TRENDING:

টিনটিন থেকে ম্যাজিক রিয়েলিজম চেনা তাঁর হাত ধরেই, প্রয়াত মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

Last Updated:

কর্নেলের দুঃখ যতদিন ঘা দেবে মনের দরজায়, প্রণম্য অক্ষরমালা যতদিন থাকবে, ততদিন থাকবেন মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম স্তম্ভ মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৮২ বছর। কোভিড সংক্রমণের কারণে দিন কয়েক আগেই তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ দিন সন্ধেয় চিকিৎসকরা তাঁর মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করেন।
advertisement

কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৮ সালে সিলেটে। মানববাবুর গতায়ত ছিল বহুমুখী। ছাত্র হিসেবে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয় ও পোল্যান্ডের ভাসভি বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছেন।‌

পড়েছেন তুলনামূলক সাহিত্য, ভারতীয় নন্দনতত্ত্ব, ললিতকলার ইতিহাস। তাঁর প্রথম অধ্যাপনার শুরু মায়ানমারের ইয়াঙ্গনে। পরে পড়াতে আসেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, তুলনামূলক বিভাগে।

advertisement

মানববাবুর পরিব্যপ্ত কর্মজগতকে এক আধারে ধরা মুশকিল। একাধারে কিংবদন্তী অধ্যাপক, তৈরি করেছেন শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রথিতযশা শিক্ষককে। অন্য দিকে বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান বহুমাত্রিক, রামধনুর মতো সাতরঙা।

বাঙালির চোখের সামনে বিশ্বসাহিত্যের দরজাটা হাট করে খুলে দিয়েছিলেন মানবেন্দ্র। ম্যাজিক রিয়েলিজিমের সঙ্গেও পরিচয় তাঁর হাত ধরে। মার্কেজ নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ১৯৮২ সালে। তার অনেক আগেই ১৯৭০ সালেই তাঁর লেখা অনুবাদের কাজে হাত দেন মানবেন্দ্রবাবু। অনুবাদ করেন 'কর্নেলকে কেউ চিঠি লেখে না', 'সরলা এরেন্দিরা'। এমনকি মার্কেজের বিখ্যাত নোবেল ভাষণটিও অনুবাদ করেছেন তিনি। কার্লোস ফুয়েন্তেস বাঙালি পড়েছে তাঁরই সুবাদে। লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের মনিমানিক্যর সঙ্গে বাঙালি জাতির পরিচিতির সাঁকোই তিনি।

advertisement

একই সঙ্গে প্রণিধানযোগ্য খেলা নিয়ে তাঁর বিপুল আগ্রহ, ননী ভৌমিকদের উত্তরাধিকারকে বহন করে ছোট বড় সকলকে রুশ সাহিত্যে সমুদ্রে সপ্তডিঙায় চড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস। বাঙালি আশৈশব টিনটিনে মজেছিল তাঁরই দৌলতে।

মানবেন্দ্রবাবু নিজে অবশ্য অনুবাদ শব্দটি পছন্দ করতেন না।একটি সাক্ষাৎকারে মজার ছলে তিনি বলেছিলেন, "আমি বলি, অনুবাদ মানে হল অনু পরিমাণ বাদ। সে কারণেই এই তর্জমা শব্দটার উল্লেখ। অর্থাৎ, জমা পড়ে যেটা। সেটা ইয়ার্কি করেই বলি!"

advertisement

‌শিশুসাহিত্যে তাঁর বিশেষ অবদানের জন্য মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় খগেন্দ্রনাথ মিত্র স্মৃতিপুরস্কার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যাসাগর পুরস্কার পেযেছেন, আর অনুবাদে তাঁর কৃতিত্বের জন্য ভারতীয় সাহিত্য একাদেমি তাঁকে অনুবাদ পুরস্কারে ভূষিত করেছিল।

আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে আদানপ্রদানের অভাব নিয়ে আজীবন চিন্তিত ছিলেন মানবেন্দ্র। ঘনিষ্ঠ মহলে বলতেন, কোন কোন ভাষায় বই অনুবাদ হয়েছে? মির্জা গালিবের বাংলা অনুবাদে কোনও বই আছে কি?

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
দেশের পাওয়ার লিফটিং খেলায় বাংলার গুরুত্বপূর্ণ অবদান! সাফল্যের পথ দেখাচ্ছে অভাবী পরিবার
আরও দেখুন

বড় অসময়ে চলে গেলেন মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশ্য সব যাওয়া সমান নয়। বাঙালি শৈশবে টিনটিন পড়বে, তাঁর তারুণ্যের আগুনকে উস্কে দেবেন মার্কেজ। কর্নেলের দুঃখ যতদিন ঘা দেবে মনের দরজায়, প্রণম্য অক্ষরমালা যতদিন থাকবে, ততদিন থাকবেন মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
টিনটিন থেকে ম্যাজিক রিয়েলিজম চেনা তাঁর হাত ধরেই, প্রয়াত মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল