সোনিয়া দাসের বয়স ২৬। করোনার দিনে আর পাঁচজনের মতোই চাকরিটা গিয়েছে তাঁর। শেষ হতে থাকে সঞ্চয়। কথায় বলে মরার উপর খাঁড়ার ঘা। এক সোমবার সোনিয়ার স্বামী ফোন করে জানান ছেলে জ্বরে আক্রান্ত, মাকে দেখতে চাইছে সে।
সময় নষ্ট না করে সোমবারই পুনের ভাটিয়া বস্তি থেকে যাত্রা শুরু করেন সোনিয়া। পিছনে বসিয়ে নেন সাবিয়া বানো নামের এক বন্ধুকে, যাতে তিনি ক্লান্ত হলেও যাতায়াত না থামে। পুনে থেকে মুম্বই হয়ে জামশেদপুর পৌঁছতে শুক্রবার বিকেল গড়িয়ে যায়।
advertisement
তখনও এক প্রস্থ পরীক্ষা দেওয়া বাকি। ইস্পাতনগরীতে পৌঁছেই তাঁদের করোনা পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় অবশেষে ছেলেকে দেখার অনুমতি পান সোনিয়া। বলা হয়, দেখা করেই হোম কোয়ারেন্টাইনে যেতে হবে।
ডেপুটি পুলিশ সুপার অরবিন্দ কুমার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ওই পরিবারকে ৩০ দিনে শুকনো রেশন দেওয়া হয়েছে।
সোনিয়ার কথায়, পুনে থেকে টাটা আসার কোনও ট্রেন তিনি পাননি। বারবার ট্যুইটারে সমস্যা জানালেও সাহায্য় করেনি ঝাড়খণ্ড সরকার। বিমানে আসার মতো টাকাও ছিল না তাঁর কাছে। তাই তিনি অগত্যা নিজের স্কুটারটিকেই বেছে নেন।
সোনিয়া এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমি হোম কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার আগে আমার সন্তানকে দূর থেকে দেখতে পেয়েছি। আমার স্বামী সন্তান ও পরিবারের অন্যান্যরা আমারই অপেক্ষায় ব্যলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল।"
সম্প্রতি কাজ হারিয়ে বাড়িভাড়াটুকুও দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না সোনিয়া। কিন্তু মাতৃত্বের শক্তিকে আটকায় এমন ক্ষমতা আছে কার! তাই এই লড়াইটা সনিয়া জিতেই গিয়েছেন।