TRENDING:

'একটুও হতাশ হইনি...' ৮২টা কেমো নিয়েও উচ্চ মাধ্যমিক সেমিস্টারের প্রথম দশে! অবসাদের পৃথিবীকে কী বার্তা অদ্রিজার?

Last Updated:

ক্যানসার জয় করে অদ্রিজা গণ উচ্চমাধ্যমিকে নবম, ৯৭.৩৭ শতাংশ নম্বর! পরিবার ও শিক্ষকদের পাশে পেয়ে আজ সে অনুপ্রেরণা। শুনে নিন সেই মেয়ের মন ভাল করা বার্তা।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
ষষ্ঠ শ্রেণির গণ্ডি পেরোনোর আগেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণরোগ—টি সেল লিম্ফোমা ক্যানসার। চার বছর ধরে চলেছে যুদ্ধ, একের পর এক ৮২টি কেমোথেরাপি, তবু হাল ছাড়েনি অদ্রিজা গণ। আজ সে কেবল ক্যানসার জয়ী নয়, উচ্চমাধ্যমিক প্রথম পর্বের পরীক্ষায় নবম স্থানাধিকারীও। পেয়েছে ৯৭.৩৭ শতাংশ নম্বর।
ক্যানসার জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে নবম, অদ্রিজা গণের অনুপ্রেরণামূলক লড়াই!
ক্যানসার জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে নবম, অদ্রিজা গণের অনুপ্রেরণামূলক লড়াই!
advertisement

অদ্রিজা নিজেও ভাবতে পারেনি ১ থেকে ১০ এর মধ্যে তার নাম থাকবে। নিজের ভাল লাগা থেকে পড়াশোনা করে এমন সাফল্য তাকেও খুশি করেছে। অদ্রিজার সঙ্গে যোগাযোগ করতে সে সানন্দে বলে, “আমার পাশে স্কুলের শিক্ষিকারা ছিলেন, বন্ধুরা ছিল। আমার একটুও অসুবিধে হয়নি। এক মুহূর্তের জন্যও হতাশ হইনি।” এখন শারীরিক কোনও অস্বস্তি নেই বলেই জানায় অদ্রিজা। বড় হওয়ার উন্মাদনায় সামনের দিকেই তাকিয়ে সে।

advertisement

চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের জন্য নতুন নির্দেশিকা! কী বলছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর?

উল্টোপাল্টা খেয়ে হজমশক্তির ‘বারোটা’ বেজে গিয়েছে? ৭ প্রাকৃতিক উপায়ে দ্রুত ঠিক করুন!

রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুলের ছাত্রী অদ্রিজা। অবসাদে ডুবে যাওয়া পারিপার্শ্বিকের মধ্যে দাঁড়িয়ে এই কিশোরী যেন মূর্তিমান অনুপ্রেরণা। ক্যানসারের সঙ্গে লড়েও, ভারী আশাদায়ী প্রত্যয়ী তার কন্ঠস্বর। এত মনের জোর কী ভাবে পায় সে? অদ্রিজা বলে, “জীবনে ঝড়ঝাপটা আসবেই। কিন্তু সেটাই থেমে যাওয়া নয়। এগিয়ে যেতে হবে। খারাপ সময় কাটলে ভাল নিশ্চয়ই হবে। এই বিশ্বাসটুকু রাখা জরুরি।”

advertisement

শুক্রবার সেমেস্টার পদ্ধতিতে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম পর্বের ফল প্রকাশিত হয়েছে। নিজের নাম নবম স্থানে শুনেই হাসি ছড়িয়ে পড়েছিল অদ্রিজার মুখে, কিন্তু পরের কথাতেই ধরা দিল তার পরিণত ভাবনা।

“খুব খুশি, কিন্তু এখনই আনন্দ করার সময় নয়। সামনে পরীক্ষা আছে, ওখানেও ভাল ফল করতে হবে,”

বলে শান্তভাবে জানাল উত্তর ২৪ পরগনার নিমতার বাসিন্দা অদ্রিজা।

advertisement

অদ্রিজার বাবা জয়মঙ্গল গণ টাকি হাউস গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড মাল্টিপারপাস বয়েজ স্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক। মেয়ের অসুস্থতার খবর শুনে শোকাহত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তখন হাল ধরেন মা জ্যোতি গণ, বেলঘরিয়া বয়েজ স্কুলের শিক্ষিকা। মুম্বই-কলকাতা দৌড়ঝাঁপ, হাসপাতালের অসংখ্য রাত, আর একাই মেয়েকে সুস্থ করে তুলেছিলেন জ্যোতি।

তিনি বলেন,

“পড়াশোনায় আমি কখনও চাপ দিইনি। ওর নিজের তাগিদ আছে। ও যেমন ভাবে চলতে চায়, আমি শুধু ওর পাশে থাকি।”

advertisement

মেয়ের এই জয় তাই মায়ের কাছেও জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। চিকিৎসার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্নেহ, বন্ধুর সাহচর্য আর মায়ের আগলেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে অদ্রিজা। ২০২১ সালে সম্পূর্ণভাবে ক্যানসারমুক্ত হয় সে। তবে এখনও প্রতিবছর একবার মুম্বই গিয়ে সমস্ত টেস্ট করাতে হয়। বাবা জয়মঙ্গল আবেগভরে বলেন,

“ও নবম হয়েছে, সেটাও গর্বের। কিন্তু তার থেকেও বড় গর্ব, যে ও জীবনের লড়াইটা জিতেছে।”

অদ্রিজা এখন পড়তে চায় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি। তার আগ্রহ— মানুষের মনের আচরণ, আবেগ, এবং সেই মনের ভেতরের অন্ধকারের আলো খোঁজা।

“অবসাদ বা মনখারাপের সমাধান হয় যদি কেউ মন দিয়ে শুনতে পারে। ছোট ছোট পদক্ষেপেও বড় পরিবর্তন আসে,” বলল অদ্রিজা।

বাংলা সাহিত্যেও অদ্রিজার গভীর আগ্রহ। ফাঁকে ফাঁকে রবীন্দ্রনাথ, বিভূতিভূষণ, লীলা মজুমদার তার প্রিয় পাঠ। অদ্রিজার দিদি সৃজা গণ বর্তমানে CSIR-UGC NET-এর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তিনি বলেন,

“ও নিজের মতো করে পড়েছে, আমি শুধু একটু গাইড করেছি। ওর মানসিক জোরটাই ওর আসল শক্তি।”

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
দিঘার কাছেই শত শত বছরের পুরোন রাজবাড়ি, হোমস্টেতে থাকুন রাজকীয় আদবকায়দায়, ভোজনও এলাহি
আরও দেখুন

কেমোথেরাপির ক্লান্তি, চুল পড়ে যাওয়া, অসহ্য ব্যথা — সব পেরিয়েও আজ নতুন করে জীবনকে চেনা এক কিশোরীর গল্প এটি। অদ্রিজা যেন জীবন্ত প্রমাণ — হাল না ছাড়লে তবেই জীবন ভরিয়ে দেয়।

বাংলা খবর/ খবর/শিক্ষা/
'একটুও হতাশ হইনি...' ৮২টা কেমো নিয়েও উচ্চ মাধ্যমিক সেমিস্টারের প্রথম দশে! অবসাদের পৃথিবীকে কী বার্তা অদ্রিজার?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল