগপরীক্ষার নতুন বিধি প্রকাশ করেছিল এসএসসি। নতুন পরীক্ষাবিধিতে নানা বদলও আনা হয়েছিল। তা নিয়েই মামলা হয় হাইকোর্টে। মামলাকারীদের দাবি ছিল, ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি ২০১৬ সালের মতোই করতে হবে। উল্লেখ্য, নয়া বিধিতে বলা হয়েছিল, এ বার ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে, আগে যা ৫৫ নম্বরের ছিল। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরে ৩৫ নম্বরের পরিবর্তে রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে ১০ নম্বর, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপর সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করে রাখা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসাবে যাঁদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর, তাঁরাই নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন বলেও জানিয়েছিল এসএসসি।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়