ব্লুমবার্গ-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে করোনার টিকা সরবরাহের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে কোভ্যাক্স কর্মসূচি শুরু করা হয়েছিল, সেখানে অন্যতম শীর্ষ সরবরাহকারী হিসেবে নাম ছিল সিরাম ইন্সস্টিটিউটের৷ কিন্তু টিকা সরবরাহের জন্য দায়বদ্ধ থাকলেও একের পর এক সমস্যার মুখে পড়ে বরাত অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করতে পারছে না বিশ্বের সবথেকে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা৷ কারণ কারখানায় ভয়াবহ আগুন থেকে শুরু করে টিকার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার মতো একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে সিরামকে৷
advertisement
কোভ্যাক্স কর্মসূচির অধীনে মোট ২০ কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ করার কথা ছিল সিরাম ইন্সস্টিটিউটের৷ কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ৩ কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পেরেছে তারা৷ এই কর্মসূচিতে মোট ৯২টি দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহের কথা ছিল৷ কিন্তু সিরামের এই ব্যর্থতা থেকেই স্পষ্ট, কীভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে টিকাকরণের জন্য একটি সংস্থার উপরে বেশি নির্ভরশীল হওয়ার খেসারত দিতে হচ্ছে৷
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলিতে টিকাকরণের গতি কমে গেলে ভাইরাসের আরও নতুন নতুন রূপ সামনে আসবে৷ এবং অতিমারিও দির্ঘায়িত হবে৷ ভ্যাকসিনের ঘাটতি এই সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলেছে৷ অন্যন্য ভ্যাকসিন সরবরাহকারী সংস্থাগুলিও নিজেদের লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হয়েছে৷ কিন্তু সিরামের উপরে অনেক বেশি নির্ভরশীল ছিল কোভ্যাক্স কর্মসূচি৷ ফলে সিরাম প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা রপ্তানী করতে না পারায়, অন্যান্য উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলিতে তার মারাত্মক প্রভাব পড়েছে৷
কেন্দ্রীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করায় এপ্রিল মাস থেকেই টিকার রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে সিরাম৷ সংস্থার সিইও আদর পুনাওয়ালা গত বছর জানিয়েছিলেন, ২০২০ সাল শেষ হওয়ার আগেই নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলিতে প্রায় ৪০ কোটি টিকা সরবরাহ করতে পারবে তাঁর সংস্থা৷ কিন্তু চলতি বছরে তিনি জানিয়ে দেন সরকারি লাইসেন্স নিয়ে জটিলতা এবং টিকা মজুত করার পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে তাঁরা মাত্র ৭ কোটি টিকা উৎপাদন করতে পেরেছেন৷ যে দেশগুলি টিকার জন্য সিরামের উপরে নির্ভর করছিল, তারা এখন বাধ্য হয়েই অন্য উৎপাদনকারীদের থেকে টিকা নেওয়ার চেষ্টা করছে৷ কারণ বর্তমানে ভারতে যা পরিস্থিতি, তাতে ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় সরকার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলবে, এমন আশা ক্ষীণ৷