এক রাতেই সরকারি চাকরিজীবী থেকে হয়েছেন চাকরিহারা। এবার সংসার কী করে চলবে? কী করেই বা চলবে অসুস্থ বাবা মায়ের চিকিৎসা? কার্যত এক লহমায় ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার পুরো প্যানেল বাতিল হওয়ায় সর্বস্ব খুইয়ে হাহাকার করছেন মেধাবী শিক্ষিকারা। এরইমধ্যে এই তালিকায় রয়েছেন রায়গঞ্জের বেশ কয়েকজন শিক্ষকও, যাদের মধ্যে রয়েছেন দেবীনগর কৈলাসচন্দ্র রাধারানি বিদ্যাপীঠের কৃষ্ণমৃত্তিকা নাথ, প্রিয়াঙ্কা গুহ এবং আরও এক শিক্ষাকর্মী।
advertisement
কৃষ্ণমৃত্তিকা অত্যন্ত মেধাবী এবং গোল্ড মেডেলিস্ট এক ছাত্রী। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব এবং সংসারের দায়িত্ব পুরোটাই তাঁর কাঁধে। কিন্তু, জীবন যেন থমকে গিয়েছে। কী হবে এবার? নেই কোনও উত্তর। কোর্টের রায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন কৃষ্ণমৃত্তিকা নাথ, যিনি মিউজিক টিচার হিসেবে ২০১৮ সালে প্রথম কাউন্সেলিংয়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
কৃষ্ণমৃত্তিকা বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ছিলাম, রাজ্যপালের কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছি। তবু যদি আমায় যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। বাবা-মা পুরোপুরি আমার উপর নির্ভরশীল, এখন কী হবে জানি না। “
একইরকম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষিকা প্রিয়াঙ্কা গুহ। তিনি বলেন, “আমরা নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি, তা সত্ত্বেও আমাদের এভাবে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হল। এই দায় আমাদের নয়। যোগ্যদের জন্য আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”এই রায়ে কার্যত অথৈ জলে পড়েছেন রায়গঞ্জের বহু শিক্ষক।
সূত্রের খবর, শুধু রায়গঞ্জেই প্রায় ১,১০০ শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি হারিয়েছেন। শহরের নামকরা একাধিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এই তালিকাভুক্ত। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল। পরবর্তীতে কি হবে তা সত্যিই এখনও অস্পষ্টই বটে!
সুরজিৎ দে





