দীপার প্রিয় বিষয় অঙ্ক। ভৌতবিজ্ঞানে পেয়েছে ৯৮, ইতিহাসে ৯১, ইংলিশে ৯০। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দীপার। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। ২০১৪ সালে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয় বাবার। ২০১৭ সালে করা হয় বাইপাস সার্জারি। এরপর থেকেই ভারী কোনও কাজ করতে পারেন না তিনি। আগে নিজেদের এক বিঘে জায়গায় চাষাবাদ করে সংসার চলত। তবে এখন স্বামী-স্ত্রী দু’জনে সেলাইয়ের কাজ করে কোনওক্রমে জীবিকা নির্বাহ করেন। বড় ছেলে আইআইটি থেকে পড়াশোনা করার পর চাকরির অনুসন্ধানে ব্যস্ত, তবে মেয়ের অদম্য ইচ্ছের কাছে হার মেনেছেন বাবা-মা। তাই তাঁরা ঠিক করেছেন, শত কষ্ট হলেও মেয়েকে বিজ্ঞান নিয়েই পড়াবেন।
advertisement
দীপার বাবা দিলীপ বিশ্বাস জানান, ” ২০১৪ সালে হার্ট অ্যাটাকের পর থেকে ভারী কাজ করতে পারি না। মেয়ে বলছে বিজ্ঞান নিয়ে পড়বে। এটাই আমাদের কাছে এখন ভাবার বিষয়। তবে শত কষ্ট হলেও মেয়েকে বিজ্ঞান নিয়েই পড়াব।” মা শিল্পী বিশ্বাসও মেয়ের সাফল্যে খুবই খুশি। তিনি জানান, ” আমরা দু’জনেই সেলাই মেশিনের কাজ করি। ওর বাবার শরীর খুব একটা ভাল না। এই কাজের উপর নির্ভর করেই সংসার চলে। মেয়ে বিজ্ঞান নিয়ে পড়বে বলছে, আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি ওকে পড়াব।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমৃত শিকদার জানান, দীপা খুব শান্ত স্বভাবের। খুবই কর্তব্যপরায়ণ, পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা রয়েছে। স্কুলের বিভিন্ন কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করত। প্রবন্ধ লেখারও শখ। ওর বাবা ভীষণই অসুস্থ, আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। তা সত্ত্বেও যে এত ভাল নম্বর পেয়েছে, যা শুধু এই বছরের বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নয়, বিগতদিনেও ব্লকে এত বেশি নম্বর কেউ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই । এটি আমাদের স্কুলের গর্বের। ভবিষ্যতেও আমরা ওর পাশে থেকে ওকে সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করব।
Mainak Debnath