চলতি মাসের ৬ই ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী, জন অভিযোগ এবং পেনশন মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং (Jitendra Singh) একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রী জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে করোনা পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি দেশে করোনা আক্রান্ত ও সংক্রমণের হার অনেকটাই কমে গিয়েছে। এর কারণে ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস করলে কোনও রকম ঝুঁকি এই মুহূর্তে নেই। সাম্প্রতিক করোনা আবহের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে কেন্দ্র সরকারি কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজের আর কোনও প্রয়োজন নেই। এই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়া মাত্রই তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: ঘরে বসেই মহিলাদের অঢেল উপার্জনের নয়া দিগন্ত, দেখে নিন এক ঝলকে!
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ের মহামারী পর্যালোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত দু'বছর যাবত করোনাকালে অত্যাধিক মাত্রায় সংক্রমণ ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মহামারী রূপ নেওয়ায় সরকারি কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজের অনুমতি দেয় কেন্দ্র সরকার। এতদিন সরকারি অফিসগুলিতে হাজিরার সংখ্যা ছিল ৫০ শতাংশ। ফলে অর্ধেক কর্মচারী নিয়েই দীর্ঘ দু'বছর চলেছে দেশের সমস্ত সরকারি অফিসগুলি। কোনও কোনও রাজ্যে আবার এই সংখ্যা ছিল প্রায় ২৫ শতাংশ।
তবে শুধুমাত্র সরকারি অফিসই নয়, কর্মচারীদের হাজিরা নিয়ে এই নিয়মবিধি গত দু'বছর কঠোর ভাবে পালন করেছে বেসরকারি সংস্থাগুলিও। এমনকী করোনার ভয়াবহতার জন্য স্কুল-কলেজ সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে অতি সম্প্রতি করোনা প্রভাব বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ফের স্কুল -কলেজ ও সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাধিক রাজ্যের সরকার।
আরও পড়ুন: আইসিএসই, আইএসসি ফলাফল: নতুন এমসিকিউ ফর্ম্যাটে স্কোর কমেছে পড়ুয়াদের!
জানা গিয়েছে, এদিনের ওই নির্দেশিকায় সমস্ত কেন্দ্র সরকারি কর্মচারীদের ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২২' থেকে অফিসে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং ওই দিন থেকে সমস্ত কর্মচারীকে অফিসে গিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশিকায় কোনও কর্মচারী ছাড় পাবেন না বলেও জানা হয়েছে। তবে অফিসে সমস্ত প্রকার কোভিড বিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন মাস্ক অবশ্যই পড়তে হবে। এছাড়াও বাকি নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে। কর্মীরা কোভিড বিধি সঠিক ভাবে মেনে চলছেন কি না তা দেখবেন ওই অফিসের বিভাগীয় আধিকারিক বলে ওই নির্দেশিকায় ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি করোনা আবহ পর্যালোচনা করে কেন্দ্র সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং (DOPT) দ্বারা একটি নতুন অফিস মেমোরেন্ডাম' (OM) জারি করা হয়েছে। ওই জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্র সরকারের সকল কর্মচারীকে ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে অফিসে হাজিরার নিদেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এ তো গেল সরকারি অফিস। বেসরকারি অফিসের কী হবে?
করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকারি অফিসগুলির পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলিও গত দু'বছর যাবত তাদের কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজ অর্থাৎ ওয়ার্ক ফ্রম হোমের নির্দেশ দেয়। ফলে বেসরকারি অফিসের প্রায় ১০০ শতাংশ কর্মীই বাড়িতে বসে তাদের অফিসের কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে দেশের বৃহত্তম আইটি সংস্থা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (TCS) সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১০০ শতাংশ কর্মীর উপস্থিতি নিয়ে তাদের অফিস চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তাদের এই সিদ্ধান্ত মাঝ পথেই থমকে যায় সাম্প্রতিক করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রনের দাপটে। ফলে সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে বর্তমানে তাদের ৯০ শতাংশ কর্মী বাড়ি থেকে কাজ করছেন। টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস বর্তমানে ক্যালিব্রেটেড মুভ অর্থাৎ কর্মীদের পরিধি পরিমাপ করে কাজ চালাচ্ছে।
পাশাপাশি এইচসিএল-এর (HCL) তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। এছাড়াও কগনিজেন্ট (Cognizant) মতো বেসরকারি সংস্থা তাদের কর্মচারীদের নিরাপত্তা সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে বাড়িতে বসেই কর্মীদের কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে ইনফোসিসের (Infosys) এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২২ সালে তাঁরা কর্মীদের হাইব্রিড মোডে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।