আসলে কোভিডের জেরে সেভাবে নিয়োগ হয়নি সেনাবাহিনীতে। আর লোকবলের এই ঘাটতি এখন প্রতি মাসেই লাফিয়ে বাড়ছে। এমনটাই শুক্রবার জানানো হয়েছে।
বর্তমানে অফিসার পদমর্যাদার (PBOR) ক্যাডারের অধস্তন ১২০,০০০ সংখ্যক সেনা পদ খালি রয়েছে। আর এই ঘাটতি প্রতি মাসে ৫,০০০ করে বাড়ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সৈন্য সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ।
আরও পড়ুন- স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় প্রচুর শূন্যপদ, আজই আবেদন করুন
advertisement
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের কারণে আমাদের লোকবলের উপর চাপ বেড়েছে ঠিকই। তবে এ ক্ষেত্রে প্রথম সারির ইউনিটগুলোর দক্ষতা কিন্তু কমে যায়নি। এই অবস্থায় লোকবল কীভাবে বাড়ানো যায়, তার পরিকল্পনার উপরেই জোর দিতে হবে।"
কোভিড পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে, ধীরে ধীরে সব কিছু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী মহামারির দুই বছর পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় চালু হয়েছে আন্তর্জাতিক উড়ানও, খুলেছে স্কুল-কলেজও। কিন্তু অভিযোগ, কিন্তু সেনাবাহিনীতে নিয়োগের উপর সরকার সে ভাবে জোর দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিভাগের এক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেছেন “বর্তমানে ভারতীয় সেনাবাহিনী যে ইউনিট পর্যায়ে জনবল সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। নিয়োগ স্থগিত থাকা সত্ত্বেও, সামনের সারির ইউনিটগুলির কাজকর্মের ভার কিন্তু অপরিবর্তিত রয়েছে। যার অর্থ হল, কম সংখ্যক সেনা নিয়েই একই পরিমাণ কাজ করতে হচ্ছে জওয়ানদের।”
মহামারির পূর্বে সেনাবাহিনীতে প্রতি বছর গড়ে ১০০টি নিয়োগ সমাবেশ পরিচালনা করা হত। প্রতি ক্ষেত্রেই ছয় থেকে আটটি জেলা এই নিয়োগ সমাবেশের আওতায় থাকত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh) এই বিষয়ে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে জানান, সেনাবাহিনীতে ২০১৯-২০ সালে ৮০,৫৭২ জন প্রার্থী এবং ২০১৮-১৯ সালে ৫৩,৪৩১ জন প্রার্থী নিয়োগ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- মিনিস্ট্রি অফ ডিফেন্সের অধীনে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি, ২ মে আবেদনের শেষ দিন
লোকবল ঘাটতির বিষয়ে এক সেনা মুখপাত্র অবশ্য জানিয়েছিলেন যে, কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় নিয়োগ শুরু হবে। প্রাক্তন সেনা কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডিএস হুডা (DS Hooda) আরও বলেছেন যে, “সেনাবাহিনীতে এই ধরনের ঘাটতির ফলে, যে কোনও ইউনিট অপারেশনাল ভূমিকায় থাকুক বা না-থাকুক, ঘাটতির প্রভাব কিন্তু সমগ্র বাহিনীর উপরই পড়ে। এতে ইউনিটের কার্যকারিতাও প্রভাবিত হয়। এ ক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করা ও সেই ঘাটতিকে কাটিয়ে ওঠা।"
সেনাবাহিনীতে জেনারেল ডিউটি সেনা হিসাবে নির্বাচিত হতে প্রার্থীদের বয়সসীমা ১৭ থেকে ২১ বছরের মধ্যে হতে হয়। কিন্তু নিয়োগে স্থগিতাদেশের কারণে সারা দেশ জুড়ে যুবকদের একটি প্রজন্মের আশা ক্রমশ ধূলিসাৎ হতে শুরু করেছে। বর্তমানে সারা দেশে লক্ষাধিক প্রার্থী দাবি করেছেন যে, শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হোক এবং তাদের বয়সসীমায় কমপক্ষে দু’বছরের শিথিলতা প্রদান করা হোক।