বাবা রাজমিস্ত্রি হাসিবুল সেখ। মা গৃহবধূ। তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে খুব কষ্ট করেই পড়াশোনা। পরিবারের দুরাবস্থা কাটিয়ে সফলতার শিখরে পৌঁছে যাওয়ায় আনন্দের জোয়ারে ভাসছে এখন জঙ্গিপুর। পঞ্জাবের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করে রাহুল সেখের এই অসামান্য সাফল্যে গর্বিত মুর্শিদাবাদ। বর্তমানে পঞ্জাবে পিএইচডি করছেন রাহুল।
আরও পড়ুন: জঙ্গলরক্ষার দায়িত্বে বিক্রম! তথাগতর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফের অস্ত্র তুলে নেবেন নায়ক, ঝলকে শিউরে উঠবেন!
advertisement
পশ্চিমবঙ্গ জুডিসিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। সেখানেই রাহুল ১২ নং স্থান অধিকার করেছেন। নিতান্তই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করে রাহুলের এই অসামান্য সাফল্যে গর্বিত মুর্শিদাবাদ। তবে আগে বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে মোমবাতি আর হ্যারিকেনের আলোয় পড়াশোনা করেছিলেন রাহুল। যদিও কয়েক বছর আগে বাড়িতে বিদ্যুৎসংযোগ পরিষেবা চালু হয়।
জানা যায়, রঘুনাথগঞ্জের এই রাজমিস্ত্রির ছেলে রাহুল সেখ বিচারকের আসনে বসবেন খুব শীঘ্রই। রাজ্যে সরকারের অধীনে জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা, ২০২২-এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকায় দ্বাদশতম স্থান অধিকার করেছেন রাহুল সেখ। তিনি প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজে যোগদান করবেন।
যাত্রাপথ খুব একটা সহজ ছিল না রাহুলের। আইন নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার সম্পর্কে অবগত হন। তখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। ২০২০ সালে প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই প্রিলিমিনারি, মেনস এবং ইন্টারভিউ পর্ব পেরিয়ে ওয়েটিং লিস্টে ২ নম্বর স্থান দখল করে। একটুর জন্য হাতছাড়া হয় স্বপ্ন। পরের বছর ২০২১ সালে পরপর তিনটি ধাপ পেরিয়ে ফের সামান্যর জন্য ওয়েটিং লিস্টের ১ নম্বরে নাম আসে রাহুলের। সেবারও মন ভাঙেনি। শুরু হয় পরের যাত্রার প্রস্তুতি পর্ব। ২০২২ সালে যে রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে সেই তালিকায় ১২ নং স্থান দখল করে নাম এসেছে রাহুলের। আর এতেই খুশি গোটা গ্রাম। ২০২০ সালে আইন আইন নিয়ে স্নাতকোত্তর হন পঞ্জাবের সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি থেকে। বর্তমানে তিনি পঞ্জাবে পিএইচডি করছেন।
কৌশিক অধিকারী