মৃণালের কথায়, “আমি টপারদের ইন্টারভিউ পড়ে রীতিমতো ভয় পেয়েছিলাম কেন না তাঁরা দিনে কমপক্ষে ১২ ঘন্টা পড়াশোনা করার দাবি করতেন। কিন্তু মহামারীর সময়ে বাড়িতে থাকাকালীন আমার কাছে বাইরের জগতের সঙ্গে যোগসূত্র বলতে কেবল একটি ফোন, টিভি এবং ল্যাপটপ ছিল। শুরুতে মনে হত এই সব কিছু পড়াশোনার সময়ে আমার মনোযোগ বিভ্রান্ত করতে পারে। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল। আমি ঠিক করলাম দিনে ৪ ঘন্টা পড়াশোনাই আমার জন্য যথেষ্ট।”
advertisement
শুধু প্রস্তুতির সময়ই নয়, NEET পরীক্ষার জন্য কী ভাবে পড়বেন সেই নিয়েও মৃণালের চিন্তাভাবনা একটু ভিন্ন। সাধারণত NEET পরীক্ষার ছাত্র-ছাত্রীরা প্রথমে জীবনবিজ্ঞান বিভাগ দিয়ে প্রস্তুতি শুরু করার কথা ভাবেন। কিন্তু মৃণাল এই বিভাগে এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে তিনি একেবারে শেষ পর্যায়ে এই বিভাগের প্রস্তুতি নেন।
এ হেন আত্মবিশ্বাসী মৃণাল তাঁর সমবয়সীদের উদ্দেশ্যে আশ্বাস দিয়ে বলেন, “প্রস্তুতির নির্দিষ্ট কোনও সঠিক মাপকাঠি নেই। আমিও প্রথম প্রথম টপারদের ইন্টারভিউ পড়ার সময় তাঁদের সময়সূচী অনুসরণ করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারিনি। বুঝতে পেরেছিলাম আমার ক্ষেত্রে প্রচলিত কোনও নিয়ম খাটবে না। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আমি ভাগ্যবান যে বাবা-মা এবং আমার শিক্ষকরা কখনই আমাকে জোর দিয়ে কিছু করতে বাধ্য করেননি।"
মৃণাল ২০২০ সালে একাদশ শ্রেণীতে পড়ার পর থেকে NEET-র জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনই কোভিড মহামারী বাইরের জগৎ থেকে আমাদের সকলকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কিন্তু সেই সময় ডাক্তারদের কর্মদক্ষতা ও সহিষ্ণুতা মৃণালকে ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করে। ফলস্বরূপ ১৮ বছর বয়সী মৃণাল তাঁর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান নিউ দিল্লির AIIMS থেকে পরিবারের প্রথম ডাক্তার হতে চলেছেন।
আরও পড়ুন- স্কুলে ফিরল পড়ুয়ারা, শুঁড় তুলে স্বাগত জানালো হাতি, দেখুন ভিডিও
পূর্বে AIIMS-এর প্রবেশিকা পরীক্ষার আলাদা নিয়ম থাকলেও এ বছর AIIMS-এ শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেওয়া হয়েছিল NEET-এর ফলাফলের ভিত্তিতে। সেখানে মৃণাল মেডিক্যাল এন্ট্রান্স টেস্ট NEET ২০২১-এ পূর্ণ নম্বর পেয়েছেন। তিনি এবারের তিনজন প্রথম স্থানাধিকারীর মধ্যে অন্যতম। আশা করা যায় মৃণালের আত্মবিশ্বাস আগামীর প্রার্থীদের নিশ্চয়ই উদ্বুদ্ধ করবে!