ঠিক কী হয়েছিল? বুধবার তখন সকাল ১০ টা হবে। অন্যান্য দিনের মতো বাড়ির কাজ করছিলেন সমীরবাবু। হটাৎই একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। কথা বলে তিনি জানতে পারেন ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করেছেন ম্যানেজার। সমীরবাবু জানান, 'আমাকে জানালেন আপনার কেওয়াইসি (kyc)-র জন্য এবং এটিএম কার্ডের বিষয়ে ফোন করেছেন। কথা বলতে বলতে নানা ভাবে বুঝিয়ে বললেন তিনি এখনই অনলাইনে ব্যবস্থা করে দেবেন তাহলে ব্যাংকে লাইনে দাঁড়াতে হবে না।'
advertisement
আরও পড়ুন: শীত পড়তেই বাজারে 'কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ', ৫-১০ টাকায় মিলছে সবজি!
ফোনে বলা হয়, ব্যাঙ্কে গিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে ব্যাঙ্কে বললেই এটিএম কার্ড পেয়ে যাবেন। নানা ভাবে বুঝিয়ে প্রায় দু'ঘন্টা ফোনে কথা বলেন তিনি। আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এটিএম কার্ড নম্বর দিতে থাকেন। যদিও সেই মুহূর্তে সমীর বাবুর স্ত্রী গীতা দাস বাধা দিয়েছিলেন, কিন্তু স্ত্রীকে সমীরবাবু জানান তাঁর ফোনে মেসেজ আসছে যে মেসেজ ইউকো ব্যাঙ্কের মেসেজ। তাই তিনি ব্যাঙ্কের কর্মী বিশ্বাস করেই সব কিছু শেয়ার করছেন। ফোনের ওই প্রান্তে থাকা ব্যক্তি বুঝিয়ে সমীরবাবুর ইউকো ব্যাঙ্ক এবং স্টেট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নানা তথ্য হাতিয়ে নেয়।
আরও পড়ুন: বিড়ালের মতো দেখতে, কিন্তু বিড়াল না! বীরভূমে আজব প্রাণী ঘিরে হইচই
সব কিছু তথ্য শেয়ার করার পর ঠিক দশ মিনিট পরই তাঁর কাছে একের পর এক মেসেজ আসতে থাকে। সমীর বাবু দেখেন মেসেজগুলি টাকা তুলে নেওয়ার মেসেজ, তখন সমীরবাবু বুঝতে পারেন তিনি কী ভুল করে ফেলেছেন, ততক্ষণে আর কিছু করার নেই। সমীর বাবু দেখেন তাঁর ইউকো ব্যাঙ্কের বই থেকে দুই দফায় মোট ঊনত্রিশ হাজার এবং স্টেট ব্যাঙ্ক বাউড়িয়া শাখার পাশ বই থেকে কাটা গেছে পঁচিশ হাজার টাকা। তাঁর দুইটি ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে মোট খোয়া গেছে প্রায় ঊনপঞ্চাশ হাজার টাকা। এর পরেই তিনি বুঝতে পারেন যে প্রতারিতর শিকার হয়েছেন তিনি। তিনি দৌড়ে যান দুটি ব্যাঙ্কের শাখায়। কথা বলেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
পরে তিনি ওই দিন বিকালে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানায় ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে সমীর বাবু জানান, বৃহস্পতিবার তিনি হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখাতেও একটি অভিযোগ জানাবেন। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছে বুঝতে পেরে দৌড়ে যান ব্যাঙ্কে এবং বন্ধ করেন তার দুইটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।
রাকেশ মাইতি